প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন ছাড়াল রেমিট্যান্স
Published: 29th, June 2025 GMT
চলতি অর্থবছর প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। অর্থবছরের দু’দিনের হিসাব বাকি থাকতেই রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৪ কোটি ডলার। এর আগে করোনার মধ্যে ২০২০–২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্সের রেকর্ড ছিল। এতে করে রিজার্ভও হু হু করে বেড়ে এরই মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির মূল কারণ ঋণ জালিয়াতি ও দুর্নীতি কমে আসায় অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর আগে করোনার মধ্যেও বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল ওই সময়ে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের কারণে হুন্ডি চাহিদা তেমন ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুনের ২৮ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা ২৫৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২৩৭ কোটি ডলার। চলতি মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ১৭ কোটি ডলার বা ৭ শতাংশের বেশি। ঈদের কারণে চলতি মাসের প্রথম দিকে টানা ১০দিন বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে অর্থবছরের শুরু থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ২৬ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ পেয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ উঠেছে ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
এর আগে রিজার্ভে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড হয় ২০২১ সালের আগস্টে। তবে পরবর্তীতে দেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে বিপুল পরিমাণের অর্থ পাচার হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় রিজার্ভ নেমে আসে ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে আবার বাড়ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে
আয়কর রিটার্ন না দিলে আপনার গ্যাস-বিদ্যুৎসহ পরিষেবার সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে। আয়কর আইনে সেই ক্ষমতা কর কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের যে আয়কর নির্দেশিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে রিটার্ন জমা না দিলে পাঁচ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো পরিষেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা।
এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কোনো করদাতা যদি রিটার্ন জমা না দেন, কিন্তু তাঁর করযোগ্য আয় আছে কিংবা রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা আছে; তাহলে কর কর্মকর্তারা চাইলে ওই ব্যক্তির বাসাবাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানের গ্যাস-বিদ্যুৎসহ পরিষেবার লাইন কেটে দিতে পারেন।
আয়কর নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করলে করদাতার যেসব বিষয়ের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেগুলো হলো—১. আয়কর আইনের ২৬৬ ধারা অনুসারে জরিমানা, ২. ১৭৪ ধারা অনুসারে কর অব্যাহতির ক্ষেত্র সংকোচন, ৩. মাসিক ২ শতাংশ হারে অতিরিক্ত কর পরিশোধ, ৪. পরিষেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া ও ৫. বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে জটিলতা ইত্যাদি।
রিটার্ন জমা কাদের জন্যদুই শ্রেণির কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) আয়কর রিটার্ন দিতে হয়। তাঁরা হলেন যাঁদের করযোগ্য আয় বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকা পেরিয়ে গেছে। অপর শ্রেণি হলো যাঁদের আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। এখানে বলা প্রয়োজন, ৩৯ ধরনের সেবা নিতে আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র দেখাতে হয়।
রিটার্ন কোথায় জমা দিতে হয়১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে পারেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়। এ বছর থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। www. etaxnbr. gov. bd এই ঠিকানায় অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। তবে বিশেষ পাঁচ শ্রেণির করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে বছরে ৪০ লাখের মতো করদাতা রিটার্ন দেন। গত অর্থবছরের ১৭ লাখের মতো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কোনো কর দেননি। তবে রিটার্ন দিয়েছেন।