ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ
Published: 23rd, June 2025 GMT
ঢাকার আক্রান্ত সব এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার দুই (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। পদক্ষেপ বিষয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকার আক্রান্ত এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম ও মাহফুজ বিন ইউসুফ।
আদেশের পর আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মশার উপদ্রব নজিরবিহীন হলেও তা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না দেখে রিটটি করা হয়। যেদিন রিটটি দায়ের করা হয়, সেদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯০, মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩। আজ আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৭৫৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। মশা নিয়ন্ত্রণে কী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী, ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতার কারণে জীবনের জন্য হুমকি এমন চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় আক্রান্ত সব এলাকায় অবিলম্বে মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারসচিব, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত
কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু ও উখিয়া—এই তিন উপজেলার সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চল এবং সন্নিকটে অবস্থিত নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ওই বন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত ইজারাগ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি এবং বালু উত্তোলনের ফলে বনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত মাসে রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল হচ্ছে চকরিয়ার খুটাখালী মৌজার খুটাখালী-১; রামুর ধোলিরছড়া মৌজার ধলিরছড়া এবং পানিরছড়া খাল; উখিয়ার উখিয়া ঘাট মৌজার বালুখালী-১, উয়ালাপালং এবং রাজাপালং মৌজার দোছড়ি বালুমহাল, পালংখালী মৌজার পালংখালী; রাজাপালং মৌজার হিজলিয়া, ধোয়াংগারচর ও কুমারিয়ারছড়া।
আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
বেলা জানায়, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ২৭টি বালুমহালের তালিকা প্রস্তুত করে ২০২৫-২৬ (১৪৩২ বঙ্গাব্দ) সালের জন্য ইজারার উদ্দেশ্যে গত ১১ মার্চ দরপত্র আহবান করেন। ২৭টি বালুমহালের মধ্যে ওই ৯টি বালুমহাল সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনের মধ্যে এবং কাছাকাছি। তাই সংশ্লিষ্ট বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনা করে ওই বালুমহালগুলো ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এই অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চলমান। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বন রক্ষায় রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল ইজারার জন্য তালিকাভুক্ত করা সংবিধান ও অন্যান্য আইনের পরিপন্থী বলে কেন তা বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান বেলার অন্যতম আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই বালুমহালগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা এবং ইজারাযোগ্য বালুমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বালু উত্তোলনের ক্ষতি নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।