ঝালকাঠির সেই গৃহবধূর গরু ফিরিয়ে দিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা, দল থেকে বহিষ্কার
Published: 15th, May 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গৃহবধূ নার্গিস বেগমের (২৫) গরু ফিরিয়ে দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বেল্লাল হোসেন খান। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজাপুর শুক্তাগড় ইউনিয়নের কেওতা ঘিগরা মাদ্রাসায় এক সালিসের মাধ্যমে গরুটি ফেরত দেওয়া হয়। তবে গরু ফিরিয়ে দেওয়ার আগে একটি কাগজে ২৬ হাজার ৬০০ টাকা পাওনা আছে বলে ওই নারীর কাছ থেকে সই নেওয়া হয়।
বুধবার সকালে উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামের একটি মাঠ থেকে গরুটি নিয়ে যান বেল্লাল। তিনি শুক্তাগড় ইউনিয়নের বামন খান গ্রামের বাসিন্দা, একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের আজাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আর ভুক্তভোগী নার্গিস বেগম শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামের আবু বক্করের স্ত্রী। আবু বক্কর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। নার্গিস বেগমের দাবি, স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় বেল্লাল ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তিনি গরুটি নিয়ে গিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবারের সালিসে বেল্লাল হোসেন খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা নাজমুল হুদা ওরফে চমনসহ স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বেল্লাল হোসেন খানকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
রাজাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রতন দেবনাথ ও সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বেল্লাল হোসেন খানকে তাঁর দলীয় সব ধরনের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। রতন দেবনাথ বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বেল্লাল হোসেন খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা দলের জন্য লজ্জার।
ভুক্তভোগী নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করায় সালিসি বৈঠকে উপস্থিত উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা নাজমুল হুদা ওরফে চমন আমাকে দুটি চর-থাপ্পড় মারেন। পরে জোর করে একটি সাদা কাগজে ২৬ হাজার ৬০০ টাকা পাওনা আছে বলে আমার কাছ থেকে সই নেওয়া হয়। পরে আমার গরুটি ফেরত দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বেল্লাল হোসেন খান বলেন, ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে আমি গ্রান্টার হয়ে নার্গিস বেগমের স্বামী আবু বক্করের জন্য ২০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে দিই। সেই টাকা সুদে আসলে ৩০ হাজার টাকা হয়। সেই ঋণের জন্য কর্তৃপক্ষ আমাকে চাপ সৃষ্টি করে। তাই বাধ্য হয়ে গরুটি নিয়েছি। আজ বিকেলে মুরব্বিদের উপস্থিতিতে একটি সাদা কাগজে ২৬ হাজার ৬০০ টাকা পাওনা আছে বলে স্বাক্ষর রেখে গরু ফেরত দিয়েছি।’
রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টির একটি সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
আরও পড়ুন‘চাঁদার’ টাকা না পেয়ে গৃহবধূর গরু নিয়ে গেলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ প র উপজ ল ন র গ স ব গম
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে পুরোনো জাহাজের নিরাপত্তা সরঞ্জামের তিন দোকানে আগুন, মহাসড়কে যানজট
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুরোনো জাহাজের নিরাপত্তা সরঞ্জামের (ফায়ার সেফটি আইটেম) তিনটি দোকান পুড়ে গেছে। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেয়ারম্যানঘাটা এলাকার মেঘনা ব্যাংকসংলগ্ন শিবলী মার্কেটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ কারণে রাত সাড়ে আটটা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মার্কেটটির মালিক উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি কুতুব উদ্দিন। দোকানগুলোর মালিক মো. জয়নাল আবেদীন ও খোকন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দোকানগুলোতে পুরোনো জাহাজের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, শিল্পীদের আঁকা ছবি ও ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রি হতো।
পাশের ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, আগুন লাগার পর মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, এর ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
দোকান পুড়ে যাওয়ার সময় কুতুব উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে ফায়ার সার্ভিসের দেরি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, দীর্ঘ যানজটের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে, তবে কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে জানা যাবে। কেউ হতাহত হননি।
আগুন নেভানোর সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে। আজ রাত সাড়ে ১০টায়