আকিজ ফ্লাওয়ার মিলসের বার্ষিক সেলস কনফারেন্স সম্পন্ন
Published: 2nd, July 2025 GMT
আকিজ ইনসাফ গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের বার্ষিক সেলস কনফারেন্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। সম্প্রতি কক্সবাজারের সি-প্যালেস হোটেলের বলরুমে সেলস কনফারেন্সের অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সানশাইন ব্র্যান্ডের আটা, ময়দা, সুজি, তেল, চাল, ডালসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্য বিক্রয় সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সম্মেলনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল গত বছরের বিক্রয় পর্যালোচনা করা, ভবিষ্যৎ কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করা, ব্যবসায়িক পরিধি বৃদ্ধির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা এবং কোম্পানির নীতিমালার ওপর আলোকপাত করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আকিজ ইনসাফ গ্রুপের সম্মানিত ম্যানেজিং ডিরেক্টর শেখ জামিল উদ্দিন, এবং আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুপ কুমার সাহা।
এ সময় শেখ জামিল উদ্দিন বিক্রয়কর্মীদের উদ্দেশে একটি উদ্দীপনামূলক ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি কোম্পানির সাফল্য অর্জনে বিক্রয় দলের নিরলস প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অর্জনে তাদের প্রতি উৎসাহিত করেন।
অনুপ কুমার সাহা সম্মেলনে কোম্পানির বিক্রয় পারফরম্যান্সের বিস্তারিত বিশ্লেষণ, ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত ভবিষ্যৎ লক্ষ্যসমূহ, ব্যবসায়িক পরিসর বিস্তারের পরিকল্পনা এবং প্রাসঙ্গিক নীতিমালা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড ২০১৬ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত তাদের অত্যাধুনিক ১২০০ মেট্রিক টন দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতার ফ্যাক্টরির মাধ্যমে আটা, ময়দা ও সুজি উৎপাদন করে আসছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোম্পানিটি ক্রেতা সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সফলভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
আকিজ ইনসাফ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শেখ জামিল উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে, দেশের অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাণিজ্যে ভোগ্যপণ্য, বেকারি শিল্প, মুদ্রণ শিল্প এবং টেক্সটাইল শিল্পে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নিরন্তর অবদান রেখে চলেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সফলভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুধু দায়িত্ব নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচনের ফলাফল ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে আগামী দিনে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে—গণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ নাকি অতীতের পুনরাবৃত্তি। দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ইসির সংলাপে এই বাস্তবতা উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, জনগণের আস্থা ফেরাতে হলে ইসিকে শক্তিশালী, স্বাধীন ও সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সংলাপে অংশ নেওয়া নাগরিকেরা ইসিকে প্রথমেই সতর্ক করেছেন জনগণের আস্থার সংকটের বিষয়ে। কারণ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা জনগণের আস্থার ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। অতীতে ভোট নিয়ে অভিযোগ ও অনিয়ম সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ইসির প্রতি সেই আস্থা ক্ষয়ে গেছে। এবার যদি ইসি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তবে ইতিহাসে তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ফলাফল সবাই জানে—গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে।
আধুনিক নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশাল ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এবারের নির্বাচনী প্রচারের ৮০ শতাংশই হবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। সেখানে মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচার ও এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসৃষ্ট বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এসব মোকাবিলায় ইসিকে এখনই কার্যকর কৌশল নিতে হবে। তা না হলে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হবে, ভোটাররা বিভ্রান্ত হবেন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিপন্ন হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরীর বক্তব্যে উঠে এসেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের অপরিহার্যতা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ৫ থেকে ৭ শতাংশ নারী প্রার্থিতা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? দীর্ঘ সংগ্রামের পরও যদি নারীরা সংসদে ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব না পান, তবে সেটি কেবল প্রতীকী অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধ থাকবে। তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি প্রবীণ, দরিদ্র, নারী ও সংখ্যালঘুদের যেন পিছিয়ে না দেওয়া হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশের নির্বাচনে সহিংসতা প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর যথার্থই বলেছেন, দেড় দশক ধরে সহিংসতা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এই প্রবণতা রোধ করা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। শুধু তা-ই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজে লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন সংলাপে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে, মৃত ভোটার বাদ দেওয়া হয়েছে, আইন সংস্কার করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তবে জনগণের দৃষ্টিতে এসবের চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ইসি কি রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে নিজস্ব স্বাধীনতায় কাজ করতে পারবে? নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন, নিরপেক্ষ রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ, ভোটকেন্দ্রে সঠিক সময়ে ব্যালট পাঠানো—এসব বাস্তবায়নেই প্রমাণ মিলবে ইসির নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার।
আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য একটি মাইলফলক। সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল বাংলাদেশ তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবে। সঠিক পথে হাঁটতে পারলে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসে উজ্জ্বল স্থান পাবে; ব্যর্থ হলে আরও গভীর সংকটে পড়বে রাষ্ট্র ও সমাজ। নির্বাচন কমিশনের সামনে এখন একটাই পথ—নিরপেক্ষ, সাহসী ও স্বাধীন ভূমিকা পালন করে সফলভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা।