ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ ঠেকানোর ক্ষমতা কমল নিম্ন আদালতের
Published: 28th, June 2025 GMT
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে আদেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ স্থগিত করার ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের ক্ষমতা সীমিত করা এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে করা একটি জরুরি আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হলেও তা প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কিছু শিশুর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া সাংবিধানিকভাবে বৈধ কি না, সে বিষয়ে আদেশে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি সুপ্রিম কোর্ট। ফলে এ আদেশের মধ্য দিয়ে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন, তা কার্যকর হবে কি না, সেটি স্পষ্ট নয়। যদিও ট্রাম্প এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশকে ‘বড় জয়’ বলে দাবি করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সকালে দেওয়া এই আদেশে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের ৯ জন বিচারপতির মধ্যে ৬ জনই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দেন। রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের পক্ষে আদেশ লেখেন অ্যামি কোনি ব্যারেট। এতে ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করার নীতিকে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হতে দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি নীতিটির বৈধতা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।
আদালতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে উদারপন্থীদের বিরোধিতার মুখে পাস হওয়া এই আদেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ শুক্রবারের এই আদেশের পর ৩০ দিন পর্যন্ত কার্যকর করা যাবে না।
ট্রাম্প এই রায়কে তাঁর বিস্তৃত এজেন্ডার বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের কারণে আমরা এখন দ্রুত অনেক নীতিমালা কার্যকর করার জন্য আবেদন করতে পারব, যেগুলো দেশের সর্বত্র অবৈধভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’ ট্রাম্প আরও বলেন, এটা (এই নীতি বা নিয়ম) এমন ব্যক্তিদের জন্য নয়, যাঁরা দেশের নিয়মকানুন ফাঁকি দিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ক র যকর
এছাড়াও পড়ুন:
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, হাসিনার পরামর্শে দেশ চালাচ্ছেন ড. ইউনূস
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, “চলমান সংস্কার, খুনিদের বিচার ও দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ড. ইউনূস সরকার হাসিনার পরামর্শে দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে দেশ থেকে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদ বিলোপ হবে না।”
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন নামে একটি রেষ্টুরেন্টে ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং একটি সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয় শীর্ষক’ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মো. রাশেদ খান বলেন, “চুনোপুটিদের নয়, খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, কামাল ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। এ নিয়ে জাতি কোনো টালবাহানা সহ্য করতে পারে না। প্রয়োজন হলে আরো ১০টি ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। টাকা না থাকলে জনগণ টাকা দেবে।”
এনসিপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই দলটি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এটা আমার কথা নয়, টিআইবি প্রধান তাদের কিংস পার্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাছাড়া এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা পদ নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। তারপরও হাসনাত আব্দল্লারা ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করছেন। তাদেরও ভুল ভাঙ্গতে বসেছে।”
তিনি বলেন, “যারা হাসিনার মতো স্বৈরশাসককে পরাজিত করতে পেরেছে, তারা আজ নানা কলঙ্কের তিলক মাথায় নিচ্ছে। চাঁদাবাজীতে লিপ্ত হচ্ছেন। মানুষ ও সমাজের কাছে এইসব বীরেরা হেয় হচ্ছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ছাত্রদের কলঙ্কিত করলো কারা?”
রাশেদ খান বলেন, “প্রত্যেক উপদেষ্টা দুর্নীতি করছেন। তারা আখের গোছাতে ব্যস্ত। ডিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে সব কিছুতেই দুর্নীতির ছোঁয়া লেগে আছে। ১৬ বছর বিএনপি-জামায়াতের তকমা গায়ে লাগানো আমলারা এখনো নির্যাতিত ও পদ বঞ্চিত হচ্ছেন।”
জুলাই সনদ নিয়ে প্রশ্ন গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, “যে সরকার শহীদদের তালিকা তৈরি করতে পারে না, তাদের কাছ থেকে জাতি কি আশা করতে পারে। জাতিসংঘের তদন্তে নিহতের সংখ্যা ১৪০০, কিন্তু জুলাই সনদে সংখ্যা এক হাজার করা হলো। এটা কেন এবং কিভাবে হলো?”
গণঅভ্যুত্থানের শক্তিতে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে মো. রাশেদ খান বলেন, “মাঠে না থাকলে আওয়ামী লীগ মাঠ দখল করে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। ইতোমধ্যে তারা এমন ষড়যন্ত্র করে বসে আছে। তাই সবাইকে কোনো না কোনো কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে। ১৪ দল ও জাতীয় পার্টি নানা বাহানায় নির্বাচন করতে চাইবে। তাদেরকেও প্রতিহত করতে হবে। কারণ তারাও হাসিনার সঙ্গী।” ১৪, ১৯ ও ২৪ সালে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের বিচার দাবি করেন তিনি।
ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, যুব অধিকারের সভাপতি রাকিবুল হাসান রকিব, যুবনেতা মো. মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা আল মামুন, সাধারণ সম্পাদ মো. রায়হান হোসেন রিহান, মো. মাহাফুজ রহমান, মো. হালিম পারভেজ ও মো. নাহিদ হাসনান বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ