টাইমলাইন: ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার মুহূর্ত কেমন ছিল
Published: 12th, July 2025 GMT
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে গত মাসে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরই এটির জ্বালানি সরবরাহ সুইচগুলো প্রায় একযোগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ইঞ্জিনগুলোতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
গত ১২ জুন ওই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন। ঘটনার পরদিনই ভারতের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করে। আজ শনিবার সংস্থাটি একটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের বিবরণ অনুযায়ী, দুর্ঘটনার দিন উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের আগ মুহূর্ত থেকে শুরু করে বিধ্বস্ত হওয়া পর্যন্ত ঘটনাক্রম নিচে তুলে ধরা হলো—
গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) অনুযায়ী ৫টা ৪৭ মিনিট (ভারতের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ১৭ মিনিট): এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি নয়াদিল্লি থেকে আহমেদাবাদে অবতরণ করে।
৭টা ৪৮ মিনিট (জিএমটি): উড়োজাহাজটিকে বিমানবন্দরের বে-৩৪ থেকে রওনা হতে দেখা যায়।
৭টা ৫৫ মিনিট (জিএমটি): উড়োজাহাজটি বিমান নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে ট্যাক্সি ক্লিয়ারেন্সের অনুরোধ জানায়। এর এক মিনিট পর ২৩ নম্বর রানওয়ের দিকে এগিয়ে যায় এবং উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত হয়।
৮টা ২ মিনিট (জিএমটি): উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ ‘গ্রাউন্ড কন্ট্রোল’ থেকে ‘টাওয়ার কন্ট্রোলে’ হস্তান্তর করা হয়।
৮টা ৭ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড (জিএমটি): উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়।
৮টা ৭ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের জন্য রানওয়েতে চলতে শুরু করে।
৮টা ৮ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করে।
৮টা ৮ মিনিট ৪২ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজের গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮০ নটিক্যাল মাইলে পৌঁছায়। এর পরপরই এটির ইঞ্জিন দুটির জ্বালানি সরবরাহ সুইচগুলো এক সেকেন্ডের ব্যবধানে একে একে বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং ইঞ্জিন দুটির গতি কমতে শুরু করে।
ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে একজন পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, তিনি কেন জ্বালানি বন্ধ করেছেন। জবাবে অপর পাইলট বলেন, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।
বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের ঠিক পরপরই র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএটি) সক্রিয় করা হয়। আরএটি হলো একটি জরুরি ব্যবস্থা, যা বিমানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে ব্যবহার করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরের সীমানাপ্রাচীর অতিক্রম করার আগেই উড়োজাহাজটির উচ্চতা কমতে শুরু করে।
৮টা ৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজের দুটি ইঞ্জিনই সম্পূর্ণভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। র্যাম এয়ার টারবাইনের হাইড্রোলিক পাম্প হাইড্রোলিক শক্তি সরবরাহ করতে শুরু করে।
৮টা ৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজের প্রথম ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থা থেকে চালু অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।
৮টা ৮ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড (জিএমটি): উড়োজাহাজের দ্বিতীয় ইঞ্জিনও বন্ধ অবস্থা থেকে চালু অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।
প্রথম ইঞ্জিনটি সফলভাবে চালু হলেও দ্বিতীয় ইঞ্জিনটি চালু হয়নি।
৮টা ৯ মিনিট ৫ সেকেন্ড (জিএমটি): একজন পাইলট জরুরি সংকেত ‘মে ডে’ পাঠান।
৮টা ৯ মিনিট ১১ সেকেন্ড (জিএমটি): ডেটা রেকর্ডিং বন্ধ হয়ে যায়।
৮টা ১৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড (জিএমটি): উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন সরবর হ জ এমট অবস থ ঘটন র র নওয় তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা
তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে, একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ