মানবাধিকার শিক্ষার প্রসার ও এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘হিউম্যান রাইটস অলিম্পিয়াড-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে একযোগে অলিম্পিয়াডের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মানবাধিকার শিক্ষার প্রসার ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করে।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই অলিম্পিয়াড শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং এটি মানবাধিকারবিষয়ক জ্ঞানের বিকাশ ও চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে অলিম্পিয়াডের লিখিত পরীক্ষা পরিদর্শন করেন গুম তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামসহ বিশিষ্টজনেরা।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো এবার মানবাধিকার অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে তরুণেরা মানবাধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন হবেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে তাঁরা অধিকারবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করবেন।’

নূর খান লিটন আরও বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশেই মানবাধিকার পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। তবে কিছু দেশে এই পরিস্থিতি প্রায়ই উদ্বেগজনক ও সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকে। বাংলাদেশ সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম। এ দেশের মানুষ হিসেবে তাই আমাদের কিছু বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। যেখানেই মানুষ নিপীড়িত হবে, সেখানেই তাদের জন্য কিছু করা আমাদের দায়িত্ব।’

মানবাধিকারকর্মী ও হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল বলেন, ‘এ অলিম্পিয়াড আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে মানবাধিকার সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি সৃষ্টি করা, অংশগ্রহণমূলক শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে তরুণদের মানবাধিকার চর্চায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে; যাতে ভবিষ্যতে মানবাধিকার রক্ষায় সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অল ম প য় ড অন ষ ঠ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মরুর খেজুর চাষে সফলতা, বছরে আয় ৩০ লাখ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সৌদি আরবের খেজুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন। তার বাগানে ছয় প্রজাতির খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। বর্তমানে খেজুর ও চারা বিক্রিকরে বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন প্রাক্তন এই প্রবাসী। 

ফুলবাড়ীর স্বজনপুকুর এলাকায় তিন বিঘা জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জাকির হোসেনের খেজুর বাগান। তার বাগানে বর্তমান প্রায় ৮০টি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি গাছে পর্যাপ্ত ফল ধরেছে। মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজুল, বাহির ও আম্বার জাতের গাছ আছে। প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত ফল এসেছে। এসব খেজুর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পাক ধরবে। সুস্বাদু এই খেজুর প্রতিকেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। 

বাগানের পাশে আরও এক একর জমিতে জাকির হোসেন তৈরি করেছেন খেজুর গাছের নার্সারি। নার্সারিতে তৈরি করেছেন প্রায় ১২ হাজার চারা। এখান থেকে সাধারণ চারা বিক্রি করছেন তিনি ১০০০ টাকা করে এবং কলমি চারা বিক্রি করছেন প্রতিটি ১৫ হাজার টাকা করে।

খেজুর চারার নার্সারি

১৯৯৯ সালে কাজের উদ্দেশ্যে কুয়েতে যান জাকির হোসেন। প্রায় ২০ বছর থাকেন তিনি প্রবাসে। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুরের বাগান দেখে উৎসাহিত হন তিনি। ২০১৭ সালে তিনি ১২ কেজি পাকা খেজুর দেশে আনেন। সেই খেজুর থেকে চারা তৈরিতে সফল হন জাকির। প্রথমে ১৯টি চারা তৈরি করে তার পরিচর্যা করেন। চার বছর ধরে গাছগুলোর যত্ন নেওয়ার পর ২০২২ সালে তিনটি গাছে প্রথমবারের মতো ফল আসে। পরের বছর আরও নয়টি গাছে ফল আসে। 

প্রথম তিনটি গাছে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে খেজুর ধরেছিল। পরে নয়টি গাছে গড়ে ৮০-৯০ কেজি করে খেজুর ধরে। বর্তমান প্রতিটি গাছে ১৫০ থেকে ২০০ কেজি খেজুর ধরেছে। বর্তমানে বাগানটিতে তিন জন শ্রমিক কাজ করেন। 

এলাকাবাসী জিল্লুর রহমান বলেন, “আমাদের এলাকায় এই প্রথম সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। আমি জাকির ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েকটি চারা সংগ্রহ করেছি। গাছগুলো অনেকটা বড় হয়েছে। আশা করছি খেজুর চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারব।”

কাঁদি ভরা খেজুর

বাগানশ্রমিক রেজাউল করিম বলেন, “জাকির ভাইয়ের খেজুর বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি কাজ করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি খেজুর ধরেছে। খেজুর খুবই সুস্বাদু এবং মিষ্টি। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এই বাগান দেখতে। আমরা এই বাগানে তিন জন কাজ করি। এখান থেকে যা দিন হাজরা পাই তা দিয়ে সংসার ভালই চলে।”

খেজুর বাগানমালিক জাকির হোসেন বলেন, “আমি ১৯৯৯ সাল থেকে কুয়েতে ছিলাম। সেখানে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুর চাষ করতে দেখেছি। অনেক বাগান আছে। তখন চিন্তা করি, কেন আমার দেশে এই খেজুর হবে না? দেশে ফিরে প্রথমে পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে চারা তৈরি করে আবাদ শুরু করি। ভাল ফলনও হয়। বর্তমান তিন বিঘা জমিতে বাগান করেছি। আমি এখানে খেজুরের চারার নার্সারি তৈরি করছি। সাধারণ চারা এক হাজার টাকা এবং কলমি চারা ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। বর্তমান আমি বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার খেজুর ও চারা বিক্রি করছি।”

ফুলবাড়ী উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. শাহানুর রহমান বলেন, “ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো জাকির হোসেন নামে একজন কুয়েত ফিরত ব্যক্তি সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর চাষ করছেন। এটা এলাকাবাসীর জন্য গৌরবের। এই জেলা ধান ও লিচুর জন্য বিখ্যাত। আশা করছি, খেজুরের জন্যও বিখ্যাত হবে। আমরা নিয়মিত ওই খেজুরের বাগান পরিদর্শন করছি এবং মালিককে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।”

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিউম্যান রাইটস অলিম্পিয়াড ২০২৫: তিন বিভাগীয় শহরে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন
  • প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের সরাসরি ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ
  • হিউম্যান রাইটস অলিম্পিয়াড ২০২৫: তিন বিভাগীয় শহরে একযোগে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন
  • গর্জন নয়, রাশমিকা আসছেন ভয় দেখানোর জন্য
  • ২৫ জুন: আর্জেন্টিনা ও ভারতের প্রথমবার বিশ্ব জয়ের দিন
  • প্রথমবারের মতো নিজ দেশে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল জাপান
  • মরুর খেজুর চাষে সফলতা, বছরে আয় ৩০ লাখ