বয়স একটা সংখ্যা মাত্র,মনের শক্তিতে এখনও অনেক কিছু করা সম্ভব: সাবিনা ইয়াসমীন
Published: 30th, May 2025 GMT
এবার তথ্যচিত্রে তুলে আনা হচ্ছে বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের শিল্পী ও ব্যক্তিজীবনের নানা অধ্যায়। শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সর্বাধিক ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার সম্মাননায় ভূষিত এ শিল্পীর তথ্যচিত্র নির্মাণ করছেন শাইখ সিরাজ।
এরই মধ্যে চ্যানেল আই ও সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় তথ্যচিত্রের বেশ কিছু অংশের দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। কয়েক দিনের বিরতির পর আজ পুনরায় শুরু হচ্ছে তথ্যচিত্রের বাকি অংশের কাজ। সাবিনা ইয়াসমিন কথায়, সংগীতের দীর্ঘ সফরে নানা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। গানের সূত্র ধরেই মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে শিল্পী আর ব্যক্তিজীবন। অসংখ্য চড়াই-উতরাই অতিক্রমের মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছে সেই সফরনামার অধ্যায়গুলো, যা তুলে আনা হচ্ছে তথ্যচিত্রে।
এদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে সম্প্রতি কানাডা সফর করে এসেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। কানাডার টরন্টোতে আয়োজিত একটি শো’তে পারফর্ম করেছেন তিনি। গানে গানে আর একবার মুগ্ধ করেছেন ভক্ত-অনুরাগীদের। এ নিয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘যারা বয়স আর অসুস্থার ভয় দেখিয়ে মঞ্চে ছুটে যাওয়া বাধা দেন, তারা হয়তো জানেন না, বয়স আসলে একটা সংখ্যা মাত্র। মনের শক্তিতে এখনও অনেক কিছু করা সম্ভব, যার প্রমাণ আরও একবার মিলেছে কানাডার টরন্টোতে গিয়ে। টরন্টোর শোতে দর্শকের উপচেপড়া ভিড়, প্রতিটি গানে তাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন আরও একবার নতুন করে উপলব্ধি হয়েছে, প্রবাসী বাঙালিরা আমাকে কতটা ভালোবাসে, আমার গানের জন্য এখনও তারা কতটা তৃষিত। এ কারণে যেখানে ১৫টি গান গেয়েই শো শেষ করার কথা ছিল, সেখানে বাড়তি আরও কয়েকটি গান গাইতে হয়েছে। দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসার শক্তিতেই একের পর এক গান গেয়ে গেছি। এই সফর স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
কানাডা সফর শেষে তথ্যচিত্রের শুটিং ছাড়াও সাবিনা ইয়াসমিন অংশ নিয়েছেন বিটিভির ঈদ ম্যাগাজিন ‘আনন্দ মেলা’য়। এ আয়োজনে তাঁর কণ্ঠে আরও একবার শোনা যাবে নতুন সংগীতায়োজনে রেকর্ড করা ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’ গানটি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেষের পথে সূচনা, হৃদয়ের ডাকে ঘরে ফিরলেন ডি মারিয়া
সময়টা ২০০৭ সাল। এক তরুণ রাইটব্যাক উইঙ্গার আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরের আলো-আঁধারিতে ফুটবল খেলে বেড়াতেন। তখনকার সেই ছেলেটিই আজ বিশ্বের অন্যতম নামী ফুটবল তারকা। আর ১৮ বছরের ইউরোপভিত্তিক ঝলমলে অধ্যায় শেষে তিনি ফিরেছেন ঠিক সেই পুরোনো ঠিকানায়—রোজারিও সেন্ট্রাল।
হ্যাঁ, কথা হচ্ছে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে নিয়ে। ৩৭ বছর বয়সে, ক্যারিয়ারের শেষভাগে এসেও তার ভেতরের ছেলেটি হারিয়ে যায়নি। বরং অনেক দূর থেকে ফিরে এসে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের গল্প এখনও শেষ হয়নি।’
ডি মারিয়ার এই ফিরে আসাটা শুধুই এক ক্লাব বদলের গল্প নয়। এটা তার শিকড়ে ফেরার, নিজের শৈশবকে আবার ছুঁয়ে দেখার প্রয়াস। রোজারিও সেন্ট্রালের যুব দলে পা রাখা সেই কিশোর আজ বিশ্বজয় করে ফিরেছেন একই মাঠে, যেখানে একদিন স্বপ্ন বুনেছিলেন।
আরো পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত দিনে ‘কুল-বিএসজেএ’ মিডিয়া কাপে ফুটবল আনন্দ
কনফারেন্স লিগ জিতে ইউরোপীয় ফুটবলে চেলসির অন্যরকম পূর্ণতা
তার ফিরে আসার ঘোষণায় রোজারিওর আকাশে যেন উৎসবের আলো। সমর্থকরা অপেক্ষায়—আবারও মাঠে দেখবেন তাদের 'হারানো রত্ন'কে।
২০০৭ সালে ডি মারিয়া ইউরোপে পা রাখেন পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাতে। সেখান থেকেই শুরু তার নতুন জীবন। এরপর রিয়াল মাদ্রিদে পাঁচ মৌসুম; যেখানে তিনি জিতেছেন লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো শিরোপা।
এরপর একের পর এক গন্তব্য— ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, জুভেন্টাস। সব জায়গায় রেখে গেছেন নিজের স্বাক্ষর।
সবশেষ মৌসুমেও তিনি খেলেছেন বেনফিকায়। এবং এখানেই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী মাসে ক্লাব বিশ্বকাপে বেনফিকার জার্সিতেই মাঠে নামবেন তিনি। এরপরই একেবারে নিজের দেশে ফিরে আসবেন চূড়ান্তভাবে।
ডি মারিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও বার্তাটি যেন তার ফিরে আসার সবচেয়ে সুন্দর ভাষ্য। তিনি বলেন, “আমাদের গল্প এখনও লেখার অনেক পৃষ্ঠা বাকি। এটা কোনো বিদায় নয়, এটা হলো নতুন করে শুরু।” এই কয়েকটি বাক্যেই যেন ফুটে উঠেছে তার আবেগ, ভালোবাসা আর রক্তে মিশে থাকা রোজারিও।
ডি মারিয়ার ফেরা কেবল একটি ক্লাব পরিবর্তনের ঘটনা নয়, বরং এটি ফুটবলপ্রেমী আর্জেন্টিনার এক আবেগঘন মুহূর্ত। বিশ্বজয়ী একজন সৈনিক নিজের শেকড়ে ফিরেছেন, হাতে করে নিয়ে এসেছেন বিশ্বমঞ্চের অভিজ্ঞতা, সাফল্য আর ভালোবাসা।
রোজারিও সেন্ট্রালের সমর্থকেরা জানেন, তাদের মাঠে যে আবার খেলতে নামবে, সে একজন কিংবদন্তি—তাদেরই ঘরের ছেলে।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্লাববদল যেন শুধুই একটি চুক্তি নয়, বরং নিজের অতীতকে আবার ছুঁয়ে দেখার এক স্মৃতির খোঁজ। যেখানে শেষ হতে যাচ্ছে এক জৌলুমপূর্ণ অধ্যায়, সেখানে শুরু হচ্ছে এক নতুন আবেগের অধ্যায়, ফুটবল যখন হৃদয়ের গল্প।
ঢাকা/আমিনুল