খুলনায় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ আজ
Published: 17th, May 2025 GMT
তরুণদের রাজনৈতিক ভাবনা তুলে ধরতে 'তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ খুলনা ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে আজ শনিবার। ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দল এ কর্মসূচির আয়োজক। দল তিনটির খুলনা ও বরিশাল বিভাগের তরুণ নেতাকমীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
খুলনার শিববাড়ি মোড়ে জিয়া হল চত্বরে বিকেল ৩ টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেকসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
বিএনপির মহানগর মিডিয়া সেলের আহবায়ক মিজানুর রহমান মিলটন বলেন, “বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, বাকস্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার জন্য, হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য এবং একটি দৃশ্যমান ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। এই সমাবেশের মাধ্যমে তারুণ্যের রাজনীতির নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। দেশের জনসংখ্যার বড় অংশই তরুণ। জুলাই -আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন এই তরুণেরা। দেশের নানাবিধ কাজে এখনও পুরোপুরিভাবে তরুণদের যুক্ত করা যায়নি। বিএনপি তরুণদের মেধা, জ্ঞান এবং তাদের স্বপ্নকে ধারণ করতে চায়। পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তরুণদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চায়।”
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন, “তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির এক যুগান্তকারী কর্মসূচি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই আয়োজন একটি মাইলফলক। এই কর্মসূচি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভিনব নেতৃত্ব এবং নির্দেশনার উজ্জ্বল স্মারক।”
সমাবেশে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সমাবেশ স্থলে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেম আনা হয়েছে রাজধানী ঢাকা থেকে।
সমাবেশ স্থলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপশি দলের হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান তিনি।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব চ ছ স বক দ দল র ক ন দ র য় র র জন ত ক ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট নয় আছিয়ার মা
মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তিন আসামি খালাস পাওয়ায় রায়ে সন্তুষ্ট নন শিশুটির মা। আজ শনিবার (১৭ মে) সকালে রায় ঘোষণার পর আদালত চত্ত্বরে এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিদের পাশাপাশি মামলার বাদী শিশুটির মা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় আছিয়ার মা বলেন, ‘‘আমি খুশি না। এই মামলায় তিন আসামি খালাস পেল? ওরা তো এ কাজে সহযোগিতা করিছে। আমার বড় মেয়েরে হুমকি দেছে। তারে মারধোর করছে, মুখ আটকায় রাখছে। ওরাও দোষী, ওদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।”
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় ধর্ষণের কারণে মৃত্যুর অপরাধ, শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ অভিযোগ গঠন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘‘মূল আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে অন্য তিনজনকে কেন খালাস দেওয়া হয়েছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর আমরা জানতে পারব। সেটা পর্যালোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”
এদিকে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী (লিগ্যাল এইড অফিস থেকে নিয়োগ দেওয়া) সোহেল আহম্মেদ।
তিনি বলেন, ‘‘তিন আসামিকে যে খালাস দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হয়নি। মূল আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, তা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।”
এটি একপেশে বিচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মেয়ে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে কোনো উকিল আমাদের পক্ষে দাঁড়াতে চায়নি। লিগ্যাল এইড থেকে একজন উকিল দেওয়া হইছিল, সে আমাদের কথা আদালতে ভালোভাবে বলেনি। আমরা কয়েকজন সাক্ষী দিতে চাইছিলাম। আইনজীবী বলে, এ সাক্ষী দেওয়া যাবে না। আমার আব্বার ফাঁসি দিয়ে যদি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, হোক। কিন্তু যা হলো, তা একপেশে বিচার।”
তিনি জানান, ঘটনার পর তার বাবার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে তার দাদি অন্যের বাড়ির বারান্দায় রাত কাটান। এ ঘটনার বিচার কে করবে? এ প্রশ্নও করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিটু শেখের মেয়ে।
চলতি বছরের ১ মার্চ শিশুটি বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই দিন রাতেই শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
ওই দিন সামরিক হেলিকপ্টারে শিশুটির মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। দুই দফা জানাজা শেষে শ্রীপুরে গ্রামের বাড়ির একটি কবরস্থানে শিশুটির মরদেহ সমাহিত করা হয়।
এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে চার আসামির নামে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
এস/শাহীন/এস