বার্সার অপেক্ষা বাড়িয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলো রিয়াল
Published: 15th, May 2025 GMT
স্প্যানিশ লা লিগায় শিরোপা জয়ের দৌড়ে বার্সেলোনার পেছনে পড়ে গেলেও হাল ছাড়ছে না রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার (১৪ মে) দিবাগত রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে এক নাটকীয় লড়াইয়ে মায়োর্কাকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপার ক্ষীণ আশাটা এখনও ধরে রেখেছে তারা। অন্যদিকে শিরোপা জয়ের অপেক্ষাটাও আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েছে বার্সার।
চোটে জর্জরিত স্কোয়াড নিয়ে একাদশ গঠনে হিমশিম খাচ্ছিল রিয়াল। তবুও শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে মরিয়া ছিল এমবাপ্পে ও উঠতি তারকা এন্ড্রিকের আক্রমণভাগ। কিন্তু প্রথম ধাক্কাটাই আসে রিয়ালের বিপক্ষে—১১ মিনিটেই মায়োর্কার মার্টিন ভালেন্ট ডি-বক্স থেকে নেয়া শটে গোল করে এগিয়ে দেন দলকে।
গোল হজমের পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে রিয়াল। একের পর এক আক্রমণ গড়ালেও বিরতির আগ পর্যন্ত দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়ে গোল রুখে দেন মায়োর্কার গোলকিপার রোমান।
আরো পড়ুন:
কোচ হিসেবে রিয়ালে ফিরলেন জাবি আলোনসো
৭ গোলের এল ক্লাসিকো জিতে শিরোপার দুয়ারে বার্সা
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে রিয়াল যেন রণকৌশল বদলায়। বারবার আক্রমণের পর ৬৮ মিনিটে অবশেষে আসে কাঙ্ক্ষিত সমতা। গোলদাতার নাম এমবাপ্পে—এই মৌসুমে লা লিগায় তার ২৮তম গোল, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪০-এ।
ম্যাচ তখন গড়াতে থাকে উত্তেজনার চূড়ায়। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটি পয়েন্ট ভাগাভাগির দিকেই যাচ্ছে, তখনই নাটকীয় মোড়। অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে তরুণ ডিফেন্ডার রামন গোল করে রিয়ালকে এনে দেন মহামূল্যবান জয়। সিনিয়র দলের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই ২০ বছর বয়সী প্রতিভাবান তরুণ যেন রাতারাতি রিয়াল সমর্থকদের হৃদয়ের নায়ক হয়ে উঠেছেন।
এই জয়ের ফলে ৩৬ ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের সংগ্রহ দাঁড়ালো ৭৮ পয়েন্ট। অপরদিকে বার্সেলোনা ৩৫ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। তবে বার্সা যদি আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসাসুনার বিপক্ষে জিতে যায় তাহলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তাদের হাতে উঠবে লা লিগার শিরোপা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।
মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।
দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’