জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছেন বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী। এ ঘটনায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান কিশোরীর বাবা।

গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বীরভাটিয়ানি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

কিশোরীর বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল জামালপুরের মাদারগঞ্জে বরের বাড়িতে।

মাদারগঞ্জ থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার বীরভাটিয়ানি গ্রামের দীনেশ চন্দ্র দাসের ছেলে কমল চন্দ্র দাসের (৩৫) সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করা হয়। গত রোববার কিশোরীর নিজ বাড়িতে বিয়ের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন তখন বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেয়। এরপর গতকাল রাতে কিশোরীকে বরের বাড়িতে এনে পুনরায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে অতিথিদের খাওয়ানো হয়। বরও বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ঠিক সেই সময় স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিমের সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজন দৌড়ে পালিয়ে যান।

জাহাঙ্গীর সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোরীর বয়স ১৪ বছর। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রশাসন প্রথমবার বিয়ে বন্ধ করলেও পরে আবার বরের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিষয়টি জানার পর আমি মাদারগঞ্জ থানা-পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ গিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেয়।’

মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা গিয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দিই। কনের বাবাকে ডেকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না, এমন মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর র ব ড় ত ম দ রগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ