নিষ্প্রাণ ড্র, নাকি উত্তেজনা—রোমাঞ্চ ছড়াবে গল টেস্টে? চতুর্থ দিনের খেলা যেভাবে শেষ হয়েছে, তাতে রোমাঞ্চের কিছুটা আভাস মিলছে। অনেক কিছুই নির্ভর করছে বাংলাদেশের ওপর। আগামীকাল শেষ দিনে বাংলাদেশ কতটা সাহস দেখাতে পারে, সেটির ওপর অনেক কিছু নির্ধারিত হবে।
চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে লিড ১৮৭ রান। ৩ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৬ ও মুশফিকুর রহিম ২২ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তাদের জুটিতে এসেছে ৪৯ রান। সাদমান ইসলাম ৭৬, মুমিনুল ১৪ ও এনামুল হক বিজয় ৪ রান করে ফিরেছেন সাজঘরে।
আগামীকাল পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ কতক্ষণ ব্যাটিং করে সেটাই দেখার বিষয়। শ্রীলঙ্কার বোলিং ভালো হলে উত্তেজনা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ যদি এক সেশন ব্যাট করে তিনশোর আশপাশে লক্ষ্য নেয়, তাহলে শ্রীলঙ্কাকে চাপের মধ্যে রাখা যাবে। দুই সেশনে বোলিং করে স্বাগতিকদের চাপে ফেলতে পারলে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে। সেই সাহসটা টিম ম্যানেজমেন্ট দেখাবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।
আরো পড়ুন:
তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে আমিনুলের ব্যাখ্যা
অ্যাওয়ে ‘অভিষেকে’ নাঈমের ফাইফার
বাংলাদেশের করা ৪৯৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৪৮৫ রান করে। আজ দিনের শুরুতে ২ উইকেট তুলে নিলেও পরে আর ভালো বোলিং হয়নি। তবে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ২০ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের অলআউট করে ১০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। দেশের বাইরে প্রথমবার বোলিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৫ উইকেট নেন নাঈম হাসান। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের বাইরে প্রথম ইনিংসে লিড পেল বাংলাদেশ।
লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি। এনামুল হক বিজয় আবারও ব্যর্থ। ২০ বলে ৪ রান করে জয়াসুরিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। মুমিনুল ক্রিজে এসে দারুণ এক ছক্কা হাঁকান থারিন্দুকে। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। অফস্পিনার থারিন্দুর বল সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ক্যাচ দেন।
সেখান থেকে শান্ত ও সাদমান প্রতিরোধ গড়ে দলকে এগিয়ে নেন। তাদের জুটি পঞ্চাশ পেরিয়ে যায়, দলীয় রানও শতক ছাড়ায়। সাদমান ফিফটি পূর্ণ করেন। তবে দিনের খেলা শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে ফিরতে হয় তাকে। মিলান রত্নায়েকের ভেতরে ঢোকানো দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ১২৬ বলে ৭ চারে ৭৬ রান করেন সাদমান। দুজন গড়েন ৬৮ রানের জুটি।
দিনের বাকি সময়টুকু মুশফিকুর ও শান্ত ভালোভাবেই পার করে দেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে যাওয়া শান্ত এবার তুলে নেন ফিফটি। মুশফিকও তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দম ন র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।