ঢাকার আক্রান্ত সব এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার দুই (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। পদক্ষেপ বিষয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকার আক্রান্ত এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.

সালেকুজ্জামান সাগর গত মাসে রিটটি করেন। রিটে মশার উপদ্রব এবং চিকনগুনিয়া, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম ও মাহফুজ বিন ইউসুফ।

আদেশের পর আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মশার উপদ্রব নজিরবিহীন হলেও তা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না দেখে রিটটি করা হয়। যেদিন রিটটি দায়ের করা হয়, সেদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯০, মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩। আজ আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৭৫৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। মশা নিয়ন্ত্রণে কী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী, ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতার কারণে জীবনের জন্য হুমকি এমন চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় আক্রান্ত সব এলাকায় অবিলম্বে মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারসচিব, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ