থানায় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার ঘটনায় শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি
Published: 21st, June 2025 GMT
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় এইচএসসির প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খুলে প্রশ্ন বের করার ঘটনায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম মোফাখখারুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বোর্ডের কলেজ পরিদর্শককে আহ্বায়ক করে তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিতে একজন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ধামইরহাট উপজেলার এমএম সরকারি ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষককে রাখা হয়েছে। আগামী রবিবারের (২২ জুন) মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও আলাদা দুইটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এর আগেই থানা হাজতে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলার ঘটনায় একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে হলে নিয়ে রাত্রিযাপন রাবি ছাত্রের
রাজশাহীর পদ্মা নদীর বাঁধ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
সম্প্রতি ১৭টি ট্রাংকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ধামইরহাট থানায় পাঠায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। মালখানা হিসেবে ব্যবহৃত ট্রাংক রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়। ওই রাতে একটি হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য উদঘাটনের কৌশলগত কারণে তাদের আলাদা আলাদা স্থানে রাখা হয়। এক আসামিকে রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়।
সেখানে প্রশ্নপত্রের ট্রাংকে দুইটিতে তালা থাকলেও চাবি ছিল তালার সঙ্গেই। তারপর সিলগালা করা ছিল। ওই আসামির হাতে হ্যান্ডকাপ থাকলেও এক হাত খোলা ছিল। তিনি সিলগালার সিল তুলে চাবি দিয়ে তালা খোলেন। এরপর একটি প্রশ্নের প্যাকেট বের করে কাটেন। প্রশ্নপত্র দেখার পর তিনি কয়েকটি প্রশ্ন ছিঁড়েও ফেলেন। পরে সকালে পুলিশ গিয়ে এগুলো দেখতে পায়। এ ঘটনায় সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মামলা করে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে আয়োজিত মানববন্ধনে উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখা, উপজেলা শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ দিন বিকেলে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বোর্ডের গঠন করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা থানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.
তিনি বলেন, “আসলে অবকাঠামোগত দুর্বলতা আছে তো। সে জন্যই হাজতখানা ব্যবহার হয় মালখানা হিসেবে। এটা একটা দুর্ঘটনা। আবার এটা পরীক্ষা এবং সরকারকে বিতর্কের মুখে ফেলার ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আসামির মনোজগতের কোনো ত্রুটিও থাকতে পারে। আসলেই কী ঘটনা সেটা তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদনেই আসবে। আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব।”
এ ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশ আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির শনিবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “ধামইরহাটের সরকারি এম এম ডিগ্রি কলেজের জন্য বরাদ্দকৃত এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের তিনটি ট্রাংক থানার লকার রুমে সংরক্ষণ করা হয়। প্রশ্ন সর্টিংয়ের সময় একটি ট্রাংক তালা খোলা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং ইতিহাস দ্বিতীয়পত্রের এক প্যাকেট প্রশ্ন লকার রুমের এক কর্ণারে পাওয়া যায়। ওই প্যাকেটের কিছু প্রশ্নপত্র ছেঁড়া থাকলেও প্রশ্নপত্রের সংখ্যা সঠিক পাওয়া যায় বলেও নওগাঁর জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেছেন।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে ও দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ চিহ্নিতকরণের জন্য জেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইতিহাস দ্বিতীয়পত্রের (বিষয় কোড-৩০৫) যে সেটের প্রশ্ন খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়, সব কেন্দ্রের সেই সেটের প্রশ্ন বাতিল করা হয়েছে। একই বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ভিন্ন কয়েকটি সেট বোর্ডের কাছে সংরক্ষিত থাকায় পরীক্ষা গ্রহণে কোনো জটিলতা তৈরি হবে না।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ধ মইরহ ট পর ক ষ উপজ ল র ঘটন সরক র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
কন্যা ফাতিমাকে নবীজির ৫ উপদেশ
ইসলামে চারজন নারীকে নিখুঁত নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়: বিবি মরিয়ম, আসিয়া, খাদিজা (রা.) এবং ফাতিমা (রা.)। ফাতিমা ছিলেন নবীজির প্রিয় কন্যা। ইসলামের প্রাথমিক দিনগুলোতে তিনি ছিলেন শিশু। ধীরে ধীরে তিনি একজন কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে ইসলামের আদর্শ নারীর নিখুঁত উদাহরণ হয়ে আবির্ভূত হন।
নিখুঁত নারী হিসেবে ফাতিমা (রা.)ফাতিমা (রা.) ইসলামের মহান নারীদের একজন। তিনি তাঁর পিতার নবুওয়তের মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং নারীদের জন্য একটি আদর্শ রোল মডেল। কোরআনে নবী–পরিবারের পবিত্রতা সম্পর্কে বলা হয়েছে: ‘তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করো এবং জাহিলিয়া যুগের মতো প্রদর্শনী করো না...আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে, হে নবীর পরিবার, সব অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক করতে।’ (সুরা আহযাব, আয়াত: ৩৩)
শৈশব থেকেই তিনি তাঁর পিতামাতার ওপর কুরাইশদের নিপীড়ন ও অত্যাচার প্রত্যক্ষ করেছেন। এমনকি তিনি নিজেও কখনো কখনো কুরাইশদের উপহাসের শিকার হয়েছেন। শক্তিমান নারীতিনি যখন খুব ছোট, মাত্র পাঁচ বছর বয়স, তখন নবীজি (সা.) মক্কার হিরা গুহায় প্রথম ওহি পান। শৈশব থেকেই তিনি তাঁর পিতামাতার ওপর কুরাইশদের নিপীড়ন ও অত্যাচার প্রত্যক্ষ করেছেন। এমনকি তিনি নিজেও কখনো কখনো কুরাইশদের উপহাসের শিকার হয়েছেন। আজকের শিশুদের মতো যারা খেলার মাঠে উৎপীড়ন বা সামাজিক চাপের মুখোমুখি হয়, তেমনই ফাতিমা (রা.) শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক কষ্ট সহ্য করেছেন।
কাবায় নবীজি সিজদায় থাকা অবস্থায় একজন বিরোধী তাঁর ওপর ময়লা নিক্ষেপ করেছিল। কান্নাভেজা চোখে ফাতিমা (রা.) তাঁর পিতার শরীর পরিষ্কার করেন। নবীজি তাঁর প্রিয় কন্যাকে শান্ত করেন। (ইবনে হিশাম, আস-সিরাতুন নববিয়্যাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা, ২০০৪, খণ্ড ১, পৃ. ২৮৯)
শৈশবের কঠিনসব অভিজ্ঞতা তাকে নবীজির জীবনে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল।
আরও পড়ুনসাহাবি আবু উবাইদা (রা.)–র উপদেশ০৬ মার্চ ২০২৪বিবাহপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাঁকে আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হয়। এই বিবাহ মদিনায় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ হিসেবে বর্ণিত। যদিও ফাতিমা (রা.) তাঁর বোনদের মধ্যে একমাত্র, যিনি কোনো ধনী ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাহ করেননি। নবীজি (সা.) এই বিবাহের পক্ষে ছিলেন; কারণ, তিনি জানতেন আলী (রা.) একজন ধর্মভীরু মুসলিম এবং তিনি ফাতিমা (রা.)-এর যত্ন নেবেন।
ফাতিমা (রা.) বিবাহিত জীবনে সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তাঁর স্বামীকে পরিবারের জন্য রিজিক সংগ্রহে সহায়তা করতেন। কঠোর পরিস্থিতিতেও তিনি হাসান ও হুসাইন নামে দুই পুত্রসন্তানের মা হন। তিনি একজন স্নেহময়ী কন্যা, অনুগত স্ত্রী ও যত্নশীল মা ছিলেন। তিনি জীবনের কষ্ট সহ্য করেছেন কোনো অভিযোগ ছাড়াই। আজকের নারীদের মধ্যে কতজন এমনটি করতে পারেন?
ফাতিমার মতো কন্যা গড়ে তোলাআধুনিক সংস্কৃতি প্রায়ই নারীর বাহ্যিক সৌন্দর্যের ওপর জোর দেয়। কিন্তু ইসলাম শেখায় যে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। মুসলিম নারীরা দরিদ্রদের সাহায্য করে, স্বামীর বোঝা কমায়, সন্তানদের বিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলে, পিতামাতাকে ভালোবাসে এবং তাদের ক্যারিয়ার, শখ বা আগ্রহের মাধ্যমে নিজেকে উন্নত করে। তাদের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
পৃথিবীর নারীদের মধ্যে তোমাদের অনুসরণের জন্য মারিয়াম বিনতে ইমরান, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া যথেষ্ট।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৮৭৮আজকের মুসলিম কন্যারা কি ফাতিমা (রা.)-এর আচরণ ও ইমানের কাছাকাছি বড় হচ্ছে? তিনি শৈশবে নিপীড়ন ও সহিংসতার মুখোমুখি হয়েও ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী নারী হয়ে উঠেছিলেন।
নবীজি বলেছেন: ‘পৃথিবীর নারীদের মধ্যে তোমাদের অনুসরণের জন্য মারিয়াম বিনতে ইমরান, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া যথেষ্ট।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৮৭৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,০৯০)
তিনি আরও বলেছেন, ‘ফাতিমা জান্নাতের নারীদের প্রধান।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৭৮১)
আরও পড়ুনরাগ নিয়ন্ত্রণে হাদিসের ৭ উপদেশ৩০ জুলাই ২০২৫তাকে দেওয়া নবীজির উপদেশনবীজি (সা.) বিভিন্ন সময়ে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন, যা প্রত্যেক আদর্শ বাবার জন্য স্মরণে রাখা কর্তব্য।
১. কষ্টসহিষ্ণু হতে বলা
আলী (রা.) বলেন, একবার নবীজির কাছে এসে ফাতিমা গৃহকর্মের কষ্টের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে তিনি হাতে জাঁতা দিয়ে শস্য পিষতে পিষতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন এবং গৃহকর্মে সাহায্যের জন্য একজন খাদেম চান।
নবীজি তখন তাঁকে কোনো দাস না দিয়ে একটি বিশেষ আমল শিখিয়ে দেন, যা তাঁর জন্য দাসের চেয়েও উত্তম। তিনি বলেন, ‘তোমাকে কি এমন কিছু শিখিয়ে দেব না, যা তোমার জন্য দাসের চেয়েও উত্তম? যখন তুমি ঘুমাতে যাবে, তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলবে। এটি তোমার জন্য দাসের চেয়েও উত্তম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,১১৩, ৫,৩৬১, ৬,৩১৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭২৭)
২. আল্লাহভীরু হতে বলা
নবীজি তার প্রিয় কন্যাকে বলেছেন, ‘হে ফাতিমা, আল্লাহকে ভয় করো এবং তাঁর নির্দেশ পালন করো।’ এই উপদেশ তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি প্রায়ই বলতেন। এমনকি তিনি বলেছেন, ‘আমি ফাতিমাকে তার প্রভুর (আল্লাহর) বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ থেকে রক্ষা করতে পারব না যদি সে তাকওয়া (খোদাভীতি) অবলম্বন না করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,৪৩৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,০৬৩)
৩. ধৈর্য ও সন্তুষ্টির উপদেশ
ফাতিমা (রা.)-এর জীবন ছিল অত্যন্ত সাধারণ এবং তিনি প্রায়ই দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করতেন। নবীজি তাঁকে ধৈর্য ধরতে ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে উপদেশ দিয়েছেন। ফাতিমা (রা.) যখন তাঁর দারিদ্র্য ও কষ্টের কথা উল্লেখ করেন, নবীজি তাঁকে বলেন, ‘তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে তুমি জান্নাতের নারীদের সরদার হবে?’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৭৮১)
ফাতিমা, তুমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, কারণ এটি তোমার পাপ মোচন করবে এবং তোমাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করবে।মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৬২২৪. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
নবীজি ফাতিমা (রা.)-কে প্রায়ই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, ‘ফাতিমা, তুমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, কারণ এটি তোমার পাপ মোচন করবে এবং তোমাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৬২২)
তিনি তাঁকে শিখিয়েছেন যে জিকির ও নামাজ মানুষের হৃদয়কে শান্তি দেয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক। একটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে তিনি ফাতিমা (রা.)-কে বলেছেন, ‘তুমি নিয়মিত নামাজ আদায় করো এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করো।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ১,৩০৪)
৫. স্বামীর প্রতি দায়িত্ব পালন
হজরত ফাতিমা ও আলী (রা.)-এর পারিবারিক জীবন ছিল সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সহযোগিতার একটি আদর্শ। একটি বর্ণনায় এসেছে যে নবীজি তাঁদের ঘরে গিয়ে দেখতেন যে তারা একসঙ্গে গৃহকর্ম ভাগ করে নিয়েছেন। ফাতিমা ঘরের কাজ করতেন, আর আলী (রা.) বাইরের কাজে সহায়তা করতেন। নবীজি এই ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন।
তিনি ফাতিমা (রা.)-কে তাঁর স্বামী হজরত আলী (রা.)-এর প্রতি দায়িত্বশীল হতে উপদেশ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘সর্বোত্তম নারী সেই, যে তার স্বামীকে খুশি করে এবং তার আনুগত্য করে যখন সে তাকে ন্যায়সংগত কিছু আদেশ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৮৫৭; সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৩,২৩১)
ফাতিমা (রা.) ছিলেন একজন স্নেহময়ী কন্যা, অনুগত স্ত্রী ও যত্নশীল মা, যিনি জীবনের কষ্ট সাহসের সঙ্গে সহ্য করেছেন। তিনি ইসলামের নিখুঁত নারীদের একজন এবং আধুনিক মুসলিম নারীদের জন্য একটি আদর্শ।
আরও পড়ুনজান্নাতে নারীদের সরদার হজরত ফাতিমা (রা.)০৮ জানুয়ারি ২০২৫