কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালকাণ্ডে আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ছাড়াও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে। এদিকে ভিডিওকাণ্ডে গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ড শুনানি আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে। 

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ওই নারীকে নিপীড়ন ও ভিডিও ভাইরালকাণ্ডে পুলিশের অভিযানে চারজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর জড়িত বাকিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, যারা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, তাদের বাড়িঘরে নারীরা ছাড়া আর কেউ নেই। 

এক প্রতিবেশী জানান, ওই রাতে নারীকে নির্যাতনের শুরুতে তাঁর মা-বাবা বাড়িতে না থাকলেও পরে কিছু সময় পর তারা বাড়িতে ফেরেন। সে সময় নারীকে নির্যাতন ও ভিডিও ধারনের বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ না করতে হুমকি দেওয়া হয়। ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল ও তাঁর স্বামীর কাছে পাঠিয়ে সংসার ভেঙে দেওয়ারও হুমকি দেয় তারা। 

মঙ্গলবার মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, পুলিশ ছাড়াও ডিবির একাধিক টিম সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে। 

গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এলাকার যুবকরা উল্টো তাঁকে মারধর ও নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করে। এ সময় তারা ধর্ষণের অভিযোগে একই গ্রামের ফজর আলী নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামি ফজরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

উপদেষ্টা ও ওসিকে দুষলেন সাবেক এমপি 

আজ দুপুরে নির্যাতিত নারী ও তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে হেলিকপ্টারে মুরাদনগরে আসেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। তবে আগের দিনই ওই নারী স্বামীর বাড়ি চলে যান। 

পরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে কায়কোবাদ বলেন, এই পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। 

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এ থানায় যোগদানের পর ওসি এবং উপদেষ্টা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন করেছেন। এ কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। 

সমাবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জেলা বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন মোল্লা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন, সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হকসহ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

বিএনপি নেতার অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি জাহিদুর বলেন, কোনো দলকে পুনর্বাসন করা পুলিশের কাজ নয়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র দনগর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

লালবাগে ছারপোকা মারার ওষুধের গ্যাসের প্রভাবে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

রাজধানীর লালবাগের শহীদনগরে বাসায় ছারপোকা মারার ওষুধের বিষাক্ত গ্যাসের ক্রিয়ায় জীবন হোসেন (৪০) নামে একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী মারা গেছেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, জীবন হোসেন সপরিবার শহীদনগরে জে এস রোডে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। গতকাল বুধবার বাসার সব কক্ষে ছারপোকার ওষুধ দিয়ে ব্যবসার কাজে বেরিয়ে পড়েন জীবন। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা আত্মীয়ের বাসায় যান।

রাতে বাসায় ফিরে জীবন নিজ কক্ষের দরজা–জানালা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্বজনেরা এসে তাঁকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে জীবনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, জীবনকে অচেতন অবস্থায় বেলা সোয়া একটার দিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।

জীবনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার পাকিয়া পাড়ায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লালবাগে ছারপোকা মারার ওষুধের গ্যাসের প্রভাবে ব্যবসায়ীর মৃত্যু