আশাশুনিতে লতিফুর রহমান ও ফারাজের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প
Published: 30th, June 2025 GMT
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ও তাঁর নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় বুধহাটার করিম সুপার মার্কেটের ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে এই ক্যাম্প শুরু হয়। এ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
জেলা শহর থেকে বুধহাটা করিম সুপার মার্কেটের দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। সকাল সাড়ে আটটার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দুই শতাধিক মানুষের ভিড়। মেডিকেল ক্যাম্পে উপস্থিত ব্যক্তিদের কারও সমস্যা হৃদ্রোগ বা ডায়াবেটিস, কেউ গাইনি রোগ বা অ্যালার্জিতে ভুগছেন।
আশাশুনির বুধহাটা গ্রামের শারমিন সুলতানা (২৮) বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরে গাইনি রোগে ভুগছি। শুনেছি, এখানে লতিফুর রহমান ও ফারাজের নামে ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাই চলে এসেছি।’ গুনাকরকাটি গ্রামের তাসলিমা খাতুন (২৫) বলেন, ‘আমি প্রসূতির সমস্যা নিয়ে এসেছি। একজন নারী চিকিৎসক আমাকে দেখেছেন। ওষুধও দিয়েছেন।’ নৈকাটি গ্রামের মহব্বত আলী (৬৫) বলেন, ‘আমি ডায়াবেটিসের জন্য এসেছি। চিকিৎসক মিনাক কুমার বিশ্বাস আমাকে দেখেছেন। ওষুধও পেয়েছি।’
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ আঞ্চলিক বিক্রয় ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রয়াত লতিফুর রহমান ও ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুদিন উপলক্ষে আমরা দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। সকাল সাড়ে ৯টায় চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২১০ রোগী নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে শতাধিক রোগীকে বিনা মূল্যে ওষুধ ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, বিকেল চারটা পর্যন্ত ক্যাম্প চলবে। আশা করা হচ্ছে, দিন শেষে ৪৫০ থেকে ৫০০ রোগীকে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া যাবে।
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ও তাঁর নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পের এ আয়োজন করা হয়েছে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী