দুই আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রন পেয়েছে নূরুজ্জামান পরিচালিত বাংলাদেশি সিনেমা ‘মাস্তুল’।  ২১তম কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে সিনেমাটি। ৫ সেপ্টেম্বর বসছে এই আসর। উৎসব শেষ হবে ৯ সেপ্টেম্বর।  এই উৎসবে বাংলাদেশি তরুণ নির্মাতা সৌমিকের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দ্য পেয়ার অব হোয়াইট পিজনস’, এবং তথ্যচিত্র ‘মাইটি আফরিন: ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস’ নির্বাচিত খবর জানা গেছে আগেই। এবার এলো একই উৎসবে ‘মাস্তুল’ নির্বাচিত হওয়ার খবর গেল সপ্তাহে নির্মাতাকে উৎসবে আমন্ত্রণ জানান আয়োজকরা।

আমন্ত্রণ পেয়ে  উচ্ছ্বসিত নির্মাতা। জানালেন, রাশিয়ার মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মাস্তুল’ প্রদর্শীত হওয়ার পর বিভিন্ন উৎসব থেকেই সিনেমাটি দেখানোর আমন্ত্রণ পাচ্ছি। গেল মাসেই রাশিয়ার চেবক্সারি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রশংসিত হয় সিনেমাটি। এবার কাজান থেকে এলো আমন্ত্রণ, নিঃসন্দেহে এটা পুরো ‘মাস্তুল’ টিমের জন্যই বিশেষ অনুপ্রেরণার। তবে কাজানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নয়, বিশেষ বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ‘মাস্তুল’। কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২১তম উৎসবে ‘রাশিয়া-ইসলামিক ওয়ার্ল্ড’ বিশেষ প্রোগ্রামে প্রতিযোগিতার বাইরে থেকে ১০টি চলচ্চিত্র নির্বাচন করেছে। যেখানে মানবতাবাদ ও সহমর্মিতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সহিংসতা ও নিষ্ঠুরতা এড়িয়ে বাছাই করা এই চলচ্চিত্রগুলো এসেছে ঐ সব দেশ থেকে, যারা স্ট্র্যাটেজিক ভিশন গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশ ছাড়াও এবারের নির্বাচিত দেশগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়া, কাজাখস্তান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, সৌদি আরব, কিরগিজস্তান এবং উজবেকিস্তান ,তুর্কমেনিস্তানের যৌথ প্রযোজনার ছবি। উৎসব কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের আসন্ন কাজান চলচ্চিত্র উৎসবে ৬৭টি দেশ থেকে জমা পড়েছে ৮৪৫টি চলচ্চিত্র। রাশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আয়োজিত এই উৎসবটি তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট রুস্তাম মিনিখানভের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং রাশিয়া-ইসলামিক ওয়ার্ল্ড স্টেটেজিক ভিশন গ্রুপ-এর অংশীদারিত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

স্ট্র্যাটেজিক ভিশন গ্রুপের ডেপুটি কোঅর্ডিনেটর এলমিরা সাদিকোভার ভাষ্য অনুযায়ী, এবারের ‘রাশিয়া ইসলামিক বিশ্ব’ বিভাগটি শুধুমাত্র বিস্তৃত ভৌগোলিক অংশগ্রহণেই নয়, বরং ইসলামি বিশ্বের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও রীতিনীতির সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি দুর্লভ সুযোগ হবে। জলে ভাসমান জাহাজীদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘মাস্তুল’। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, দীপক সুমন, আমিনুর রহমান মুকুল, আরিফ হাসান, সিকদার মুকিত, সিফাত বন্যা প্রমুখ। ছবিটির ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন ও প্রমোশনে আছে টঙঘর টকিজ।

শুধু কাজান নয়, আসছে সেপ্টেম্বরে স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য ইমাজিনইন্ডিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর ২৪তম আসর ‘সেরা মানবিক ছবি’র জন্য মনোনয়ন পেয়েছে ‘মাস্তুল’। এই উৎসবে যোগ দিতে আমন্ত্রণও পেয়েছেন নির্মাতা। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বলেও জানান। দেশে মুক্তির বিষয়ে নির্মাতা জানান, স্পেনের ইমাজিনইন্ডিয়া উৎসবে যোগ দেয়ার আগেই দেশের দর্শকদের ‘মাস্তুল’ দেখাতে চাই। সেভাবেই পরিকল্পনা চলছে বলে জানালেন নির্মাতা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র উৎসব স প ট ম বর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্‌যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।

নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।

আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।

লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।

সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।

শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানা গেল রাজামৌলির ছবির নাম, থাকছেন মহেশ বাবু-প্রিয়াঙ্কা
  • দেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদারের জয়ের গল্প আসছে
  • নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদি নববর্ষ’ উদ্‌যাপন
  • মুগ্ধ করল নবান্ন উৎসবে ধান কাটার প্রতিযোগিতা
  • রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
  • নবান্নের পিঠায় সুবাসিত রাবি
  • ঘূর্ণির জাদুতে বিশ্বজয় 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারুণ্যের উৎসব রোববার
  • পয়লা অগ্রহায়ণে ‘নববর্ষ’ উদ্‌যাপন করবে ডাকসু
  • দিনভর আনন্দ আয়োজনে সাফল্য উদ্‌যাপন