অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘মুক্তি ঐক্যদল’, দলীয় প্রধান এমপি হয়ে আবার বিয়ে করতে চান
Published: 25th, June 2025 GMT
নূর ইসলাম সিকদার ওরফে কে এম নূর ইসলাম সিকদার (৫৮), নিজেকে পরিচয় দেন ‘বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল’ নামের একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হিসেবে। দলটির নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। আবেদনপত্রে দলটির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী রহমানিয়া সুপার মার্কেট। তিনতলা ভবনটি বোয়ালমারী বাজার এলাকার জুতাপট্টি মহল্লায়।
নূর ইসলাম বোয়ালমারী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের গুণবাহা মহল্লার বাসিন্দা ও আবদুল জব্বার সিকদারের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী; তবে নিজেকে রাজনীতিবিদ পরিচয় দেন। তিনি এক ছেলের বাবা। তাঁর প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। ছেড়ে চলে গেছেন আরেক স্ত্রী। তাঁর ইচ্ছা, দলের প্রার্থী হয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেই আবার বিয়ে করবেন।
আরও পড়ুনকোনো দলের কার্যালয় আসলে ভাতের হোটেল, কোনোটার ট্রাভেল এজেন্সি১৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে দাবি করে নূর ইসলাম বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তাঁর দলের নিবন্ধন দেয়নি। এ জন্য ১৭ এপ্রিল দলটির নিবন্ধনের জন্য আবার আবেদন করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রহমানিয়া সুপার মার্কেট গিয়ে জানা যায়, ওই ভবনের তৃতীয় তলায় বসতেন নূর ইসলাম। তবে এক মাস আগে থেকে আর বসছেন না। ভবনটির দোতলার সিঁড়ি ভেঙে তৃতীয় তলায় ওঠার পথে দেখা যায়, কলাপসিবল গেটটি আটকানো; তালা ঝুলছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নূর ইসলাম সিকদার তাঁর দলীয় কার্যালয়টি সরিয়ে উপজেলা সদরের তালতলা এলাকায় কাঠের মার্কেটে নিয়েছেন। সেখানে গিয়ে নূর ইসলামের ছবি ও দলীয় পরিচিতিসহ দুটি ডিজিটাল পোস্টার দেখা যায়। পোস্টার দুটি গাছের সঙ্গে লটকানো এবং এতে লেখা আছে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়।
আরও পড়ুনকোনো দলের কার্যালয় আসলে ভাতের হোটেল, কোনোটার ট্রাভেল এজেন্সি১৫ ঘণ্টা আগেপরে নূর ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় এবং তিনি তালতলা এলাকায় আসেন। তিনি তালতলা–সংলগ্ন কাঠপট্টি এলাকার একটি দোকানে নিয়ে যান এই প্রতিবেদককে। ছোট্ট কক্ষটিকে নিজের দাবি করে এটিকে বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে পরিচয় দেন নূর ইসলাম। ওই কক্ষে একটি চৌকি, দুটি টেবিল ও আটটি প্লাস্টিকের চেয়ার এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রাখা। আশপাশে রাখা আছে কাঠের টুকরা ও কাঠ কাটার যন্ত্রপাতি। নূর ইসলাম জানান, রহমানিয়া সুপার মার্কেটে দলটির কার্যালয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। এ কারণে এই অস্থায়ী কার্যালয়। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা পর তিনি আগের জায়গায় ফিরে যাবেন।
নূর ইসলাম দাবি করেন, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি ২০০ সদস্যবিশিষ্ট। তাঁদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালম রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঢাকায় তাঁদের কোনো দলীয় কার্যালয় নেই। তবে অচিরেই রাজধানীর বিজয় সরণিতে একটি দলীয় কার্যালয় বানাতে চান।
নূর ইসলাম সিকদার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ন র ইসল ম দলট র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোটের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে চাকসু ভবন
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে চাকসু ভবন। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ বাজেটটি পাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চবির প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদ রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় চাকসু ভবন সংস্কারে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭ টাকার একটি বাজেট পাশ হয়েছে। এরইমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেটের আলোকে বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।”
তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ চাকসু ভবন রং করা, ইলেক্ট্রিক, টাইলস, গ্রাস ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ ছোটবড় যাবতীয় কাজ এ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “চাকসু ভবন সংস্কারে বড় একটি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে সংস্কারের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ সংস্কারের কাজ শেষ হবে।”
সংস্কারের কাজ তত্বাবধানে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। কমিটিতে আছেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধূরী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক বজলুর রহমান ও চবির প্রকৌশল দপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক রিয়াদ।
সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর থেকেই কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল চাকসু ভবন। দীর্ঘদিন পর ‘ভাতের হোটেল’ খ্যাত ভবনটির সংস্কারে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফ তানজু বলেন, “দীর্ঘদিন পর চাকসু ভবন সংস্কারে আমরা অনেক আনন্দিত। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভবনটিতে রং করাসহ আরো বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামগত সংস্কার নয়, আমরা চাই চাকসুর মাধ্যমে যেন প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ হয়।”
ভোটার ও প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, অবকাঠামোগত সংস্কার-সবমিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এখন শুধু ভাতের হোটেল নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ি থেকে লেডিস ঝুপড়ি, শহীদ মিনার থেকে জিরো পয়েন্ট, অনুষদ হতে শাটল ট্রেন- সর্বত্রই প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে; দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবর্তনের নানা প্রতিশ্রুতি।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা