গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপির এক পথসভায় নেতা-কর্মীদেরে মুজিবীয় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এক ছাত্রদল নেতা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ছাত্রদল নেতার নাম নাহিদ হাসান। তিনি উপজেলার প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।

শুক্রবার (২০ জুন) এ ঘটনায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল সরকার। সম্প্রতি ফেসবুকে নাহিদ হাসানের সাত সেকেন্ডের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে, ভিডিওটি কবের সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

ভিডিওতে নাহিদ হাসানকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘স্থানীয় প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’’ এ সময় ওই ছাত্রদল নেতার কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন পথসভায় উপস্থিত থাকা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা। পরে তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমানের বাংলাদেশে কোনো বাড়ি নেই: বিএনপি নেত্রী

খুলনায় বিএনপি-যুবদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার 

বিএনপির পথসভায় ছাত্রদল নেতা ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ছাত্রদলের নেতা কীভাবে এমন বক্তব্য দেন?

বিএনপির স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, নাহিদ হাসান পূর্বে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে নানা তদবির ও জেলার সুপারিশে তিনি ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে নাহিদের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল সরকার বলেন, “কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম রিফাত বলেন, “ঘটনাটি পুরনো হলেও আলোচিত। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।”

ঢাকা/রফিক/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র ব এনপ র পথসভ য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দর লিজ ও রাখাইনে করিডরের উদ্যোগ বাতিলের দাবিতে ২৭-২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া ও মিয়ানমারের রাখাইনে করিডর দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ২৭ ও ২৮ জুন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, রোডমার্চ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ওই দুই দিন দেশের সকল জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।

২৭ জুন সকাল সকাল নয়টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হবে রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশ। এ সমাবেশ শেষে ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লার বিভিন্ন পয়েন্টে পথসভা ও মিছিল শেষে কুমিল্লায় প্রথম দিনের সমাপনী সমাবেশ করে ফেনীতে রাত্রি যাপন করা হবে। দ্বিতীয় দিন ২৮ জুন সকালে ফেনী থেকে যাত্রা করে মিরসরাই, সীতাকুণ্ডে পথসভা ও মিছিল শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের সামনে সমাপনী সমাবেশ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। রোডমার্চ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার এখতিয়ার–বহির্ভূতভাবে রাখাইনে করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এটি গণতন্ত্রে উত্তরণের সম্ভাবনায় নানা সংকট তৈরি করছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ এবং অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমদানি ও রপ্তানির ৯২ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়। ভৌগোলিক কারণে এ বন্দরের সঙ্গে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা জড়িত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বৃহৎ ও লাভজনক টার্মিনাল নিউমুরিং টার্মিনাল। বিদেশিদের কাছে এ টার্মিনাল ইজারা দেওয়া হবে আত্মঘাতী। এর ফলে বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদের ওপর বিদেশি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। বিদেশিদের নিয়োগের ফলে দেশীয় কর্মসংস্থান কমবে, শ্রমিকেরা বেকার হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার রাখাইনে কথিত মানবিক করিডর বা ত্রাণ চ্যানেল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই করিডর দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিকভাবে আক্রান্ত হবে। সাম্রাজ্যবাদী ছায়া যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে বাংলাদেশ। এ অঞ্চলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পাবে।

বক্তারা আরও বলেন, এ সরকার মার্কিন স্যাটেলাইট কোম্পানি স্টারলিংককে এ দেশে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে এবং ইতিমধ্যে তা চালু হয়েছে। এই মার্কিন কোম্পানি শুধু নিরীহ ইন্টারনেট সেবাই প্রদান করে না, সেই সঙ্গে দেশে দেশে সামরিক ও রাজনৈতিক নজরদারি চালায়। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, ফিলিস্তিন-ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা-ইসরায়েলের পক্ষে তথ্যপ্রযুক্তিগত অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে এই ইন্টারনেট কোম্পানি।

এ ছাড়া সামরিক শিল্পের মতো স্পর্শকাতর খাতে তুরস্ক ও কাতারকে অস্ত্র তৈরির কারখানা নির্মাণে এ সরকারের আহ্বানের পদক্ষেপও গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন (নসু)। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মোস্তাক হোসেন, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য বেলাল চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর লিজ ও রাখাইনে করিডরের উদ্যোগ বাতিলের দাবিতে ২৭-২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ
  • বাণিজ্য মেলায় লটারির নামে জুয়ার আয়োজন