ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্যকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেই বর্ণনা দিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহরিয়ার গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে বটগাছসংলগ্ন পুরোনো ফোয়ারার কাছে আসার পর অজ্ঞাতনামা ১০–১২ জন তাঁদের মোটরসাইকেল দিয়ে শাহরিয়ারের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন।

পুলিশ বলেছে, এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে ‘দুষ্কৃতকারীদের’ বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। তর্ক–বিতর্কের একপর্যায়ে ‘দুষ্কৃতকারীরা’ শাহরিয়ার ও তার বন্ধুদের ইট দিয়ে আঘাত করে আহত করেন। একজন শাহরিয়ারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের ঊরুর পেছন দিকে আঘাত করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে জখম অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান। এ সময় ‘দুষ্কৃতকারীরা’ শাহরিয়ার ও তাঁর বন্ধুদের বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখানোর পাশাপাশি হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে শাহরিয়ারকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনসোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত১৮ ঘণ্টা আগে

ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় শাহরিয়ারের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। আজ বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদার (৩০)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে সংগঠনটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে আইএমএফ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কার ঘিরে কর্মকর্তাদের আন্দোলন এবং সার্বিক রাজস্ব সংস্কার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ। এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের পর রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। ডেপুটি মিশন প্রধান আইভো ক্রিজনার এবং বাংলাদেশে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্ত ছিলেন।

রাজস্ব নীতি এবং ব্যবস্থাপনা আলাদা করতে আইএমএফের পরামর্শ রয়েছে। সরকার এ দুটি কার্য্রক্রম আলাদা করতে যে অধ্যাদেশ জারি করেছিল, তার বিরোধিতা করে এবং এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে সারাদেশে কর কর্মকর্তাদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে। এতে রাজস্ব আদায় কার্য্রক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আইএমএফের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে আইএমএফ মিশন প্রধান বলেন, ‘আমরা যেসব সংস্কারের তাগিদ দিচ্ছি, তা নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আমাদেরকে হালনাগাদ পরিস্থিতি জানাচ্ছেন। জনগণকে এটি স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন যে, সরকার যেসব প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা দরকার।’

বাংলাদেশে নির্বাচন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখনকার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থনীতিতে অনেক চ্যালেঞ্জিং উপাদান রয়েছে। বাংলাদেশ এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে এবং ভূ-রাজনৈতিক, স্থানীয় ইস্যুতে নানা অনিশ্চয়তা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নই। তবে আমরা মনে করি, নির্বাচনের সময় নির্ধারণে বিনিয়োগের স্পর্শকাতরতার সম্পর্ক রয়েছে, যা বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি রিপোর্টে আইএমএফ উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। এখন আমরা প্রত্যাশা করি অনিশ্চয়তা কেটে যাবে। নির্বাচনের সময় স্থির হওয়ায় আমরা মনে করি, বিদেশি বিনিয়োগ আসা শুরু হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কম। আমরা মনে করি, নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ