জুনের মধ্যে আইএমএফের ১৩০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়
Published: 14th, May 2025 GMT
আগামী জুনের মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার দুপুরে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আইএমএফের পাশাপাশি জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২০০ কোটি ডলার বাজেট পাবে বলে প্রত্যাশা অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আইএমএফের চতুর্থ পর্যালোচনা সফলভাবে শেষ হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও বিনিময়হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ মিশন সম্পন্ন হওয়ার পর নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে, এমন সিদ্ধান্ত হয় তৃতীয় পর্যালোচনায়। সে ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ পর্যালোচনার সময় বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীকালে একই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সভায় আলোচনা চলমান থাকে।
অর্থ মন্ত্রণালয় আরও বলছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সব বিষয় সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করে উভয় পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময়হারসহ অন্যান্য সংস্কার কাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। চতুর্থ পর্যালোচনার ‘স্টাফ লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট’ সম্পন্ন হওয়ায় আশা করা হচ্ছে আইএমএফ চলতি বছরের জুনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য নির্ধারিত ১৩০ কোটি ডলার একত্রে ছাড় করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ অর্থ প্রাপ্তির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। যা মুদ্রার বিনিময়হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট–সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত ও জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এসব সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধু কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইএমএফ র
এছাড়াও পড়ুন:
৭৫ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ পাচ্ছে সিটি ব্যাংক
সিটি ব্যাংক লিমিটেডকে দীর্ঘ মেয়াদে মোট ৭৫ মিলিয়ন বা সাড়ে সাত কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ দেবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)। এ নিয়ে বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক দুটির সঙ্গে সিটি ব্যাংকের একটি চুক্তি হয়েছে। চুক্তির অনুযায়ী এআইআইবি থেকে ৫০ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ডলার এবং এনডিবি থেকে ২৫ মিলিয়ন বা আড়াই কোটি ডলার পাবে সিটি ব্যাংক।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এআইআইবি ও এনডিবি থেকে অর্থায়ন পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে সিটি ব্যাংক। এই অর্থ থেকে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পে দীর্ঘ মেয়াদে তহবিল সরবরাহ করা হবে। তাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে গতি আসবে। এই ঋণ দেশের অবকাঠামো খাতে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ, জ্বালানি দক্ষতা, ই-মোবিলিটি ও ডিজিটাল অবকাঠামো খাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন, এআইআইবির মহাপরিচালক বা ডিজি (ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড ফান্ডস ক্লায়েন্টস, গ্লোবাল) গ্রেগরি লিউ, এনডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিওও রোমান সেরভ এবং মহাপরিচালক বিন হান চুক্তিতে সই করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ও হোলসেল ব্যাংকিং প্রধান মেসবাউল আসীফ সিদ্দিকী।
সিটি ব্যাংক জানায়, বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সার্বভৌম গ্যারান্টি ছাড়াই এআইআইবির এটিই প্রথম অন-লেন্ডিং সুবিধা। সিটি ব্যাংকের জন্য এই ঋণ দেশে বেসরকারি খাতের মূলধন বিনিয়োগকে আরও গতিশীল করে তুলবে, দীর্ঘমেয়াদি অবকাঠামো ঋণ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এআইআইবি ও এনডিবির সঙ্গে এই দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন–অংশীদারত্ব তাদের সিটি ব্যাংকের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ। একই সঙ্গে এটি আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে সক্ষম করে তুলবে, যা দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই অর্থায়ন সহযোগিতা এআইআইবি ও এনডিবির অব্যাহত প্রচেষ্টাকে আরও সামনে এগিয়ে নেবে। সিটি ব্যাংকের মতো শীর্ষস্থানীয় টেকসই ব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে তারা সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে টেকসই ও স্থিতিশীল অবকাঠামো ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার কাজ করছে।
দেশের ১২ জন তরুণ ব্যবসায়ী ১৯৮৩ সালে সিটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকের দেশব্যাপী ১৩৪টি শাখা, ৫২টি উপশাখা, ৪৩৪টি এজেন্ট পয়েন্ট, ৪৯৮টি এটিএম–আরএটিএম, ৭ হাজার ৬৮৯ জনবল ও ২৬ লাখ গ্রাহক রয়েছেন।