বাংলাদেশের ব্যবসা খাতভিত্তিক ‘কেস স্টাডি’ নিয়ে মার্কেটিংয়ের একটি বই প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা স্প্রিঞ্জার ন্যাচার। বইটি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনজন অধ্যাপক—মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, নাসরিন আক্তার ও আবু রেজা এম. মুজারেবা। আজ সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ‘মার্কেটিং ইন আ ট্রানজিশন ইকোনমি: নিউ রিয়ালিটিস, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড প্রসপেক্ট’ শীর্ষক বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিলো সিটি ব্যাংক লিমিটেড ও সাজগোজ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ কেস স্টাডি নিয়ে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক মানের প্রকাশনা। এই বই বাংলাদেশের বিপণন খাতকে এগিয়ে নিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, এই প্রকাশনা শুধু একটি গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক অর্জনই নয়, এটি তাদের অন্যান্য সহকর্মীদের জন্যও একটি অনুপ্রেরণা। সীমিত সম্পদ ও প্রতিকূলতার মাঝেও তাঁরা আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে পারছেন—সেটিই সক্ষমতার প্রমাণ।

‘মার্কেটিং ইন আ ট্রানজিশন ইকোনমি: নিউ রিয়ালিটিস, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড প্রসপেক্ট’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। আজ সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবস প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

আদালতে জেরার মুখে সাবেক সিইসি নূরুল হুদা বললেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে’

প্রায় এক ঘণ্টা কাঠগড়ায় বিমর্ষ হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মুস্তাফিজুর রহমান কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নূরুল হুদার কাছে জানতে চান, তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন কি না?

জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি কোনো শপথ ভঙ্গ করিনি। একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় পাঁচজনকে দিয়ে। একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকেন, বাকি চারজন থাকেন নির্বাচন কমিশনার। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে ১৭ লাখ কর্মকর্তা–কর্মচারী কাজ করেন। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো গ্রামের ভোটসংক্রান্ত সব তথ্য ঢাকায় বসে জানা সম্ভব নয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র মনিটরিং করার কোনো সুযোগ থাকে না।’

এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক সিইসি নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ফেয়ার নির্বাচন করা? তখন নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অনেক স্টেকহোল্ডার জড়িত থাকে। নির্বাচন আয়োজনের পর রিটার্নিং কর্মকর্তা গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনের আর কিছুই করার থাকে না। বিষয়টি উচ্চ আদালতের ওপর ন্যস্ত থাকে।’

এ পর্যায়ে সিএমএম নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের শিডিউল (তফসিল) ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী? জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচনের পর গেজেট হলে নির্বাচন কমিশনের আর কোনো ক্ষমতা থাকে না।’

এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক এই সিইসির কাছে নির্বাচনের আগে তৎকালীন আইজিপির (পুলিশের মহাপরিদর্শক) ভূমিকা জানতে চান। জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সাবেক আইজিপি আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি মনিটরিং করেছিলেন। যে কারণে ওই নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।’

একপর্যায়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। সেই বিতর্কের দায় নির্বাচন কমিশনের নয়।’

নূরুল হুদার বক্তব্যের পর তাঁর আরেক আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনি পটুয়াখালীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ভীষণ অসুস্থ। তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে।’

নূরুল হুদাসহ আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে বিএনপি। দুপুরে ওই মামলা হওয়ার পর সন্ধ্যায় একদল লোক ‘মব’ তৈরি করে নূরুল হুদার উত্তরার বাসা থেকে তাঁকে ধরে এনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর পুলিশে সোপর্দ করে। আজ পুলিশ ওই মামলায় নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের কাঠগড়ায় নূরুল হুদার এক ঘণ্টা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নূরুল হুদার দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে সিএমএম আদালতকক্ষে তোলা হয়। তখন সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিট। কাঠগড়ায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন নূরুল হুদা।

তখন একজন পুলিশ কনস্টেবল তাঁর মাথা থেকে হেলমেটটি খুলে ফেলেন। পরে চশমা পরেন নূরুল হুদা। একজন আইনজীবী জানতে চেয়েছিলেন তিনি কেমন আছেন? জবাবে নূরুল হুদা ঘাড় ডান দিকে ঘুরিয়ে ইঙ্গিত দিলেন, ভালো। এরপর কাঠগড়ায় মুখ ভার করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

নূরুল হুদাকে কাঠগড়ায় তোলার পাঁচ মিনিট পর ঢাকার সিএমএম মোস্তাফিজুর রহমান এজলাসে আসেন। নূরুল হুদার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রেপ্তার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন ও মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাবিনা আক্তারকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর দিনের ভোট রাতে করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন খানের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে শুরু করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে করা একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত

সম্পর্কিত নিবন্ধ