ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০ সরবরাহ, সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানে উন্নয়ন এবং জরুরি সামরিক হার্ডওয়্যার সরবরাহ নিয়ে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার চীনের কিংডাও শহরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসোভ সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে তাঁরা তা নিয়ে আলোচনা করেন।

গতকাল শুক্রবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই দেশের নেতাদের সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পটভূমিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যখন আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, আধুনিক প্রযুক্তি এবং যুদ্ধবিমান আধুনিকীকরণের মতো জরুরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা সরবরাহ, সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানের আধুনিকীকরণ এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম দ্রুত সময়ে কেনার বিষয়টি ছিল এই বৈঠকের প্রধান সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম।

গত ৭ মে পাকিস্তানে পরিচালিত ভারতের অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। নয়াদিল্লির দাবি, তাদের নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ বেসামরিক নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে এ অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের সময় পাকিস্তানের পাল্টা হামলা থেকে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি রক্ষায় এস-৪০০ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২০১৮ সালে ৫৪৩ কোটি ডলারে রাশিয়ার থেকে পাঁচটি এস-৪০০ কেনার চুক্তি করে ভারত। এর মধ্যে তিনটি ভারতের হাতে পৌঁছেছে। বাকি দুটি আসবে ২০২৬ সালে। বর্তমানে ভারতের অস্ত্রভান্ডারের প্রায় ৬০ শতাংশই রাশিয়ার তৈরি।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর ২৫৯টি সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানের মধ্যে ৮৪টি বিমানের উন্নয়নেও রাশিয়া সহযোগিতা করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেলোসোভ বলেন, সামরিক-প্রযুক্তি খাতে রাশিয়া ও ভারতের দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব আরও গভীর হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সরবর হ মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা দখল করে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়তে চান নেতানিয়াহু

নিজের জনগণকে ৬৭০ দিনের বেশি সময় ধরে ধ্বংস হতে দেখার বেদনা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এত কষ্ট, এত অপরাধের সাক্ষী হওয়ার পরও গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরেক দফা ইসরায়েলি হামলার কথা ভাবা পর্যন্ত কল্পনার বাইরে। অথচ বিশ্বের চোখের সামনেই এটি হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ব কি শুধু দাঁড়িয়ে দেখে যাবে?

ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজায় এই নতুন হামলার ঘোষণা দিয়েছে। গাজা উপত্যকাকে ‘সম্পূর্ণ দখল’ করার জন্যই তারা সেখানকার জনবসতিগুলোয় হামলা চালানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এ হামলা শুরু হবে গাজা সিটি থেকেই। এর ফলাফল অনুমান করা কঠিন নয়।

২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক সতর্কবার্তা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) নির্দেশ অমান্য করে ইসরায়েল রাফা এলাকায় হামলা চালায়। আজ রাফার কোনো অস্তিত্ব নেই। এরপর ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তারা উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া, বেইত হনুন ও জাবালিয়া শহরে হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে দেয়। 

আরও পড়ুনমুখ ফিরিয়েছে বিশ্ব, গাজা কি নিভে আসছে ০৯ জুন ২০২৫

সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালন এ অভিযানকে বলেছেন ‘জাতিগত নিধন’। এরপর ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফেলে, ২০ লাখ বেঁচে থাকা মানুষকে অনাহারে রাখে এবং দক্ষিণের খান ইউনিস শহর ধ্বংস করে দেয়। এসব কাজ ২০২৪ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও মে মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দেওয়া তিনটি গণহত্যাবিরোধী রায়ের সরাসরি লঙ্ঘন।

জানুয়ারিতে আদালত গাজায় গণহত্যার ঝুঁকি আছে বলে জানান এবং তা ঠেকাতে কিছু ব্যবস্থা নিতে বলেন। এর মধ্যে ছিল গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু দেখা গেল, ইসরায়েল এই নির্দেশ মানছে না। গাজা সিটিতে হামলা হলে তা এই গণহত্যা অভিযানের শেষ ধাপ হবে।

যুক্তরাজ্যের মতো পশ্চিমা দেশগুলো গত দুই বছরে ইসরায়েলের গণ–অত্যাচারের সহযোগিতার দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবে না। ইসরায়েলকে জবাবদিহি থেকে মুক্তি দিয়ে এবং এই দুষ্ট রাষ্ট্রকে অস্ত্র সরবরাহ করে পশ্চিমারা এই অপরাধগুলোকে সম্ভব করেছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার যে ঘোষণাগুলো এসেছে, তা কেবল প্রচারমূলক চাল ও মনোযোগ সরানোর কৌশল।

৭ অক্টোবরের পরপরই ইসরায়েলের নেতা, রাজনীতিক, সামরিক কমান্ডার ও সেনারা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তাঁরা গাজাকে ধ্বংস করে দেবেন, পুড়িয়ে দেবেন এবং সমতল করে দেবেন। তাঁরা ঠিক সেটাই করেছেন। তাঁরা গাজার ৯০ শতাংশ এলাকা কার্যত ধ্বংস করে এটিকে জনমানবহীন মরুভূমিতে পরিণত করেছেন। বাকি জনসংখ্যাকে ঠাসা অবস্থায় মাত্র ১২ শতাংশ এলাকায় গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। সেখানে মানুষের বেঁচে থাকার মতো কোনো পরিবেশ নেই। অবরোধ আর বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় কোনো নিরাপদ জায়গা রাখেনি। বাইরে যাওয়ারও কোনো পথ রাখেনি।

এখন গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ বা আল-মাওয়াসির বাকি জনবসতিতে হামলার মানে হবে নতুন গণহত্যা, আরও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং অবশিষ্ট অনাহারগ্রস্ত মানুষকে সরাসরি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। এর মানে ইসরায়েল আসলে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়ার মেসিয়ানি কল্পনা ও অপরাধমূলক প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে—ইসরায়েলের লক্ষ্য ‘সর্বোচ্চ পরিমাণ জমি, সর্বনিম্নসংখ্যক আরব’।

গাজায় দাতব্য রান্নাঘরের সরবরাহ করা খাবার সংগ্রহ করতে ফিলিস্তিনিদের ভিড়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজা দখল করে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়তে চান নেতানিয়াহু
  • দাম বাড়ছে পেঁয়াজের, কী বলছেন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা
  • শোধনাগার ছাড়াই বড় প্রকল্প
  • চীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার গুণ সয়াবিন কেনার আহ্বান ট্রাম্পের
  • পাবনায় গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে ভেজাল দুধ পাওয়ার ঘটনা পরিকল্পিত: প্রাণ– আরএফএল
  • হঠাৎ কেন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম
  • নিলামে ৮৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • একই পে স্কেলের দাবিতে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজারের শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ
  • বিশ্ববাজারে চালের দাম আট বছরে সর্বনিম্ন, দেশের বাজারে বাড়তি