বগুড়ায় শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে এবার নানা সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে ছিল না উৎসবের আমেজ। গত বছরের রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছয়জনের মৃত্যুতে শোকের রেশ ছিল পুরো রথযাত্রাজুড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে শহরের সেউজগাড়ি এলাকার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ বা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) মন্দির এবং আনন্দ আশ্রম থেকে রথযাত্রা বের হয়। এবারের রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত করে সেউজগাড়ি আমতলা মোড়, স্টেশন সড়ক, সাতমাথা, কালীতলা হয়ে পুনরায় শেরপুর সড়ক হয়ে ঠনঠনিয়া থেকে ফিরে সেউজগাড়ি ইসকন মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। অন্যবার রথযাত্রা বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহরের পুলিশ লাইনস সংলগ্ন শিবমন্দিরে গিয়ে শেষ হতো।

গত বছরের ৭ জুলাই জগন্নাথের রথযাত্রা উৎসবে বগুড়া শহরের আমতলা মোড়ে রথের চূড়ার সঙ্গে বিদ্যুতের তারের স্পর্শে ছয়জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন প্রায় অর্ধশত সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে আয়োজকদের ‘দায়িত্বহীনতা’ ও ‘সতর্কতার অভাবকে’ দায়ী করে।

আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনা এড়াতে এবার রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়। সড়কের বিদ্যুতের তারের সঙ্গে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রথের চূড়াও ছিল অন্যবারের তুলনায় আকারে ছোট। অন্যবার রথযাত্রা ঘিরে ১০০ স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকলেও এবার এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০০।

আরও পড়ুনবগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫ জনের মৃত্যু, আহত অর্ধশত০৭ জুলাই ২০২৪

এবারের উৎসবে ছিল না উদ্বোধনী পর্বও। অন্যবার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা রথযাত্রায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকলেও এবারের উৎসব ছিল ‘অতিথিবিহীন’। বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের জেলা কমিটির সহসভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র পরিমল চন্দ্র দাস এবং পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ বগুড়া শহর কমিটির সভাপতি পরিমল প্রসাদসহ ধর্মীয় নেতারা রথযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ বগুড়া শহর কমিটির সভাপতি পরিমল প্রসাদ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের রথযাত্রায় ছয়জন ভক্তের মৃত্যুর রেশ ছিল এবারের উৎসবজুড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে রথের চূড়া নিচে নামিয়ে আনার পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্কতা ছিল, স্বেচ্ছাসেবকও ছিল চার শতাধিক। রথযাত্রার গন্তব্য কলোনি এলাকার শিবমন্দিরের বদলে এবার শহর প্রদক্ষিণ শেষে ইসকন মন্দিরে ফিরেই শেষ হয়।

আরও পড়ুন‘হঠাৎ শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে, চিৎকার-কান্না শুনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি’০৮ জুলাই ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র রথয ত র রথয ত র য় গত বছর র দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্‌যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।

নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।

আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।

লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।

সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।

শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানা গেল রাজামৌলির ছবির নাম, থাকছেন মহেশ বাবু-প্রিয়াঙ্কা
  • দেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদারের জয়ের গল্প আসছে
  • নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদি নববর্ষ’ উদ্‌যাপন
  • মুগ্ধ করল নবান্ন উৎসবে ধান কাটার প্রতিযোগিতা
  • রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
  • নবান্নের পিঠায় সুবাসিত রাবি
  • ঘূর্ণির জাদুতে বিশ্বজয় 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারুণ্যের উৎসব রোববার
  • পয়লা অগ্রহায়ণে ‘নববর্ষ’ উদ্‌যাপন করবে ডাকসু
  • দিনভর আনন্দ আয়োজনে সাফল্য উদ্‌যাপন