ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের অবস্থা হয়েছে ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’। দীর্ঘ ৪০ দিন তালাবদ্ধ থাকার পর সোমবার নগর ভবন খুলে দেওয়া হলেও সব বিভাগের কাজ শুরু হয়নি। বন্ধ আছে প্রকৌশল বিভাগের কার্যক্রম।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, রোববার সকালে নগর ভবনের প্রধান ফটক খুলে দেওয়া হয়। সেখানে আংশিকভাবে শুরু হয়েছে নাগরিক সেবা কার্যক্রম। অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা নগর ভবনে এলেও প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের কক্ষগুলোতে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। নগর ভবনের বাইরে থাকা আটটি আঞ্চলিক কার্যালয়েও প্রকৌশলীরা অনুপস্থিত ছিলেন। প্রকৌশলীদের কক্ষে তালা বা তাঁদের অনুপস্থিতির অর্থ উন্নয়নকাজ বন্ধ থাকা। ডিএসসিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। তবে নগরবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কিছুটা নমনীয় হয়েছেন আন্দোলনকারীরা। নাগরিক সেবার প্রয়োজনে নগর ভবন খুলে দেওয়া হয়েছে।’
সমস্যার শুরু ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশের পর। সাধারণত নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁর শপথের ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু এবার আইনি জটিলতা ও উচ্চ আদালতে রিট আবেদন থাকায় তারা শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকে।
বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার এক কোটি বাসিন্দা সব ধরনের দৈনন্দিন সেবা ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিলেন। দৈনন্দিন সেবার মধ্যে আছে জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনদ, হোল্ডিং ট্যাক্স ইত্যাদি।
ইশরাকের সমর্থকেরা প্রথমে নগর ভবনে আন্দোলন শুরু করেন। পরে সিটি করপোরেশনের কর্মীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন এবং কেউ কেউ ইশরাককে ‘জনগণের মেয়র’ হিসেবেও অভিষিক্ত করেন। আন্দোলনকারীরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও সরকার নিয়োজিত প্রশাসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। জবাবে উপদেষ্টা বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টা ইশরাকের কর্মকাণ্ডকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন।
আইন–আদালতের মাধ্যমেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে পারত। কিন্তু সেটি হয়নি। উভয় পক্ষ এটিকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে নেয়। সমস্যা হলো ইতিমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শপথ পড়ানোর সুযোগ নেই বলে জানিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, ইশরাক নগর ভবন না ছাড়লে নতুন নির্বাচন দেবেন। অন্যদিকে বিএনপির নেতারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।
নির্বাচন হোক বা না হোক, সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম কোনো অবস্থায় বন্ধ রাখা যাবে না। আন্দোলনের পক্ষে যত যুক্তি থাকুক না কেন, এমন কর্মসূচি নেওয়া যাবে না, যাতে জনগণ জিম্মি হয়, উন্নয়নকাজ ব্যাহত হয়। যাঁরা জনগণের জন্য রাজনীতি করেন, জনদুর্ভোগের বিষয়ে তাঁদের ন্যূনতম সংবেদনশীলতা থাকা উচিত।
৪০ দিন পর ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের ‘কৃপায়’ আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলেও ডিএসসিসির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। দৈনন্দিন সেবা পাওয়াই নগরবাসীর একমাত্র চাওয়া নয়। অর্থবছর শেষ হয়ে যাচ্ছে ৩০ জুন। এর মধ্যে চলতি বছরের প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাবে। এ মুহূর্তে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় মশকনিধন কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।
তাই সেবা কার্যক্রমের পাশাপাশি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কার্যক্রমও অবিলম্বে চালু হোক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নগর ভবন উপদ ষ ট শ ষ হয় র কর ম প রক শ ইশর ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় খাস জমিতে হচ্ছে লিচুবাগান
মাগুরা সদর উপজেলার আঠারোখাদা ইউনিয়নের দেবীনগর এলাকায় উদ্ধার করা ১১.৫৮ একর খাস জমিতে লিচুবাগান গড়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান রবিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে লিচুর চারা রোপণ করে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শিল্প সচিব বলেছেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে অনাবাদী খাস জমির যথাযথ ব্যবহারের পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত হবে এবং স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খাস জমি উদ্ধার করে লিচুবাগান করার কার্যক্রম পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ফল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকা/শাহীন/রফিক