সময় শেষে উত্তরপত্র জমা চাওয়ায় ‘শিক্ষককে মারধর’ ছাত্রদল নেতার
Published: 26th, June 2025 GMT
এইচএসসি পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ের পর উত্তরপত্র জমা চাওয়ায় পরীক্ষাকক্ষে কর্তব্যরত শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ শাকিলের বিরুদ্ধে।
আজ বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ফিরোজ আহমেদকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছেন কেন্দ্রসচিব। অন্যদিকে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ছাত্রদল থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্র জানায়, নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ২০৩ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থী ছিলেন মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ। বাংলা প্রথমপত্রের বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষার নির্ধারিত ৩০ মিনিট সময় শেষে অন্য পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র জমা দিলেও ফিরোজ আহম্মেদ অতিরিক্ত সময় দাবি করেন। এ সময় কক্ষ পরিদর্শক একই কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ফেরদৌস আলী অতিরিক্ত সময় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উত্তরপত্র নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফিরোজ আহমেদ নিজেকে ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে কক্ষ পরিদর্শককে হুমকি দেন। পরে উত্তরপত্র জমা না দিয়েই পরীক্ষা কক্ষ ত্যাগ করার চেষ্টা করলে কক্ষ পরিদর্শক ও কেন্দ্রসচিব তাঁকে বাধা দেন। এ সময় ছাত্রদলের ওই নেতা কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে ফিরোজ আহমেদ নির্দিষ্ট সময়ের চার মিনিট পরও খাতা দিচ্ছিল না। একপর্যায়ে আরও সময় দাবি করে। এ নিয়ে কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলীর সঙ্গে সে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ায়। হট্টগোল শুরু হলে আমি দ্রুত সেখানে যাই। পুলিশও সেখানে আসে। পুলিশের সামনেই ওই শিক্ষককে কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে হামলা করে হত্যার হুমকি দেয় ওই শিক্ষার্থী।’
আমজাদ হোসেন বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ওই ছাত্রকে বহিস্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও ফিরোজ আহমেদ শাকিলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাবিবুর রশিদ (সন্ধান) প্রথম আলোকে বলেন, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নন্দীগ্রাম উপজেলা শাখার অধীন মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদকে সাংগঠনিক সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র জ আহম দ নন দ গ র ম পর ক ষ ক ক র কর
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসির প্রবেশপত্রে থাকা ১৮ নিয়ম জানতে হবে
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুন। এরই মধ্যে তোমরা সবাই কলেজ থেকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহ করেছ। পরীক্ষা চলাকালীন অবশ্য মূল প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড দুইই পরীক্ষা কক্ষে সঙ্গে নিয়ে যাবে। আর বাসায় প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ফটোকপি করে তা সংরক্ষণ করবে। তোমার প্রবেশপত্রের পেছনে লেখা অবশ্যই পালনীয় ১৮টি নিয়মাবলি পড়বে। তা থেকে তোমরা অনেক দরকারি তথ্য জানতে পারবে।
*পরীক্ষার্থীর অবশ্যই পালনীয় ১৮টি নিয়মাবলি১. পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পূর্ব ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ‘নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে’ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২. পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ‘এক ঘণ্টা আগে’ এবং পরবর্তী দিনগুলোতে ‘আধা ঘণ্টা আগে’ পরীক্ষা হলের দরজা খোলা হবে। পরীক্ষার্থীকে এই সময়ের মধ্যে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করতে হবে।
৩. পরীক্ষার সময় শেষ হলে কক্ষ পর্যবেক্ষকেরা (ইনভিজিলেটর) উত্তরপত্র সংগ্রহ করার আগে কোনো পরীক্ষার্থী তার ‘আসন ছাড়তে’ পারবে না। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ‘দুই ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার আগে’ কোনো পরীক্ষার্থীকেই উত্তরপত্র দাখিল করতে দেওয়া হবে না।
৪. কোনো পরীক্ষার্থীকে কেবল ‘প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড’ ছাড়া অন্য কোনো নোট, কাগজ, বইপত্র ও মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ডিভাইস সঙ্গে নিতে দেওয়া হবে না।
৫. পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের কলম, কালি, বল পয়েন্ট কলম ও পেনসিল সঙ্গে নেবেন এবং সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা নিজেরাই করবে।
৬. পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থানে নিজ বোর্ডের নাম, পরীক্ষার নাম, রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোডের ঘর যথাযথভাবে ‘কালো কালির বল পয়েন্ট কলম’ দ্বারা পূরণ বা ভরাট করবে।
৭. পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের ‘নির্ধারিত স্থান’ হতে উত্তর লেখা শুরু করবে। উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠা ব্যতীত অন্য সব পাতার উভয় পৃষ্ঠাতেই উত্তর লিখতে হবে। পরীক্ষার্থীর লিখিত উত্তরপত্রের সর্বশেষ উত্তরের নিচে ‘END’ অথবা ‘সমাপ্ত’ কথাটি অবশ্যই লিখতে হবে।
৮. উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য কোনোখানে ‘কিছু লেখা বা দাগ’ দেওয়া যাবে না অর্থাৎ নিষিদ্ধ ।
৯. উত্তরপত্রটিকে কোনো অবস্থাতেই ভাঁজ করা যাবে না। মার্জিনের জন্য ‘স্কেল ও পেনসিল বা কলম’ ব্যবহার করতে হবে।
১০. উত্তরপত্রে আপত্তিকর লেখা বা অসৌজন্যমূলক মন্তব্য বা অনুরোধ, উত্তরপত্র জমা না দিয়ে হল ত্যাগ করা, পরীক্ষা পরিচালনায় নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন বা সুষ্ঠু পরীক্ষা পরিচালনায় কোনোরূপ বাধার সৃষ্টি করা হলে পরীক্ষা বাতিলসহ আইনানুগ ‘কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ গ্রহণ করা হবে।
১১. উত্তরপত্রের ভেতরে কোনো জায়গায় পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, মোবাইল বা টেলিফোন নম্বর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, কেন্দ্রের নাম কোনো অবস্থাতেই লেখা যাবে না। এ ধরনের কিছু লিখলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর ‘পরীক্ষা বাতিল’ বলে গণ্য হবে।
১২. বোর্ডের সরবরাহ করা উত্তরপত্রের Top Cover (OMR) মুদ্রণে কোনো ধরনের ত্রুটি বা ক্রমিক নম্বর মুদ্রিত না থাকলে বা উত্তরপত্র ছেঁড়া কাটা থাকলে বা সেলাই সঠিকভাবে না থাকলে উত্তরপত্রটি পরিবর্তন করে নিতে হবে। ‘লিথোকোড’ নির্দিষ্ট স্থানে মুদ্রিত না থাকলেও উত্তরপত্রটি পরিবর্তন করে নিতে হবে।
১৩. কোন উত্তরপত্রের TOP Cover-এ একাধিক OMR ফরম যুক্ত থাকলে উত্তর পত্রটি পরিবর্তন করে নিতে হবে।
১৪. নিয়মাবলির ১২ ও ১৩ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত ত্রুটি বা সমস্যা থাকলে উত্তর লেখা শুরু করার আগে ‘উত্তরপত্রটি পরিবর্তন’ করে নিতে হবে।
১৫. কোনো পরীক্ষার্থী টপ কভারের প্রথম অংশ ছিঁড়তে পারবে না এবং কক্ষ পর্যবেক্ষক (ইনভিজিলেটর) পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে টপ কভারের প্রথম অংশ ছিঁড়তে পারবেন না।
১৬. উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় অর্থাৎ ওএমআর শিটের নির্দিষ্ট বক্সের লিথোকোড ও দাগের মধ্যে কোনো ‘কিছু লেখা বা দাগ’ দেওয়া যাবে না।
১৭. উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় প্রথম অংশের বৃত্তাকার ঘরগুলো এমনভাবে ভরাট করতে হবে যাতে এগুলোর ভেতরের লেখাটি দেখা না যায়।
১৮. অতিরিক্ত উত্তরপত্র প্রয়োজন হলে কক্ষ পর্যবেক্ষকের (ইনভিজিলেটর) স্বাক্ষর করা অতিরিক্ত উত্তরপত্র নিতে হবে এবং পরীক্ষা শেষে Top Cover OMR ফরমের নির্ধারিত স্থানে অতিরিক্ত উত্তরপত্রের সংখ্যা লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। পরীক্ষা শেষে অবশ্যই অতিরিক্ত উত্তরপত্র মূল উত্তরপত্রের সঙ্গে সুঁই সুতা দিয়ে সেলাই করে দিতে হবে। তবে উত্তরপত্রের বাম পাশের ওপরের কর্নারে এমনভাবে সেলাই করতে হবে যেন পারফোরেশন-এর বাইরে থাকে।
লেখা: মির্জা মাহমুদা, অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা