তেহরানের উত্তরাঞ্চলে সেলাইয়ের কাজ করছিলেন ৩৪ বছর বয়সী আফগান নারী শামসি। হঠাৎ ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে দৌড়ে ঘরে ফিরে আসেন তিনি। দেখেন, তাঁর ছোট দুই মেয়ে টেবিলের নিচে বসে ভয়ে কাঁপছে। শামসি বলেন, ‘তালেবান থেকে পালিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু এখানে এসে মাথার ওপর বোমা পড়ছে।’

শামসি ও তাঁর স্বামী যিনি সাবেক আফগান সেনা অস্থায়ী ভিসায় ইরানে এসেছিলেন। কিন্তু ভিসা নবায়ন করতে না পারায় এখন তারা অনিবন্ধিত শরণার্থী। তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ফিরে যেতে পারছেন না আফগানিস্তানেও। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাজের কোনো সুরক্ষা নেই শামসির। নেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সাহায্যের সুযোগ। তিনি বলেন, ‘কোনো সাহায্য পাইনি, না ইরানিদের কাছ থেকে, না আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার কাছ থেকে।’

ইরানে আনুমানিক ৩৫ লাখ আফগান শরণার্থী আছেন। এর মধ্যে ২৬ লাখের বেশিই অনিবন্ধিত। শুধু তেহরানেই ১৫ লাখের মতো আফগান শরণার্থী বসবাস করেন। ১২ দিনের যুদ্ধে তারা ছিলেন একেবারেই অসহায়; না ছিল আশ্রয়, না তথ্য, না সহায়তা।

২২ জুন রাতে এক বিস্ফোরণে শামসিদের অ্যাপার্টমেন্টের জানালা ভেঙে যায়। পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় পাশের একটি ভবন। শামসি বলেন, ‘বাচ্চাদের দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে একটা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি, যদি হঠাৎ কিছু হয়!’

যুদ্ধবিরতি হলেও ইরানে থাকা আফগান শরণার্থীদের সমস্যার শেষ হয়নি। শামসির  মালিক শহর ছেড়ে পালিয়েছেন, বেতনও দেননি। ‘যখন আমি আমার বেতন চাই, সে বলে, তুমি তো আফগান, চলে যাও!’

ইরানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত তিন আফগান নিহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় ইরানে থাকা আফগান শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত। ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ২০ লাখ আফগানকে ফেরত পাঠানো হবে। তবে ১২ দিনের যুদ্ধে সীমান্ত পেরিয়ে ফিরে গেছেন অনেকেই। কিন্তু শামসির মতো অনেকের ফেরা সম্ভব নয়। ‘আমরা নিরাপত্তার জন্য এসেছিলাম’ বলেন তিনি। যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয়? ‘তবুও এখানেই থাকব। তালেবানের কাছে ফিরতে পারব না।’ খবর আলজাজিরার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন আফগ ন শরণ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ সেই চালকের মৃত্যু

মানিকগঞ্জে থেমে থাকা একটি স্কুলে বাসে সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ বাসচালক পারভেজ খান (৪৫) মারা গেছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছেলে সুমন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়াতে স্কুলবাসে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা। এসময় বাসের ভেতর ঘুমন্ত পারভেজ গুরুতর দগ্ধ হন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা ইউনিয়নের বাড়াইভিকরা গ্রামে।

আরো পড়ুন:

ঢাকায় সমাবেশে আহত সেই শিক্ষিকা মারা গেছেন

লিবিয়ায় নৌকাডুবি: ৪ বাংলাদেশির মৃত্যু

আরো পড়ুন: মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে আগুন 

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‍“গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর  ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” 

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ