জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহদের ১০০ বার ফোন দিলেও তারা রিসিভ করেন না বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনে শহিদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমা তুজ জোহরা। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের পরিবারের খোঁজ কেউ নেয়নি। 

মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি এসব অভিযোগ করেন। জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বিমানবন্দর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবদুল্লাহ।

ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের বয়স ছিল ১৭ বছর, ছোট ছেলের ১৪ বছর। আমার বড় ছেলে মারা যাওয়ার ১৪ দিনের মাথায় ছোট ছেলের ক্যানসার ধরা পড়ে। সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত ১৮ মে আমার স্বামী ব্রেন স্ট্রোকে মারা যান। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ থেকে আমার ছোট ছেলের খোঁজখবর নিয়েছে এবং তার চিকিৎসার খরচ দিয়েছে। 
আগামী শুক্রবার ছোট ছেলের আরেকটা অপারেশন হবে। আমার শেষ অবলম্বনটুকু যেন আমার কাছে থাকে এজন্য সবাই দোয়া করবেন।

তিনি আরও বলেন, এই উপদেষ্টা পরিষদ ও অন্তর্বর্তী সরকার আজ পর্যন্ত আমাদের খোঁজ নিতে পারেনি। আমার ছেলের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতা পেল, তারা একবারও আমাদের খোঁজ নিলো না। এমনকি সারজিস-হাসনাতকে আমরা ১০০টা ফোন দিলেও তারা রিসিভ করেন না।

আমরা বিএনপি পরিবার আজ আমাদের সঙ্গে না থাকলে আমাদের আজ রাস্তায় নামতে হতো। আমার ছোট ছেলেও আজ দুনিয়ায় থাকতো না, যোগ করেন ফাতেমা তুজ জোহরা।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এতে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোর জন্য সম্মানসূচক আসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন আম দ র পর ব র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ জন্মাষ্টমী আজ

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ