জীর্ণ আবাসিক হলে ঢামেক শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে বাস
Published: 23rd, June 2025 GMT
সেই ১৯৫৫ সালে চালু হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) একমাত্র আবাসিক ছাত্রাবাস শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হল। ৭০ বছর পার হলেও প্রায় ৭৫০ ছাত্রের আবাসন সুবিধার হলটির কোনো সংস্কার হয়নি। নতুন কোনো হলও নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে হলটির জরাজীর্ণ হাল; পিলার ফেটে, ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। এরই মধ্যে কিছু কক্ষকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তবু ছাত্রদের বিকল্প আবাসন ব্যবস্থা হয়নি।
দুই সপ্তাহ ধরে আবাসন সংকট নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গত শনিবার কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবারও শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করেছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তদানীন্তন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনকে (বর্তমান ঢামেক হাসপাতালের মূল ভবন) অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পে রূপান্তর করা হয়। যুদ্ধের পরে ১৯৪৬ সালে সেখানেই গড়ে ওঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এরপর বিভিন্ন সময় ভবনের কিছু অংশ বর্ধিত হলেও কলেজটির অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি।
গতকাল রাজধানীর বকশীবাজার-সংলগ্ন কলেজের একমাত্র হলে গিয়ে দেখা যায়, মূল ভবনের ছাদের বড় বড় পলেস্তারা খসে পড়ার পাশাপাশি পিলারগুলোও ফেটে ভেতরের কংক্রিট বেরিয়ে এসেছে।
ছাত্রদের ডা.
ব্যবস্থা হয়নি।
হলের ভেতরে এ, বি, সি ব্লক ভবনে জ্যেষ্ঠ ছাত্র এবং ডা. মিলন ইন্টার্নি হোস্টেলে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইন্টার্ন ছাত্ররা থাকেন। সেই ভবনগুলোর অবস্থাও ভালো না। অন্যদিকে, ছাত্রীদের ডা. আলীম চৌধুরী হলেরও একই হাল। ১৯৫০ সালে নির্মিত পুরোনো এ হলটিতে সাড়ে ৫০০ ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
কলেজের ইন্টার্ন ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন সমকালকে বলেন, মহাপরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিগত সময়ে কলেজের কোনো সংস্কার কাজই হয়নি। ফলে পুরো কলেজের ভবনেরই অবস্থা ভালো নয়। সবগুলো ভবন পুরোনো।
বর্তমান চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র (কে-৭৯) আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি সমকালকে বলেন, অনেকে হলে থাকে না নিয়মিত। তবে ওয়ার্ডে ডিউটি করতে হয় সেজন্য সবাই হলে বেড রাখে। তাই সবাইকে আবাসন সুযোগ দিতে হয়। নতুন ব্যাচের জন্য গণরুমের আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমরা এটার প্রতিবাদ করেছি।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের সভায় আমরা প্রতিটি দাবি নিয়ে কথা বলেছি। যেহেতু দাবিগুলো রাতারাতি বাস্তবায়নযোগ্য নয়, তাই আমরা বাস্তবায়নের জন্য রূপরেখা চেয়েছি। তারা বলেছেন, সামনে সরকার মেডিকেলের জন্য যে কাজ করবে, এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বসব। ছাত্রদের বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করা হলে আমরা ক্লাসে ফিরব।
কয়েক বছর আগে কলেজ এবং হাসপাতালের আমূল সংস্কারে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাপরিকল্পনার সঙ্গে মিলিয়ে ঢামেকের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী। তবে সরকারের আর্থিক সংকটে প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখেনি। তবে প্রবল ঝুঁকি থাকার পরও হলের কোনো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম বলেন, কলেজ এবং হাসপাতালের একটি অবকাঠামো পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তবে সেটি একনেকে পাস হয়নি। এই মহাপরিকল্পনার কারণে অন্য কোনো বড় সংস্কারও ঢাকা মেডিকেল কলেজে হয়নি। যার কারণে কলেজের একাডেমিক ভবন ও ছাত্রদের হোস্টেলের এ দুর্দশা চলছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ ম ল ভবন ব যবস থ র জন য কল জ র হয় ছ ল ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে