জয়পুরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে ডেকে নিয়ে হত্যা
Published: 26th, June 2025 GMT
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রেজাউল করিম কিনাকে (৪০) পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রেজাউল করিম কিনাকে পিটিয়ে আহত করে তারা। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
রেজাউল করিম দানেজপুর মহল্লার আব্দুল বারিকের ছেলে। তিনি পাঁচবিবি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও সাংগঠনিক সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রেজাউল নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে অনেকের সঙ্গে শত্রুতায় জড়িয়ে পড়েন।
পাঁচবিবি উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এস এম নাহিদ হাসান বলেন, যেটুকু জানতে পেরেছি, বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনে রেজাউল করিম স্থানীয় রহিম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন পিছন থেকে এসে বীরনগর এলাকার আরিফ নামের এক ছেলে কাঠ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে রেজাউল করিম গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
নাহিদ হাসান আরও বলেন, ‘স্থানীয় এক ছেলে বীরনগর এলাকার আরিফের বোনকে বিরক্ত করত। বিষয়টি তাঁর বোন আরিফকে জানালে তিনি তা রেজাউল করিমকে জানান। রেজাউল করিম ওই ছেলেকে ডেকে এনে মারধর করেছিলেন। ওই ঘটনার জেরেই আরিফ হয়তো রেজাউল করিমের ওপর হামলা করেছে।
রেজাউলের বাবা আব্দুল বারিক বলেন, বুধবার আমার ছেলেকে ফোন করে বাড়ি থেকে কেউ একজন ডেকে নিয়ে যায়। এর পর আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম বলেন, রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ড কোনো দলীয় বিষয় নয়। আমি শুনেছি, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে।
পাঁচবিবি থানার ওসি মইনুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দোষীদের আটকের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন ইতি, বরমচাল চা-বাগানে তিনিই প্রথম
চা-শ্রমিক পরিবারের মেয়ে ইতি গৌড় (১৯) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তিনি ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর আগে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগেও সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা ইতির।
ইতিদের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা-বাগানের ডিপো লাইনে। ওই বাগান থেকে এর আগে কেউ কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি। তিন বোনের মধ্যে ইতি সবচেয়ে ছোট।
গত মঙ্গলবার বিকেলে ইতিদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বাগানের রাস্তার পাশে ছোট একটি টিলার ওপর তাঁদের ঘর। সেখানে ইতি, তাঁর বাবা শংকর গৌড় ও মাসি ষষ্ঠী গৌড় থাকেন।
ইতির মা সুমিত্রা গৌড় ছিলেন চা-শ্রমিক। প্রায় দুই বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। বাবা শংকর গৌড় বাপেক্সের স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়তে হয় তাঁকে। বর্তমানে তিনিও অসুস্থ।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন বরমচাল মিশন স্কুল থেকে। এরপর ভর্তি হন বরমচাল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে। ২০২২ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৬৭ এবং ২০২৪ সালে ইউছুফ-গণি কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এইচএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পান।
ইতি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন আগে থেকেই ছিল। এইচএসসির পর প্রস্তুতি শুরু করি। ঢাকা, শাহজালাল, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিই। জগন্নাথে ভালো হয়নি, জাহাঙ্গীরনগরে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকায় হতাশ হয়ে পড়ি। পরে শাহজালালে বিবিএতে চান্স পাই। দেরি না করে ভর্তি হয়ে যাই। এর কয়েক দিন পর ঢাবির ফল আসে, ফিন্যান্স বিভাগে টিকি। তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। পরিচিতজনেরা ঢাবিতে ভর্তি হতে বলেন, তাই শাহজালাল থেকে ভর্তি বাতিল করে ঢাবিতে যাচ্ছি।’
ইতি গৌড়