জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নারীদের অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে
Published: 26th, June 2025 GMT
শেখ হাসিনার পতন নারীদের হাত দিয়েই শুরু হয়েছিল; কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পরে নারীদের সেই ইতিহাস ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে এ অভ্যুত্থানে নারীদের অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। যদি সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকে, তাহলে ৩০ বছর পরে জুলাইয়ে তাঁদের অবদান বিস্মৃত যাবে।
বুধবার বিকেলে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র: নারীদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীরা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের আবদুল্লাহ ফারুক অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের আগে হাসিনা দমন-পীড়ন চালিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে। রাজাকার বলে মানুষকে নির্যাতনের বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। এমনকি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা ভিন্নমত পোষণ করার কারণে অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদেরও রাজাকার ট্যাগ দিয়েছে।’
আশরেফা খাতুন আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের কথা যদি চিন্তা করি, সেটার সূচনা হয়েছে ১৪ জুলাই রাতে, যার নেতৃত্বে ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরা। এ জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এক দিনে তৈরি না হলেও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা ১৪ জুলাই রাতেই হয়েছে। যেখানে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। হাসিনার পতন নারীদের হাত দিয়েই শুরু হয়েছে।’
অ্যাকশন ফর কমিউনিটি ট্রান্সফরমেশনের প্রতিষ্ঠাতা নাফিসা ইসলাম বলেন, এ দেশের সব আন্দোলনেই নারীদের অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতি দেখেছে কীভাবে মেয়েরা রাস্তায় নেমে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ের পরেও যেন তাদের বারবার রাস্তায় নামতে না হয় নিজেদের অধিকারের জন্য, সে বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র নওশীন নওয়ার বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের গুরুত্বটা বুঝতে হবে। জুলাইয়ে একক কোনো গোষ্ঠীর অবদান ছিল না। এটি প্রতিটি শ্রেণির মানুষ মিলেই সম্পন্ন হয়েছে।
আপ বাংলাদেশের মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা চাই, জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নারী শহীদদের পুরুষ শহীদদের মতো সমান গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণের জন্য নারীদের অংশগ্রহণ এবং তাঁদের মতামতের গুরুত্ব প্রদান করার মতো পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ‘জুলাই কন্যা’ প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা জান্নাতুন প্রমী, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্নাসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র অবদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়বে না: শেখ বশিরউদ্দীন
ভারত আরও চারটি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, এমন কোনো বিষয়ে ছাড় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে দর–কষাকষি চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ শতাংশের ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা থাকলেও এতটা অস্থিতিশীল নয় যে ব্যবসা–বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। তাই রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে তাতে সমস্যা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের নতুন বিধিনিষেধের আওতায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা এখন বাংলাদেশ থেকে চার ধরনের পাটের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে পারবেন না। শুধু দেশটির মুম্বাইয়ের নভসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ আছে। এমন বিধিনিষেধ দিয়ে গতকাল সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের কার্যালয় (ডিজিএফটি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় অশুল্ক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি। তার আগে ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে দেশটি।
এদিকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ভারত বাতিল করার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছে। এর আগে বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ ছিল।