শেষ টেস্টটা খেলেছিলেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ইংল্যান্ড খেলেছে ৫২ টেস্ট। কোনোটিতেই তিনি ছিলেন না। সম্প্রতি একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন বটে, তবে তাতে বল করেছেন মোটে ১৮ ওভার। লম্বা দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট থেকে অনেকটা সময় দূরে থাকা জফরা আর্চারকেই ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় টেস্টের দলে ডাকা হয়েছে। শুধু স্কোয়াডেই নয়, তাঁর একাদশে থাকার সম্ভাবনাও প্রবল।

হেডিংলিতে ৫ উইকেটের জয়ের পর ২ জুলাই শুরু হতে যাওয়া এজবাস্টন টেস্টের দলে এই একটিই পরিবর্তন এনেছে ইংল্যান্ড। অনেকের কৌতূহল, আচমকা আর্চার কেন ইংল্যান্ড দলে।

২০১৯ সালে টেস্টে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ টেস্ট খেলেছেন আর্চার। লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে কনুই ও পিঠের চোটে। এ সময়ে তাঁর কয়েকটি অস্ত্রোপচারও হয়। লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকার পর গত বছরের মে মাসে ইংল্যান্ডের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে ফেরেন আর্চার। ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলেছেনও। ইসিবির পরিকল্পনা ছিল, ধীরে ধীরে তাঁকে লম্বা দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে ফেরানো। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর টেস্টে ফেরার কথা থাকলেও মে মাসে আইপিএলে গিয়ে চোটে পড়লে তা পিছিয়ে যায়। যে কারণে মিস করেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাদা বলের সিরিজ।

গত সপ্তাহে আর্চার নিজেই জানান, দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের জন্য তৈরি আছেন তিনি। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সাসেক্সের হয়ে একটি ম্যাচে খেলতে নেমে ১৮ ওভারে ৮ মেডেনসহ ৩২ রান দিয়ে একটি উইকেটও নেন।

আরও পড়ুনওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের অভিযোগ ১১ নারীর২ ঘণ্টা আগে

এবার ইংল্যান্ড দলে ডাকার পর তাঁকে ফেরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে বলেছেন ইংল্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি, ‘সে অবিশ্বাস্য এক প্রতিভা। তার পথটা অনেক লম্বা ছিল। দুই বছর ধরে (আমরা) এই ফেরার চিত্রটা এঁকেছি—টি–টোয়েন্টির ৪ ওভারের স্পেল হয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেট, তার দৃঢ়তা তৈরি করা থেকে এই সময় পর্যন্ত। মাঝের সময়টায় না খেললেও সে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে অনেক কিছু করেছে।’

হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের পেস বোলিং সামলেছেন ক্রিস ওকস, ব্রাইডন কার্স ও জশ টাং। তাঁদের সঙ্গে এবার যোগ দিচ্ছেন আর্চার। চোটে থাকা মার্ক উডের বিকল্প হিসেবে ভাবনায় যেমন আছেন, তেমনি কাউন্টির ওই ম্যাচটিতে তাঁর বোলিং দেখে মুগ্ধ রব কি।

আইপিএল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়ায় পিছিয়ে যায় আর্চারের টেস্টে ফেরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর চ র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ