উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) প্রথম দিন গত বৃহস্পতিবার নেতাকর্মীকে নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করা ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সিদ্ধান্তক্রমে দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তিনি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলেন।

এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে সেনবাগ উপজেলা প্রশাসন পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এতে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সানাউল্লাহ দলবল নিয়ে উপজেলার সুলতান মাহমুদ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। কেন্দ্রে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে তারা পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। এভাবে বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাটি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নজরে এলে সানাউল্লাহকে বহিষ্কার করা হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক প্রভাষক বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষা শুরুর আগে তারা নেতাকর্মীকে নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এতে  পরীক্ষার্থীরা বিব্রত অবস্থায় পড়েন। 

বহিষ্কার ছাত্রদল নেতা সানাউল্লাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। তখনও শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়নি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি বহিষ্কারের আদেশ মেনে নিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ন উল ল হ পর ক ষ র ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী

স্কুলের ল্যাব সহকারীর ‌‘প্রতারণার’ কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার। বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। 

এ তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মো; রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণ হয়নি। আসেনি প্রবেশপত্র। 

প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি। রাজু আহমেদ পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের শাস্তির দাবি জানান। 

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাঁকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন। 

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রদল নেতার কুশল বিনিময় ও সেলফি, দল থেকে অব্যাহতি
  • এইচএসসি পরীক্ষা: বাংলা দ্বিতীয় পত্রের সময় পরিকল্পনা করে নাও
  • সেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন
  • সেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন: প্রেস উইং
  • প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেননি ১৭ শিক্ষার্থী
  • নাটোরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রদল নেতা, সচিবকে শোকজ
  • প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • জাল প্রবেশপত্র: সিলেটে ছাত্রীর ১ বছর কারাদণ্ড
  • এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী