ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এম এ আজাদ আনোয়ার বলেছেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনাসহ যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। এরপরও ট্রাফিক পরিস্থিতি ও জনতার মতো অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তাদের।

তিনি ফায়ার সার্ভিসের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরতে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সদস্যদের নিয়ে অগ্নিনির্বাপণ, উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক দুদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ক্র্যাবের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জসীম উদ্দীনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ, ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের সিনিয়র স্টাফ অফিসার মো.

শাহজাহান শিকদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের সিদ্দিক বাজার স্টেশনের উদাহরণ তুলে ধরে কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে লে. কর্নেল এম এ আজাদ আনোয়ার বলেন, আমাদের এই স্টেশনটি অত্যন্ত সক্রিয়। প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিদুর্ঘটনার মতো ঘটনা ঘটে এবং ফায়ার সার্ভিসের সেখানে যেতে হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পাওয়া মাত্র কত দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তা নিয়ে যেকোনো গণমাধ্যম চাইলে ডকুমেন্টারি তৈরি করতে পারে। এটা প্রচার হওয়া দরকার। কারণ এতে জনগণ বুঝতে পারবেন যে, কোনো দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কত অল্প সময়ে সাড়া দেন।

আগুন বা দুর্ঘটনায় একটি ফায়ার স্টেশন থেকে কর্মীরা যখন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হন, তখন বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা বা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সড়কের ট্রাফিক একটি বড় সমস্যা। কখনো-কখনো অগ্নি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর জনতার মুখোমুখিও হতে হয়। এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য যেকোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিক চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বা ডকুমেন্টারি তৈরি করতে পারেন। আমরা সেই সুযোগটি করে দিতে চাই। তাতে জনগণ বুঝতে পারবে ফায়ার সার্ভিস আসলে কতটা সক্রিয় এবং কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।

দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অর্জিত জ্ঞান সাংবাদিকরা পেশাগত কাজে লাগাতে পারবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সাংবাদিকরা যেকোনো অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে পারব। এতে সাংবাদিকরা যেমন বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন, তেমনি আমাদের বিষয়গুলোও সাংবাদিকরা জানতে পারবেন।

সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

কর্মশালায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) ৪৫ জন সদস্য অংশ নেন। কর্মশালায় হাতে-কলমে অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলা, ভূমিকম্পে সাবধানতা ও করণীয়, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা ও পাহাড় ধসের মতো ঘটনায় মাঠপর্যায়ের রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের করণীয় সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ক্র্যাবের প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক জসীম উদ্দীন বলেন, মাঠপর্যায়ে যেসব অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক রিপোর্টিং করেন, তাদের জন্য সেফটি ও সিকিউরিটি সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে দুর্যোগ ও অগ্নিদুর্ঘটনায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সচেতনতামূলক জ্ঞান থাকা জরুরি। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের এই প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ লাবু, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের সিনিয়র স্টাফ অফিসার মো. শাহজাহান শিকদার প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব ন কর ম র ব দ কর ঘটন য ঘটন স

এছাড়াও পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।

সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’

নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই: রাশেদ খান
  • প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক
  • নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • ১৭ বছর এক অসুর জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল: নিপুন রায় 
  • নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি: আমীর খসরু
  • অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • চাঁদপুরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় এনসিপির নিন্দা
  • রাষ্ট্র মানে কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক চালানো নয়: ফরহাদ মজহার
  • ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট