Risingbd:
2025-06-20@18:32:04 GMT

গলে শেষ রোমাঞ্চের অপেক্ষা

Published: 20th, June 2025 GMT

গলে শেষ রোমাঞ্চের অপেক্ষা

নিষ্প্রাণ ড্র, নাকি উত্তেজনা—রোমাঞ্চ ছড়াবে গল টেস্টে? চতুর্থ দিনের খেলা যেভাবে শেষ হয়েছে, তাতে রোমাঞ্চের কিছুটা আভাস মিলছে। অনেক কিছুই নির্ভর করছে বাংলাদেশের ওপর। আগামীকাল শেষ দিনে বাংলাদেশ কতটা সাহস দেখাতে পারে, সেটির ওপর অনেক কিছু নির্ধারিত হবে।

চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে লিড ১৮৭ রান। ৩ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৬ ও মুশফিকুর রহিম ২২ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তাদের জুটিতে এসেছে ৪৯ রান। সাদমান ইসলাম ৭৬, মুমিনুল ১৪ ও এনামুল হক বিজয় ৪ রান করে ফিরেছেন সাজঘরে।

আগামীকাল পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ কতক্ষণ ব্যাটিং করে সেটাই দেখার বিষয়। শ্রীলঙ্কার বোলিং ভালো হলে উত্তেজনা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ যদি এক সেশন ব্যাট করে তিনশোর আশপাশে লক্ষ্য নেয়, তাহলে শ্রীলঙ্কাকে চাপের মধ্যে রাখা যাবে। দুই সেশনে বোলিং করে স্বাগতিকদের চাপে ফেলতে পারলে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে। সেই সাহসটা টিম ম্যানেজমেন্ট দেখাবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।

আরো পড়ুন:

তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে আমিনুলের ব্যাখ্যা

অ্যাওয়ে ‘অভিষেকে’ নাঈমের ফাইফার

বাংলাদেশের করা ৪৯৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৪৮৫ রান করে। আজ দিনের শুরুতে ২ উইকেট তুলে নিলেও পরে আর ভালো বোলিং হয়নি। তবে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ২০ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের অলআউট করে ১০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। দেশের বাইরে প্রথমবার বোলিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৫ উইকেট নেন নাঈম হাসান। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের বাইরে প্রথম ইনিংসে লিড পেল বাংলাদেশ।

লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি। এনামুল হক বিজয় আবারও ব্যর্থ। ২০ বলে ৪ রান করে জয়াসুরিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। মুমিনুল ক্রিজে এসে দারুণ এক ছক্কা হাঁকান থারিন্দুকে। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। অফস্পিনার থারিন্দুর বল সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ক্যাচ দেন।

সেখান থেকে শান্ত ও সাদমান প্রতিরোধ গড়ে দলকে এগিয়ে নেন। তাদের জুটি পঞ্চাশ পেরিয়ে যায়, দলীয় রানও শতক ছাড়ায়। সাদমান ফিফটি পূর্ণ করেন। তবে দিনের খেলা শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে ফিরতে হয় তাকে। মিলান রত্নায়েকের ভেতরে ঢোকানো দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ১২৬ বলে ৭ চারে ৭৬ রান করেন সাদমান। দুজন গড়েন ৬৮ রানের জুটি।

দিনের বাকি সময়টুকু মুশফিকুর ও শান্ত ভালোভাবেই পার করে দেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে যাওয়া শান্ত এবার তুলে নেন ফিফটি। মুশফিকও তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছেন।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দম ন র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

পরিদের জন্য একটি দিন

ছোটবেলায় আমরা প্রায় সবাই কোনো না কোনো এক পরির গল্প শুনে ঘুমিয়েছি। দাদি-নানির মুখে শোনা কল্পনার জগতে হারিয়ে গিয়েছি, অথবা মায়ের কণ্ঠে ঝিমিয়ে পড়েছি একজোড়া ডানাবিশিষ্ট এক অলৌকিক সত্তার গল্প শুনতে শুনতে। সেই পরিরা হেসে উঠত গোলাপি ঠোঁটে, ঝলমলে পোশাক পরে ঘুরে বেড়াত প্রজাপতির মতো ডানায়, হাতে থাকত ইচ্ছাপূরণের জাদুর কাঠি। তারা কখনও বাঁচাত রাজকন্যাকে, কখনও পথ দেখাত হারিয়ে যাওয়া পথিককে আর আমরা শিশুরা ছোট ছোট কষ্ট ভুলে হারিয়ে যেতাম সেই রূপকথার মধ্যে।
২৪ জুন, আন্তর্জাতিক পরি দিবস। এমন এক দিন, যখন আমরা ফিরে তাকাই সেই ছোটবেলার দিকে, আবারও একটু পরি হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখি।
পরি চরিত্রের শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের নানা সংস্কৃতিতে। ইতালীয় লোককথা হোক কিংবা মধ্যযুগীয় ফরাসি সাহিত্যে চার্লস পেরোঁর ‘ফেয়ারি টেলস’–সব জায়গাতেই পরির উপস্থিতি চোখে পড়ে। পিটার প্যানের পাশে থাকা টিংকারবেল, সিন্ডারেলার পাশে থাকা গডমাদার বা শিশুর দাঁত নিয়ে যাওয়া টুথ ফেয়ারি–সব চরিত্রই পরিকে নতুন নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা কেবল সুন্দর নয়, তারা সাহায্য করে, পথ দেখায়, রক্ষা করে।
বাঙালির কল্পনায় পরি এসেছে নানা রূপে। শাড়ি পরে, টিকলি আর টিপ পরে; যে মুখটিপে হাসে। সবচেয়ে সুন্দর রূপ– সেই পরি দেখতে মায়ের মতো।
পরির গল্প শুনে একটি শিশু মনে করে– সেও পরি। সে উড়তে পারে, শুধু ডানাগুলো এখন অদৃশ্য। মায়ের কোলে লাফিয়ে এসে পড়া এক উড়ন্ত পরি; সে কখনও ধবধবে সাদা ডানাওয়ালা, আবার কখনও নিজের মতো সাদামাটা, শ্যামলা ও ঢ্যাঙা। যাদের ডানা আছে, কিন্তু কেউ দেখে না।
আবার ছোটবেলায় গল্পখেকো মেয়েটি যে বইয়ের মলাটে প্রথম পরি দেখেছিল, সে এখন বড় হয়ে নিজেকেই পরি ভাবে। সে জানে, পরি মানে শুধু সৌন্দর্য নয়, তার থাকে ইচ্ছা পূরণ করার ক্ষমতা। পরি মানে স্বাধীনতা। নিজে উড়তে পারা। কাউকে ঠেস না দিয়ে নিজেই হাল ধরতে পারা।
আমরা অনেক সময় বলি, ‘ডানাকাটা পরি’। এই কথার মধ্যে লুকিয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতা। আমাদের সমাজে বহু মেয়েকে আমরা সেই ডানাকাটা পরিতে পরিণত করি; যাদের স্বপ্নগুলো আমরা নিঃশব্দে ছেঁটে দিই। তারা পড়তে চায়, সাজতে চায়, উড়তে চায়– কিন্তু বলা হয়, এত স্বাধীনতা তোমাদের জন্য নয়। যেন পরি হতে গেলে তাকে শুধু সুন্দর হতে হবে; ওড়ার সাহস কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তার নেই। আসলে ডানাটা ওড়ার প্রতীক। সেই ওড়াকে পশ্চাৎপদ সমাজ ভয় পায়। যে নারী নিজে পথ বেছে নেন, নিজের মতো করে বাঁচেন, তাঁকে আমরা পরি না বলে ‘বিদ্রোহী’ বলি। অথচ তিনিই তো প্রকৃত পরি, যে কারও দয়ার পাত্র নন, নিজের শক্তিতে উড়তে জানেন।
আজকের দিনেও আমাদের চারপাশে অনেক পরি আছেন। যারা হয়তো পরির মতো দেখতে নন; যাদের ডানাগুলো তাদের মন আর মস্তিষ্কে লুকানো। তারা কেউ মা, কেউ শিক্ষক, কেউ চিকিৎসক, কেউবা একা ঘর সামলে চাকরি করেন। তারা হয়তো রূপকথার পরির মতো ঝলমলে নন; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজের ইচ্ছাপূরণ করেন। অন্যদের ইচ্ছেও পূরণ করতে জানেন। তাদের ডানাগুলো হয়তো ধবধবে সাদা নয়; কিন্তু সেই ডানাতেই উড়ে সাহস, সহমর্মিতা, মমতা আর শক্তি।
আন্তর্জাতিক পরি দিবসে আমরা চাই পরিকে শুধু রূপকথায় নয়, জীবনের বাস্তবতায় স্বীকৃতি দিতে। আমাদের কন্যাদের শেখাতে পারি– তারা পরি হতে পারে শুধু রূপে নয়, সাহসে। আমাদের বোন, মা, প্রেমিকা বা বন্ধুরা– তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো গল্পের পরি। তারা যেন নিজস্ব স্বপ্ন নিয়ে উড়তে পারে, সেই স্বাধীনতা যেন আমরা দিতে শিখি।
আজ একটি ছোট উৎসব করা যেতে পারে– পরির থিমে সাজানো একটি পার্টি, ছোটদের অঙ্কন প্রতিযোগিতা বা শুধু একটি বই পড়া, যেখানে একটি পরি একা লড়ে জিতেছে। এমন গল্প পড়া, যেখানে পরি শুধু সুন্দর নয়, সাহসীও।
এই বিশেষ দিবসে আমরা যেন ভুলে না যাই পরির ডানার যত্ন নিতে হয়। যাদের আমরা ভালোবাসি, যাদের আমরা সম্মান করি, যারা আমাদের পাশে থাকে তাদের ডানাগুলো আমরা যেন না ছেঁটে ফেলি। বরং তাদের ওড়ার সাহস দিই। তাদের বলি– ‘তুমি পারবে। তুমি পরি।’ এটুকুই চাওয়া প্রত্যেক নারী যেন তাঁর ভেতরের পরিকে চিনতে পারেন আর তাঁর ডানাগুলো ছড়িয়ে দিতে পারেন আকাশজুড়ে। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ