দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত পাবেন অর্থসহায়তা, আবেদন শেষ কাল
Published: 29th, June 2025 GMT
দুর্ঘটনায় আহত চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তা বা চিকিৎসা অনুদান দেয় সরকার। প্রতি দুই মাস পর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এ সহায়তা দেওয়া হয়। দুর্ঘটনায় আহত চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তার মে-জুন প্রান্তের আবেদন শুরু হয়েছে। এ অনুদান পেতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি উপজেলা মাধ্যমিক ও থানা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানানোর জন্য প্রকাশ করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা অনুদান দেবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট। আহত, অসচ্ছল ও চিকিৎসাধীন মেধাবী ষষ্ঠ থেকে স্নাতক ও সমমান শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ অনুদান পাবেন।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর-পিএইচডির সুযোগ১৭ মার্চ ২০২৫চিকিৎসা অনুদান প্রাপ্তির জন্য চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীকে ই-চিকিৎসা অনুদান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের- এ লিংকে প্রবেশ করে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী ওপরের লিংক ব্যবহার করে অনলাইনে তাঁর চিকিৎসা মেয়াদে একবার মাত্র চিকিৎসা অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ও হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সময় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অর্থবছর অথবা এক বছরের মধ্যে হতে হবে।
আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫
চিকিৎসা অনুদানের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা প্রমাণে জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছ থেকে গুরুতর আহতর সমর্থনে প্রত্যয়ন করা শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সনদ, চিকিৎসা গ্রহণ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় রিপোর্ট ও নির্ধারিত ফরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন অনলাইনে আপলোড করতে হবে।
ই-চিকিৎসা অনুদান ব্যবহার নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে ষষ্ঠ থেকে স্নাতক ও সমমান শ্রেণির দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে-জুন প্রান্তে আবেদন করতে পারছেন।
আবেদনের শেষ সময়—
৩০ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
আরও পড়ুনকম খরচ এবং সহজে ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় বেছে নিতে পারেন এই ৫ দেশ০৮ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাবিতে ৩২৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৪২তম বার্ষিক অধিবেশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেট এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট পাস করা হয়েছে।
মূল বাজেট ও সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ যথাক্রমে ৩২৩ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৩৩৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বছর শেষে ক্রমপুঞ্জিত ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা দাঁড়াবে জানা গেছে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলে নিয়মানুযায়ী কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব বাজেট উপস্থাপন করেন। সিনেটরদের আলোচনার পর তা পাস করা হয়।
আরো পড়ুন:
জাবিতে সিনেট অধিবেশন: জুলাইয়ের সহযোগী শিক্ষকদের ফুলেল শুভেচ্ছা
জাবিতে সিনেট অধিবেশন: তোপের মুখে ৩ আওয়ামীপন্থি শিক্ষকের সভা ত্যাগ
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট ও ২০২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেতন-ভাতা বাবদ সর্বোচ্চ ব্যয় রাখা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ১৮১ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৫৬.২৪ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরের মূল বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১৮৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ৬০ শতাংশ।
বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে সেবা খাতে, যার পরিমাণ ৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ খাতে মোট বাজেটের ২৩.৩১ শতাংশ খরচ হবে। চলতি অর্থবছরে মূল বরাদ্দে ছিল ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা শতকরা হিসাবে ২২.৬০ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে। এতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ, যা মোট বরাদ্দের ১১.৯৯ শতাংশ। চলতি বছর এ খাতে ৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল, যা শতকরা হিসাবে ১০.০২ শতাংশ।
গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ রয়েছে ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২.৮৫ শতাংশ। চলতি বছর এটি ছিল ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা, যা শতকরা হিসাবে ২.২৬ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সহায়তা খাতে এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ০.১৪ শতাংশ। এটি এ বছর ছিল ৪৫ লাখ টাকা, যা শতকরা হিসাবে ০.১৫ শতাংশ। যানবাহন ক্রয় বাবদ প্রস্তাবিত বাজেটে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে ০.৭১ শতাংশ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের আয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বা সরকারি মঞ্জুরি ২৭৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ফি বাবদ ৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ভর্তি ফর্ম বিক্রি থেকে আয় ২৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন চার্জ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে আয় ৩৩ লাখ টাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য উৎস থেকে আয় ১০ কোটি ১৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। ইউজিসির বরাদ্দ বাদে সব মিলিয়ে মোট নিজস্ব আয় ৪৪ কোটি টাকা।
বাজেট পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতের বরাদ্দ ৭ লাখ ২২ হাজার টাকা থেকে ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। বাজেটে যানবাহন ক্রয় খাত থেকে একটি মাইক্রোবাস ও একটি এ্যম্বুলেন্স, একটি এসি কোস্টার ও একটি বড় বাস ক্রয় করা হবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন বৈদ্যুতিক লাইনসমূহ পুনঃস্থাপনের জন্য বাজেটে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি আইডেন্টিটি (আরএফআইডি) স্থাপন বাবদ সংশোধিত বাজেটে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেট উপস্থাপনকালে কোষাধ্যক্ষ জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ ৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) আনুমানিক ঘাটতির পরিমাণ ২০ কোটি টাকা হওয়ায় বছর শেষে ক্রমপুঞ্জিত ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
বাজেট ঘাটতির কারণ হিসেবে তিনি জানান, সরকারী বিধি বহির্ভূতভাবে কিছু কিছু খাতে যেমন- জাবি স্কুল ও কলেজের ব্যয়, গবেষণা ভাতা, নৈশ ভাতা, গার্ড বোনাস, স্বাস্থ্য বীমা/গোষ্ঠী বীমা খাতের ভর্তুকী, ডাইনিং হল অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি খাতগুলো ব্যয় করাই বাজেট ঘাটতির প্রধান কারণ। এসব খাতগুলো চলতি অর্থবছর এবং আগামী অর্থবছরের জন্য ইউজিসি থেকে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ব্যতীত গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি, গাড়ি ভাড়া, রোড ট্যাক্স ইত্যাদি বাবদ প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়াও জাবি স্কুল ও কলেজের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া না গেলেও এই প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতি অর্থবছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই দুটি খাত আমাদের বাজেট ঘাটতি ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলেছে। এর বিপরীতে আমাদের অভ্যন্তরীণ আয়ের তেমন কোনো খাত নেই।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী