দুই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মাস্তুল’
Published: 29th, June 2025 GMT
দুই আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রন পেয়েছে নূরুজ্জামান পরিচালিত বাংলাদেশি সিনেমা ‘মাস্তুল’। ২১তম কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে সিনেমাটি। ৫ সেপ্টেম্বর বসছে এই আসর। উৎসব শেষ হবে ৯ সেপ্টেম্বর। এই উৎসবে বাংলাদেশি তরুণ নির্মাতা সৌমিকের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দ্য পেয়ার অব হোয়াইট পিজনস’, এবং তথ্যচিত্র ‘মাইটি আফরিন: ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস’ নির্বাচিত খবর জানা গেছে আগেই। এবার এলো একই উৎসবে ‘মাস্তুল’ নির্বাচিত হওয়ার খবর গেল সপ্তাহে নির্মাতাকে উৎসবে আমন্ত্রণ জানান আয়োজকরা।
আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নির্মাতা। জানালেন, রাশিয়ার মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মাস্তুল’ প্রদর্শীত হওয়ার পর বিভিন্ন উৎসব থেকেই সিনেমাটি দেখানোর আমন্ত্রণ পাচ্ছি। গেল মাসেই রাশিয়ার চেবক্সারি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রশংসিত হয় সিনেমাটি। এবার কাজান থেকে এলো আমন্ত্রণ, নিঃসন্দেহে এটা পুরো ‘মাস্তুল’ টিমের জন্যই বিশেষ অনুপ্রেরণার। তবে কাজানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নয়, বিশেষ বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ‘মাস্তুল’। কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২১তম উৎসবে ‘রাশিয়া-ইসলামিক ওয়ার্ল্ড’ বিশেষ প্রোগ্রামে প্রতিযোগিতার বাইরে থেকে ১০টি চলচ্চিত্র নির্বাচন করেছে। যেখানে মানবতাবাদ ও সহমর্মিতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সহিংসতা ও নিষ্ঠুরতা এড়িয়ে বাছাই করা এই চলচ্চিত্রগুলো এসেছে ঐ সব দেশ থেকে, যারা স্ট্র্যাটেজিক ভিশন গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশ ছাড়াও এবারের নির্বাচিত দেশগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়া, কাজাখস্তান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, সৌদি আরব, কিরগিজস্তান এবং উজবেকিস্তান ,তুর্কমেনিস্তানের যৌথ প্রযোজনার ছবি। উৎসব কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের আসন্ন কাজান চলচ্চিত্র উৎসবে ৬৭টি দেশ থেকে জমা পড়েছে ৮৪৫টি চলচ্চিত্র। রাশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আয়োজিত এই উৎসবটি তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট রুস্তাম মিনিখানভের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং রাশিয়া-ইসলামিক ওয়ার্ল্ড স্টেটেজিক ভিশন গ্রুপ-এর অংশীদারিত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
স্ট্র্যাটেজিক ভিশন গ্রুপের ডেপুটি কোঅর্ডিনেটর এলমিরা সাদিকোভার ভাষ্য অনুযায়ী, এবারের ‘রাশিয়া ইসলামিক বিশ্ব’ বিভাগটি শুধুমাত্র বিস্তৃত ভৌগোলিক অংশগ্রহণেই নয়, বরং ইসলামি বিশ্বের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও রীতিনীতির সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি দুর্লভ সুযোগ হবে। জলে ভাসমান জাহাজীদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘মাস্তুল’। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, দীপক সুমন, আমিনুর রহমান মুকুল, আরিফ হাসান, সিকদার মুকিত, সিফাত বন্যা প্রমুখ। ছবিটির ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন ও প্রমোশনে আছে টঙঘর টকিজ।
শুধু কাজান নয়, আসছে সেপ্টেম্বরে স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য ইমাজিনইন্ডিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর ২৪তম আসর ‘সেরা মানবিক ছবি’র জন্য মনোনয়ন পেয়েছে ‘মাস্তুল’। এই উৎসবে যোগ দিতে আমন্ত্রণও পেয়েছেন নির্মাতা। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বলেও জানান। দেশে মুক্তির বিষয়ে নির্মাতা জানান, স্পেনের ইমাজিনইন্ডিয়া উৎসবে যোগ দেয়ার আগেই দেশের দর্শকদের ‘মাস্তুল’ দেখাতে চাই। সেভাবেই পরিকল্পনা চলছে বলে জানালেন নির্মাতা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র উৎসব স প ট ম বর ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উৎসব শুরু, বসেছে মেলা
বাগেরহাট সদর উপজেলার লাউপাড়ায় শুরু হয়েছে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব। শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির থেকে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রথযাত্রার সূচনা হয়। এরপর হাজারো ভক্ত-অনুরাগী দড়ি টেনে রথ মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বের করে আনেন।
রথযাত্রা উপলক্ষে লাউপালায় আয়োজন করা হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার। হস্তশিল্প, মিষ্টান্ন, খেলনা, শিশুদের বিনোদনের উপকরণসহ নানা ধরনের দোকান বসেছে মেলায়। ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল ও প্রশাসনিক নজরদারি।
রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সমন্বয়ক এম এ সালাম। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মোহন লাল হালদার, সদস্য সচিব বাবুল হালদার বিপ্লব, যাত্রাপুর রথযাত্রা মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি বাবুল সরদারসহ স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
আরো পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়
মঙ্গলবার দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা, প্রস্তুতি সম্পন্ন
যাত্রাপুর রথ মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি বাবুল সরদার বলেন, “প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এটি আমাদের ৪০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে। ভক্তদের অংশগ্রহণ আমাদের উৎসাহিত করে।”
সুধীর কুমার হালদার নামে এক ভক্ত বলেন, “রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের জীবনের অংশ। ভগবানের দর্শন ও রথ টানায় এক ধরনের আত্মিক প্রশান্তি পাই।”
স্থানীয় গৃহবধূ সাবিত্রী রানী মন্ডল বলেন, “এই রথযাত্রা আমাদের কাছে উৎসবের মতো। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে দেখা হয়, নতুন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। মেলায় কেনাকাটা করি, পূজার অনুষ্ঠানেও অংশ নেই।”
কচুয়া উপজেলা থেকে আসা কালি প্রসাদ বলেন, “রথ টানতে পারাটাই আমার জীবনের পরম পাওয়া। ৪০০ বছর ধরে এখানে রথ টানা হয়। ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে আসতাম, এখন সন্তানকে নিয়ে আসি।”
আয়োজকরা জানান, আগামী ১২ জুলাই ‘উল্টো রথযাত্রা’র মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে। এ উৎসব ঘিরে থাকবে ধর্মীয় আলোচনা ও প্রসাদ বিতরণ।
ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ