পাবনার বেড়া উপজেলার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে হুরাসাগর নদে খাঁচায় করে মাছ চাষের বিষয়টি প্রথমবার দেখেন আমির আলী। তখন থেকেই তাঁর আগ্রহ জন্মায়। পরে খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলার বৃশালিখা মহল্লার পাশে হুরাসাগর নদে নিজের ৪০টি খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। এখন সেই খাঁচার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০-এ।

আমির আলীর বাড়ি সুজানগর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। আগে লুঙ্গি-গামছার ব্যবসা করতেন। এতে লাভের বদলে তাঁকে লোকসান গুনতে হচ্ছিল। নদের পানিতে খাঁচায় মাছ চাষের নতুন পদ্ধতি দেখে তাঁর মনে হয়, এটিই হতে পারে জীবনের মোড় পরিবর্তনের পথ। তাই পাশের বেড়া উপজেলার হুরাসাগর নদে বছরখানেক আগে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন।

আমির বলেন, ‘প্রতি খাঁচায় ৩০০ গ্রাম ওজনের ৫০০টি মাছ ছাড়ি। এগুলো দুই মাসে এক কেজি ওজনের হয়। খরচের তুলনায় লাভ বেশি, তাই এখন আরও খাঁচা বাড়াচ্ছি।’
আমির একা নন, একই রকম অভিজ্ঞতা আরও কয়েকজনের। ২০২৩ সালে বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখা মহল্লায় হতদরিদ্র ২০ জন সদস্য নিয়ে ‘মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’ গড়েন স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মুন্নাফ। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তা এবং স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা পিপিডির (প্রোগ্রামস ফর পিপলস ডেভেলপমেন্ট) কারিগরি সহযোগিতায় তাঁরা নদীর পানিতে খাঁচায় করে ‘মনোসেক্স তেলাপিয়া’ মাছের চাষ শুরু করেন।

মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির উদ্যোগে প্রথমে ২০টি খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করা হয়। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এগুলো বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৬০-এ। শিগগিরই তাঁরা খাঁচার সংখ্যা ১০০-তে বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। তাঁদের সফলতা দেখেই আমিরসহ আরও অনেক উদ্যোক্তা এ পদ্ধতির মাছ চাষে যুক্ত হন এবং হচ্ছেন।

কয়েকজন মাছচাষি জানান, প্রবহমান নদীতে মাছ দ্রুত বড় হয়। রোগবালাইও কম, খাবার প্রাকৃতিকভাবে মিলে যায়। এসব কারণেই খরচ কম, লাভ বেশি। প্রতিটি খাঁচা থেকে বছরে ৬০০ কেজি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। ১৮০ টাকা কেজি হিসাবে যার মূল্য প্রায় ১১ হাজার টাকা।

রফিকুল ইসলাম নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, নদীর মাছের প্রতি মানুষের চাহিদা ও আগ্রহ বেশি। নদীর প্রবহমান পানিতে খাঁচায় মাছ চাষ কিন্তু পুকুরে চাষের মতো নয়। নদীর পানিতে মাছ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। তাই স্বাদও ভালো, চাহিদাও বেশি।

জিআই পাইপ, প্লাস্টিকের ড্রাম, নেট দিয়ে তৈরি করা হয় মাছ চাষের একেকটি খাঁচা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র নদ র প

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে নবীনবরণ, র‍্যাগিং ইস্যুতে কঠোর প্রশাসন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রথমদিনেই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার।

তবে ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ৪৩ আসন ফাঁকা রয়েছে বলে জানা গেছে। 

সোমবার (১১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগ নিজস্ব আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। 

আরো পড়ুন:

গকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ-আহত শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আটটি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগে মোট আসনসংখ্যা ২ হাজার ৪৪৭টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৪০৪ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ৪৩টি আসন ফাঁকা আছে। এর মধ্যে সাতটি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে আসন ফাঁকা থাকলেও ধর্মতত্ত্ব অনুষদে কোনো আসন ফাঁকা নেই। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার উপ রেজিস্ট্রার শহীদুল ইসলাম বলেন, “ফাঁকা আসনের বিষয়ে গতকাল (রবিবার) জিএসটি কমিটির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি মিটিং হয়েছে। এছাড়া আজ (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়কে র‍্যাগিংমুক্ত রাখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে মাইকিং করে র‍্যাগিংবিরোধী প্রচার প্রচারণা চালান হয়েছে। নবীনদের র‍্যাগিংয়ে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমরা র‍্যাগিং নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। তিনদিন ধরে আমরা র‍্যাগিং সচেতনায় মাইকিং করছি। এছাড়া বিভাগগুলোতে কাউন্সিলর নিয়োগ, সচেতনতামূলক আলোচনা সভা এবং পোস্টার লাগানো হবে। কোনো র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ