বরের বাড়িতে বাল্যবিবাহের আয়োজন, পুলিশ আসার খবর শুনে পালালেন সবাই
Published: 13th, May 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছেন বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী। এ ঘটনায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান কিশোরীর বাবা।
গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বীরভাটিয়ানি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
কিশোরীর বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল জামালপুরের মাদারগঞ্জে বরের বাড়িতে।
মাদারগঞ্জ থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার বীরভাটিয়ানি গ্রামের দীনেশ চন্দ্র দাসের ছেলে কমল চন্দ্র দাসের (৩৫) সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করা হয়। গত রোববার কিশোরীর নিজ বাড়িতে বিয়ের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন তখন বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেয়। এরপর গতকাল রাতে কিশোরীকে বরের বাড়িতে এনে পুনরায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে অতিথিদের খাওয়ানো হয়। বরও বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ঠিক সেই সময় স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিমের সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজন দৌড়ে পালিয়ে যান।
জাহাঙ্গীর সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোরীর বয়স ১৪ বছর। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রশাসন প্রথমবার বিয়ে বন্ধ করলেও পরে আবার বরের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিষয়টি জানার পর আমি মাদারগঞ্জ থানা-পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ গিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেয়।’
মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা গিয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দিই। কনের বাবাকে ডেকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না, এমন মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর র ব ড় ত ম দ রগঞ জ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রেহানা, টিউলিপ, আজমিনা ও রাদওয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
দুর্নীতির দমন কমিশনের (দুদক) করা এই তিন মামলায় আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।
এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন। বাকি তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম।
আরও পড়ুনপ্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু১১ আগস্ট ২০২৫মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
আরও পড়ুনটিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে১১ ঘণ্টা আগেদুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা-রেহানা-টিউলিপসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ০১ জুলাই ২০২৫দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য দুটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: দুদক চেয়ারম্যানআমাকে হয়রানির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: টিউলিপটিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদালতের বিষয়, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ নয়: মুহাম্মদ ইউনূস