মাতাল অবস্থায় চামচ গিলে ছয় মাস ভেবেছেন স্বপ্ন
Published: 30th, June 2025 GMT
চীনের এক যুবক ভেবেছিলেন, তিনি স্বপ্নে চামচ গিলে ফেলেছেন। কিন্তু ছয় মাস পর সত্যিটা জানার পর নিজেই চমকে গেছেন।
২৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম ইয়াং। সম্প্রতি পেটের অস্বস্তি নিয়ে তিনি সাংহাইয়ের ঝোংশান হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তিনি ধারণা করেছিলেন, কোনো খাবারের সঙ্গে ভুল করে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলেছেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর পেটের ভেতরে আটকে থাকা ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা একটি সিরামিকের কফি চামচ খুঁজে পান।
পেট থেকে চামচটি বের করার পর ইয়াং বুঝতে পারেন, ছয় মাস ধরে যে ঘটনাকে স্বপ্ন ভেবে আসছিলেন, তা আসলে বাস্তব।
চিকিৎসকেরা পেটে চামচ আটকে থাকার কথা জানানোর পর ইয়াং বুঝতে পারেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডে ঘটনাটি ঘটে। সেদিন একটি হোটেলকক্ষে অতিরিক্ত মদ পান করে ফেলেছিলেন তিনি। একপর্যায়ে মদের নেশা কাটাতে গলায় কফির চামচ ঢুকিয়ে বমি করার চেষ্টা করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চামচটি গলায় ঢোকানোর সময় অসাবধানতাবশত পেটে চলে যায়। এ সময় তিনি এতটাই মাতাল ছিলেন যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরদিন সকালে ঘুম ভাঙার পর ইয়াংয়ের মনে হয়েছিল, তিনি একটি চামচ গিলে ফেলার স্বপ্ন দেখেছেন মাত্র। ফলে অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও ব্যবসার কাজে বেরিয়ে পড়েন এবং চীনে ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকেন।
সাংহাইয়ে ফিরে যাওয়ার পর ছয় মাস ইয়াং নিয়মিত শরীরচর্চা করেছেন। এ সময় উল্লেখযোগ্য কোনো শারীরিক সমস্যাও অনুভব করেননি। কিন্তু ১৮ জুন পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা এন্ডোস্কপি করে তাঁর পেটের মধ্যে সিরামিকের চামচ খুঁজে পান। প্রথম দফায় চামচটি বের করা সম্ভব হয়নি, কারণ এটি পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল। পরে কৌশল বদলে সফলভাবে চামচটি বের করতে সক্ষম হন চিকিৎসকেরা। পরে ইয়াংকে হাসপাতাল থেকে ছাড় দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি খুবই বিপজ্জনক হতে পারত। ভাগ্য ভালো, চামচটা এমনভাবে আটকে ছিল যে বড় ক্ষতি হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।