অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার কারণেই মবের (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেছেন, সরকার যত দিন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে না, তত দিন সমাজ থেকে মবোক্রেসি বন্ধ হবে না। মব উৎপাদনের দায় পুরোপুরি সরকারের।

আজ সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে রাশেদ খান এ কথা বলেছেন। গতকাল রোববার রাজধানীর উত্তরায় ‘মব’ তৈরি করে হেনস্তার পর সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। পোস্টে সে প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন রাশেদ।

ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান লিখেছেন, ‘গতকাল মবোক্রেসির মাধ্যমে লাঞ্ছিতের পর বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্রেপ্তার হয়েছে। মবোক্রেসি ও লাঞ্ছনার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। সরকার মবের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, এই মব উৎপাদনের সঙ্গে সরকার জড়িত নয় কি? সরকারের মাথায় কেন বিতর্কিত তিনটা একতরফা, নৈশ ও ডামি নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত কমিশন, সচিব, ডিসি (জেলা প্রশাসক), এসপি (পুলিশ সুপার) এবং আওয়ামী লীগের ডামি, মামি, স্বতন্ত্র নামধারী এমপি ও মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার, সম্পদ বাজেয়াপ্তের চিন্তা কাজ করল না?’

রাশেদ লেখেন, ‘আমি অসংখ্যবার বলেছি, এই সরকারের উপদেষ্টারা সাবের-মান্নানসহ (আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও আবদুল মান্নান) বেশ কিছু ডামি এমপির জামিন করিয়েছে, পুনর্বাসন করছে। যেসব এমপির টাকা এবং উপদেষ্টাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তার সম্পর্ক, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। যেসব মাফিয়া সম্পদশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী হাসিনার অবৈধ সাম্রাজ্য গঠনে সহযোগিতা করেছিল, তারাও ধরাছোঁয়ার বাইরে। সরকার যদি এদের শাস্তির আওতায় না এনে অপরাধীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখে, তাহলে কি মব উৎপাদনের জন্য সরকার রসদ জোগাচ্ছে না?’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে যে বিপ্লবী চরিত্র জনগণ প্রত্যাশা করেছিল, তার কোনো কিছুই পরিলক্ষিত হচ্ছে না বলে পোস্টে অভিযোগ করেন গণ অধিকার পরিষদের এই শীর্ষ নেতা। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের তিন হাজার মাথাওয়ালা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। শেখ পরিবারের একজনকেও সরকার পাকড়াও করেনি। গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত কতজনকে ধরা হয়েছে? তাহলে গণহত্যার বিচার সরকার কীভাবে করতে চায়? সরকার যত দিন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে না, তত দিন সমাজ থেকে মবোক্রেসি বন্ধ হবে না। মব উৎপাদনের দায় পুরোপুরি সরকারের। সরকারের দুর্বলতার কারণেই মবের ঘটনা ঘটছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মব ক র স সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মসজিদের ইমামদের সঙ্গে ডেসকোর মতবিনিময়

সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটির মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। এর মাধ্যমে বিদ্যুতের অপচয় রোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকার মহাখালীর একটি কনভেনশন হলে আজ বৃহস্পতিবার এই সভার আয়োজন করা হয়।

ডেসকো থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় অংশ নিয়ে ডেসকোর চেয়ারম্যান ও পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষের (পিপিপি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের মতো ৫০০ মানুষকে জানানো মানে, আপনার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ৫ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানো।’

ডেসকোর চেয়ারম্যান বলেন, মসজিদের ইমাম, খতিব সাহেবদের সমাজের ওপর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। শুক্রবারে খুতবার সময় বিদ্যুৎ সাশ্রয় নিয়ে সামাজিক সচেতনতামূলক কথা বলা হলে মানুষ তা আমলে নিয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে উৎসাহিত ও সচেতন হবেন। তিনি আরও বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিচ্ছে। অথচ প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, হাসপাতাল এমন অনেক জরুরি কাজে অর্থ প্রয়োজন। বিদ্যুৎ অপচয় না করলে সরকারের খরচ কমবে, যা অন্যান্য জরুরি কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

মতবিনিময় সভায় মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং বিভিন্ন মসজিদ কমিটির প্রতিনিধিরা মতামত ব্যক্ত করেন। বনানী সেন্ট্রাল জামে মসজিদের ইমাম মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ধরনের আয়োজন এই প্রথম। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি। রূপনগর আবাসিক এলাকার মসজিদের ইমাম মো. জাহিদুল ইসলাম এ আয়োজনের প্রশংসা করেন। উত্তরা পশ্চিম তুরাগ এলাকার এক মসজিদের প্রতিনিধি বিদ্যুৎ বিল কমানোর সুপারিশ করেন।

আমন্ত্রিত অতিথিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ। তিনি পবিত্র কোরআন শরিফের একটি আয়াত তরজমা করে সবাইকে অপচয় থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান। তিনি সবাইকে সচেতন হতে এবং নিজ নিজ এলাকার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে উৎসাহী করার জন্য অনুরোধ করেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়গুলো প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ