আগামী নির্বাচনে ৩৮.৭৬% ভোট পেতে পারে বিএনপি
Published: 7th, July 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অন্য সব রাজনৈতিক দলের চেয়ে বেশি ভোট পাবে বল মনে করেন তরুণরা। তাদের বিবেচনায় সর্বাধিক ৩৮ দশমিক ৭৬ ভোট পাবে দলটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৪৫ ভোট পাবে জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায়, তাহলে ১৫ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ ভোট পাবে।
দেশের তরুণদের ওপর পরিচালিত মাঠ পর্যায়ের এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে গত ২০ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। সোমবার রাজধানীর হোটেল ব্র্যাক ইনে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের দুটি জেলার দুটি করে উপজেলার দুই হাজার তরুণের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়।
‘রূপান্তরকালে তরুণ সমাজ : জুলাই পরবর্তী কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের গতি’ শিরোনামের এই জরিপে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের তরুণের মতামত নেওয়া হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের একটা অংশ এখনও ভোটার নন। এ হারটা কত তা স্পষ্ট নয়।
জরিপের ফল বলছে, নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর বাইরের ইসলামিক দলগুলো ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে। জাতীয় পার্টি পাবে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট। অন্যান্য ছোট দলগুলো পাবে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট।
তরুণদের মতে দেশের কোন বিভাগে কোন দল কী হারে ভোট পেতে পারে, তারও একটা চিত্র তুলে আনা হয়েছে জরিপে। এতে দেখা যায়, সব বিভাগেই এগিয়ে রয়েছে বিএনপি। দলটি সবচেয়ে বেশি ৪১ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে চট্টগ্রাম বিভাগে। সবচেয়ে কম ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পেতে পারে সিলেটে।
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বিষয়ে উত্তর দাতাদের কাছে প্রশ্ন ছিল– আপনি কি মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশের উন্নয়নের জন্য কল্যাণকর? জবাবে ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিয়েছেন। বাকিরা ‘না’ সূচক জবাব দিয়েছেন। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পার বলে মনে করে জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। ১৪ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ মনে করেন, এ জন্য ১০ থেকে ২০ বছর সময় লাগতে পারে। উত্তর দাতার ২২ দশমিক ৮ শতাংশ মনে করেন, ধর্মভিত্তিক দল কোনোদিন এ দেশের শাসন ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
জরিপে অংশ নেওয়া তরুণ ভোটারদের ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তবে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের অংশগ্রহণের বিষয়ে হতাশা ও অনাগ্রহ রয়েছে।
৮২ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান না। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক সহিংসতা ও রাজনীতিবিদদের নৈতিকতার অভাবের কথা বলেছেন তারা।
জরিপটি পরিচালনার ব্যাখ্যা দিয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান অনুষ্ঠানে বলেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পর কর্মসংস্থান নিয়ে তরুণদের ভাবনা, চ্যালেঞ্জ, আশাবাদ ও হতাশা বুঝতে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ছিল অনেক। তরুণ সমাজের আন্দোলনের মূলে ছিল বৈষম্যের অবসান। তবে তা কি হয়েছে? এখনও নানাভাবে নানান পর্যায়ে বৈষম্য রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ত ক দল পর চ ল দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
করাচিতে পাঁচতলা ভবন ধসে নিহত ১৪
পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচির লিয়ারি এলাকার বাগদাদি মহল্লায় একটি পুরোনো পাঁচতলা আবাসিক ভবন ধসে পড়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জিও নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করাচির লিয়ারি এলাকায় স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ: বিচার-পুনর্বাসন আর কবে?
বরগুনায় সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
পাকিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন তারা এবং এ পর্যন্ত ভবনটির ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৪ জনের মরদেহ তারা উদ্ধার করতে পেরেছেন। ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন চাপা পড়ে থাকায় সামনে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
ঘটনাস্থল এবং উদ্ধার তৎপরতা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন করাচি’র মেয়র মুর্তাজা ওয়াহাব। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ধসে পড়া ভবনটি ১৯৭৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং কয়েক বছর আগে ভবনটিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা করেছিল নগর প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা তাদের ক্লান্তি নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্ট ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধার পরিষেবার নেতৃত্বদানকারী আবিদ জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হতে আরো আট থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
দক্ষিণ করাচির জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আরিফ আজিজ জানিয়েছেন, ভবনটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ বসবাস করছিলেন।
লায়ারিতে ভবন ধসের ঘটনায় ইতোমধ্যে শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আয়াজ সাদিক। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারকে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
ভবন ধসের ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাঈদ গনি। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ