ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনায় ইলিশের দেখা নেই, বিপাকে অর্ধলক্ষাধিক জেলে পরিবার

লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত রূপালী ইলিশের দেখা মিলছে না। দিনের পর দিন নদীতে জাল ফেলেও বেশিরভাগ জেলে ফিরছেন খালি হাতে। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন জেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে পরিবার। ক্ষতির মুখে পড়েছেন আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীরাও।

ইলিশের আশায় ভোরের আলো ফুটতেই জাল কাঁধে নিয়ে নদীতে নামছেন জেলার মেঘনাপাড়ের জেলেরা। তবে দীর্ঘ সময় নদীতে কাটিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। গত দুই মাস ধরেই চলছে এমন পরিস্থিতি। মেঘনার ২৫টি মাছঘাটে প্রতিদিন যেখানে গড়ে বেচাবিক্রি হতো প্রায় সাড়ে তিন টন ইলিশ, সেখানে এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ একেবারেই নেই। 

গত অর্থবছরে লক্ষ্মীপুরে ২৩ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হলেও এবার ভিন্ন চিত্র। সামান্য পরিমাণে যে ইলিশ উঠছে, তার দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। সব মিলিয়ে জেলে পরিবার থেকে শুরু করে আড়ৎদার, সবার মুখে এখন একটাই কথা, ‘ইলিশ গেলো কই?’

জেলে আব্দুর রহমান, রবিন হোসেন, ইলিয়াস, মোস্তফা ও জুলফিকাররা বলছেন- বর্ষা মৌসুমে যেখানে প্রতিদিন ৮-১০ কেজি ইলিশ ধরা পড়তো, সেখানে এখন জাল তুলে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকে ধারদেনা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আগে দিনে ১০-১৫ কেজি মিলতো, এখন ২-৩ কেজিও পাওয়া যায় না। ঘরে চাল নাই, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চিন্তিত এসব জেলেরা।

ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীরাও। আড়ৎদার নিজাম উদ্দিন বলেন, “মাছ না থাকলে আড়ৎ চালানো দায়। এখন তো আড়ৎ বন্ধ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় দেখছি না। গত তিনদিনে অল্প কিছু মাছ জেলেদের জালে উঠলেও হতাশা কাটছে না।”

দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশ রপ্তানি করা আব্দুল হক ব্যাপারী বলেন, “প্রতি মৌসুমে যেখানে ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ বাজারজাত হতো, এখন দিনে ১-২ মণ ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে না। যেটুকু মাছ পাই, দাম এত বেশি যে মানুষ কিনতেই পারছে না। ব্যবসায় আমরাও ক্ষতিতে আছি।”

মৎস্য বিভাগ বলছে, নদীতে লবণাক্ততা কমে যাওয়া, পানির প্রবাহে পরিবর্তন এবং জলবায়ু প্রভাবের কারণে ইলিশের প্রজনন ও আগমন ব্যাহত হচ্ছে। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “ইলিশের মাইগ্রেশনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রাকৃতিক প্রভাব ও পরিবেশগত কারণে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়ছে। আশা করছি অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ