লা লিগার শিরোপা নির্ধারিত হয়ে যেতে পারত মায়োর্কার মাঠে। রিয়াল মাদ্রিদ হোঁচট খেলেই বার্সেলোনা এক মৌসুমের বিরতি দিয়ে আবারও বনে যেত লিগ চ্যাম্পিয়ন।  তবে মায়োর্কার বিপক্ষে সেটার খুব কাছে গিয়েও শেষমেশ হয়নি রিয়ালের। শেষ মুহূর্তের এক গোল সব হিসেব ওলটপালট করে দিল। সান্তিয়াগো বার্নাবুতে ৯৫তম মিনিটে ইয়াকোবো রামোনের গোলে মায়োর্কাকে ২–১ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপার জন্য বার্সার অপেক্ষা আরও বাড়িয়ে দিল রিয়াল।

ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল মায়োর্কা। ১১তম মিনিটে ডান দিক থেকে পাওয়া বল নিখুঁত শটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন মার্টিন ভালিয়েন্ত। এটি ছিল কোর্তোয়ার লা লিগা ক্যারিয়ারের ২০০তম ম্যাচ। তবে ধাক্কা খেয়েও লড়াই থামায়নি রিয়াল। তারকাহীন একাদশে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগোদের অনুপস্থিতিতে আক্রমণের দায়িত্ব কাঁধে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহ্যাম। গোলের জন্য মরিয়া রিয়াল একের পর এক সুযোগ তৈরি করে, যদিও মায়োর্কার গোলরক্ষক লেও রোমান দুর্দান্ত সব সেভে রক্ষা করেন দলকে।

অবশেষে ৬৮তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যান এমবাপ্পে। তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে বল জালে জড়ান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। এটি ছিল চলতি মৌসুমে তার ৪০তম গোল। তবে ম্যাচের নাটক তখনো বাকি। একবার মাতেউ মোরের শট ঠেকান কোর্তোয়া, আরদা গুলের শট ফিরিয়ে দেন রোমান। গোললাইন থেকে এমবাপ্পের শট ফিরিয়ে দেন ভালিয়েন্ত। যখন ড্রই সবচেয়ে সম্ভাব্য ফল মনে হচ্ছিল, তখনই দৃশ্যপটে আবির্ভাব ইয়াকোবো রামোনের।

৯৫তম মিনিটে গোলরক্ষক রোমানের মাথার ওপর দিয়ে দুর্দান্ত এক শটে বল জালে জড়ান ২০ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার। সেই গোলেই ২-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে ৩৬ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট এখন ৭৮। এক ম্যাচ কম খেলে বার্সার সংগ্রহ ৮২ পয়েন্ট। তিন নম্বরে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭০।

তবে অপেক্ষার প্রহর হয়তো খুব বেশি লম্বা হবে না। বৃহস্পতিবার এসপানিওলের বিপক্ষে জয় পেলেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে বার্সেলোনার।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে

আলাস্কায় রাশিয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বৈঠক সমস্যার শেষ নয়; বরং এক দীর্ঘ যাত্রার সূচনামাত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিরতার সমাধান দিতে পারবে না এই বৈঠক। তবুও এটি সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন ঘটনা খুব কম ঘটেছে, যখন শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতাদের বৈঠক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়েছে।

এর একটি কারণ হলো, এত বেশি মাত্রায় মনোযোগ আকর্ষণ করা পরিস্থিতিও খুব বিরল। আমরা বর্তমানে ঠিক তেমনই একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার ‘কৌশলগত পরাজয়।’ আর রাশিয়া বিশ্বরাজনীতিতে পশ্চিমাদের একচেটিয়া আধিপত্যের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।

অন্য কারণ হলো বাস্তবিক। বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতারা এমন কোনো সমস্যার পেছনে সময় নষ্ট করেন না, যেগুলো তাঁদের অধীনেরাই সমাধান করতে পারেন। আর ইতিহাস ঘাঁটলেও দেখা যায়, শীর্ষ পর্যায়ের এসব বৈঠকের কারণে কদাচিৎ বিশ্বরাজনীতির গতি-প্রকৃতি বদলেছে।

আর তাই আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে অতীতের অনেক বিখ্যাত বৈঠকের সঙ্গে তুলনা করা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

ইতিহাসে অনেক শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, যেগুলো যুদ্ধ ঠেকানোর বদলে পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে।

বিশেষ করে ১৮০৭ সালে নেমন নদীতে একটি ভেলার ওপর অনুষ্ঠিত রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটের মধ্যের বৈঠকের সঙ্গে আলাস্কার বৈঠকের তুলনা করা হচ্ছে। নেমন নদীর ওপর বৈঠকও যুদ্ধ ঠেকাতে পারেনি। বৈঠকের মাত্র পাঁচ বছর পর নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করে বসেন। আর সেই ভুলই তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এরপর ১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসে রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো বড় ক্ষমতাধর দেশের নেতা নিয়মিত আলোচনায় অংশ নেননি। জার প্রথম আলেকজান্ডার তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ইউরোপের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। অন্য শক্তিগুলো তা মানেনি। যেমন হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, তাঁরা আদর্শ নয়; বরং স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে চাইতেন।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ