মুরাদনগরে ধর্ষণ: নির্যাতনকারী আরও ১২ জনকে খুঁজছে পুলিশ
Published: 1st, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালকাণ্ডে আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ছাড়াও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে। এদিকে ভিডিওকাণ্ডে গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ড শুনানি আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ওই নারীকে নিপীড়ন ও ভিডিও ভাইরালকাণ্ডে পুলিশের অভিযানে চারজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর জড়িত বাকিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, যারা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, তাদের বাড়িঘরে নারীরা ছাড়া আর কেউ নেই।
এক প্রতিবেশী জানান, ওই রাতে নারীকে নির্যাতনের শুরুতে তাঁর মা-বাবা বাড়িতে না থাকলেও পরে কিছু সময় পর তারা বাড়িতে ফেরেন। সে সময় নারীকে নির্যাতন ও ভিডিও ধারনের বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ না করতে হুমকি দেওয়া হয়। ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল ও তাঁর স্বামীর কাছে পাঠিয়ে সংসার ভেঙে দেওয়ারও হুমকি দেয় তারা।
মঙ্গলবার মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, পুলিশ ছাড়াও ডিবির একাধিক টিম সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এলাকার যুবকরা উল্টো তাঁকে মারধর ও নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করে। এ সময় তারা ধর্ষণের অভিযোগে একই গ্রামের ফজর আলী নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামি ফজরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
উপদেষ্টা ও ওসিকে দুষলেন সাবেক এমপি
আজ দুপুরে নির্যাতিত নারী ও তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে হেলিকপ্টারে মুরাদনগরে আসেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। তবে আগের দিনই ওই নারী স্বামীর বাড়ি চলে যান।
পরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে কায়কোবাদ বলেন, এই পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এ থানায় যোগদানের পর ওসি এবং উপদেষ্টা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন করেছেন। এ কারণে এসব ঘটনা ঘটছে।
সমাবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জেলা বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন মোল্লা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন, সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হকসহ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতার অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি জাহিদুর বলেন, কোনো দলকে পুনর্বাসন করা পুলিশের কাজ নয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় বিষাক্ত মদ পানে দুজনের মৃত্যু
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বিষাক্ত মদ পানে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার বাখরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই দুজন হলেন বাখরাবাদ গ্রামের তপন চন্দ্র সরকার (৫০) ও পলাশ চক্রবর্তী (৩৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে তপন ও পলাশ স্পিরিট–জাতীয় বিষাক্ত মদ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের লোকজন তাঁদের মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক পলাশকে মৃত ঘোষণা করেন। তপনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে বিকেলে বাঙ্গরা বাজার থানা-পুলিশ রামচন্দ্রপুর মহাশ্মশান থেকে পলাশের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তপনের মরদেহ সৎকার করা হয়।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বুধবার রাতে বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা জেনেছেন মদজাতীয় কিছু পান করে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। পলাশের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে তপনের মরদেহ সৎকার হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পলাশের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।