‘মব ভায়োলেন্স’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণ) বন্ধ করা যাচ্ছে না, তবে কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে মবের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের দশম সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এখন পর্যন্ত মব ভায়োলেন্সে জড়িত কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে সংখ্যা বলতে পারব না। তবে বড় একটি সংখ্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার বিষয়টি উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওই ঘটনায় আমরা সবাই দুঃখিত। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত আছে কি না, খুঁজে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারও দুর্বলতা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে, বৈঠক সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখার বিষয়টি সব বাহিনীর প্রতিনিধি আজ নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে।

তবে যাঁরা নির্বাচনে অংশ নেবেন, প্রার্থী হবেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তাঁদেরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকবে। তবে প্রার্থী যাঁরা নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। তাহলে নির্বাচনটি ভালোভাবে শেষ করা সহজ হবে।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে নির্বাচন কমিশন। কমিশনকে সহযোগিতা করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ সময় এক সাংবাদিক বলেন, বিগত সময়ে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এবার তারা কতটা পারবে? জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তখন আপনারাও (মিডিয়া) ছিলেন। নির্বাচন নিয়ে আপনারাও কিছু বলেননি।’

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘নির্বাচনে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকে না, এর সঙ্গে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার থাকেন। নির্বাচন কমিশনেরও দায়িত্ব আছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কোনো কার্যক্রম করতে পারেনি। আমরা যতটা আশা করছিলাম, ততটা মিছিল হয়নি। দলটি বড় কিছু করতে পারেনি। তারা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন

আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় জনজীবনে তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, সচিবালয়, জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে- যান চলাচল স্বাভাবিক, মানুষের চলাচল স্বাভাবিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অন্যান্য দিনের মতোই চলছে।

আরো পড়ুন:

ঢাবি শিক্ষক এরশাদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

ঢাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা-বিষয়ক জাতীয় প্রতিযোগিতা

সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আধিক্য যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীও দেখা গেছে। কোথাও যান সংকট হয়নি, বরং কিছু বাসে বাড়তি যাত্রীর চাপ ছিল।

গুলিস্তানে এক বেসরকারি অফিসকর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “শাটডাউন বলে আজকে কিছুই বুঝলাম না। প্রতিদিন যেমন বের হই, আজও ঠিক তেমনই বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখিনি।”

চানখারপুলে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ মাহমুদা আক্তার বলেন, “শাটডাউনের নামে মানুষকে ভয় দেখানো ঠিক না। বাস কম হলেও চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই অফিসে যাচ্ছি।”

ঠিকানা পরিবহন শ্রমিক শহীদুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউন ডেকেছে শুনেছি, কিন্তু রাস্তায় কোনো প্রভাব নেই। পুলিশের বাড়তি অবস্থানও দেখি নাই। গাড়ি চলছে, যাত্রীও আছে।”

সচিবালয়ের কাছে একজন সরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল করিম বলেন, “শাটডাউনের মতো কর্মসূচি কখনোই জনস্বার্থের পক্ষে নয়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। আজকে যানচলাচল প্রতিদিনের মতোই।” 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক

নিষিদ্ধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সতর্ক উপস্থিতি বিশেষভাবে দেখা যায়নি। নিয়মিত দায়িত্বপালন ছাড়া আলাদা কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।

শাটডাউনের বিপক্ষে জনমতই শক্তিশালী

সরেজমিন চিত্র, সাধারণ মানুষের বক্তব্য এবং বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- রাজধানীবাসী শাটডাউনের পক্ষে নয়। বরং জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পক্ষেই তাদের মত।

রাজধানীর ৩৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ব্যস্ত সকাল, মানুষের স্বাভাবিক আনাগোনা এবং চলমান পরিবহন কার্যক্রম প্রমাণ করেছে- শাটডাউন ঢাকার জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বরং জনগণ নিষেধাজ্ঞামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানই দেখিয়েছে।

ঢাকা/আসাদ/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া ২টি বুলডোজার আটকে দিল সেনাবাহিনী
  • শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার
  • পটুয়াখালীতে গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন, প্রভাব পড়েনি শাটডাউনের
  • এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুতে নিরাপত্তা জোরদার, যানবাহনের সংখ্যা কম
  • ট্রাইব্যুনালে নিরাপত্তা জোরদার, আছে সেনাবাহিনী-র‍্যাব-পুলিশ
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে ‘সতর্কতা’
  • শেখ হাসিনাসহ অন্যদের মামলার রায় যা-ই হোক না কেন, তা কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর-মাদারীপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে বিজিবি
  • শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন