মেরে আন্দোলন ‘ঠান্ডা’ করার নীতি ছিল শেখ হাসিনার
Published: 15th, October 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর লেথাল উইপন বা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দিয়েছিলেন—তাঁর কথোপকথনের বিভিন্ন অডিও রেকর্ডের মাধ্যমে এটি এখন অকাট্যভাবে প্রমাণিত। মুঠোফোনে কথোপকথনের তিনটি অডিও রেকর্ড ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মেরে ফেলে আন্দোলনকে ‘ঠান্ডা’ করার নীতি ছিল শেখ হাসিনার।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর পৃথক আলাপে (মুঠোফোনে) প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারসহ আন্দোলন দমনে বল প্রয়োগের বিভিন্ন নির্দেশনা রয়েছে।
মুঠোফোনে কথোপকথনের (হাসিনা-তাপস, হাসিনা-মাকসুদ ও হাসিনা-ইনু) পৃথক তিনটি অডিও রেকর্ড ট্রাইব্যুনালে শোনান চিফ প্রসিকিউটর। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ওয়্যারলেসে (বেতার বার্তা) তখন যে বার্তা দিয়েছিলেন, তার রেকর্ডও (অডিও) ট্রাইব্যুনালে শোনানো হয়।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তাপসের সঙ্গে আলাপে শেখ হাসিনা লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। কমান্ড রেসপনসিবিলিটির (সর্বোচ্চ কর্তৃত্বের দায়) জায়গায় সব অ্যাভিডেন্স (প্রমাণ) বাদ দিলেও শুধু এই সরাসরি নির্দেশই তাঁর (শেখ হাসিনা) অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
শেখ হাসিনার সঙ্গে মাকসুদ কামালের কথোপকথন প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, খুব পরিষ্কারভাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, র্যাব ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তাঁর নির্দেশ ও সেটির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে র্যাব ও বিজিবির যে অ্যাকশন (আক্রমণ), সেগুলো বিবেচনায় নিলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, কয়েকটি অডিও কথোপকথন, পুলিশের ওয়্যারলেস মেসেজ (বেতার বার্তা) এবং এর সঙ্গে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের সাক্ষ্য বিবেচনায় নিলে লেথাল উইপন ব্যবহারের আদেশ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে যায়। আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের কাছে যায়। তাঁর কাছ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও অন্যদের কাছে যায়। এই বার্তা দেওয়ার পর দেখা গেছে, কীভাবে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের হত্যার জন্য রাস্তার মোড়ে বা থানার সামনে বালুর বস্তা দিয়ে বাংকারসদৃশ ঘাঁটি তৈরি করে তার ওপর এলএমজি (লাইট মেশিনগান) বসানো হয়েছিল বলেও যুক্তিতর্কে উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এলএমজি হলো মারণাস্ত্র। এটি ছিল শেখ হাসিনার মারণাস্ত্র ব্যবহারের বাস্তবায়ন।
আন্দোলনকারীদের শরীর থেকে উদ্ধার করা বুলেট ও পিলেট (ছররা গুলি বা রাবার বুলেট) ট্রাইব্যুনালে এর আগে প্রদর্শন করা হয়েছে উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এসব থেকে খুব পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, অস্ত্রগুলো কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। মারণাস্ত্র ব্যবহার করার আদেশ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তার হাজারো ভিডিও রয়েছে। এ সময় ট্রাইব্যুনালে গণ–অভ্যুত্থানের সময়কার কয়েকটি ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। যার মধ্যে ছিল রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি, রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে ইমাম হাসানকে (তাইম) গুলি করাসহ বেশ কিছু ভিডিও ।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, তাতে নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ আছে। প্রতিবেদনের এই অংশ ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর। এর পাশাপাশি তিনি গণ–অভ্যুত্থানের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরার জন্য প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের শিরোনাম পড়ে শোনান। সেই সঙ্গে গণ–অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ছাত্রলীগ (এখন নিষিদ্ধ) নেতা–কর্মী নির্যাতন করেছেন, তাঁদের নাম ও ছবিসহ বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তবে সাবেক আইজিপি মামুন দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিচারপতি মো.
গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে করা মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের বিষয়ে শুনানির সময় বাড়ানো হয়েছে। ২৩ অক্টোবর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
ট্রাইব্যুনালে ইনুর পক্ষে আইনজীবী নাজনীন নাহার সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। তিনি বলেন, ১ হাজার ৭০০ পৃষ্ঠার নথিপত্র দেখে তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। এ কারণে তাঁদের ৮ সপ্তাহ সময় লাগবে।
পরে ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
হানিফকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশগণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামিকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২।
এ মামলার অপর তিন আসামি হলেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
গতকাল শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়, এই মামলার চার আসামির কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পরে আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ত র ব যবহ র ব যবহ র কর স ব দপত র তৎক ল ন কর র ন র জন য র কর ড প রক শ আইজ প সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আড়ি পেতে ও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি হতো
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় কীভাবে আওয়ামী লীগ সরকার নজরদারি ও দমন–পীড়নের কাজটি করত, সেটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় গতকাল সোমবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দ্বিতীয় দিনে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, নজরদারি করতে ফোনে আড়ি পাতার পাশাপাশি ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত (লোকেশন ট্র্যাকিং) করা হতো। ড্রোন ব্যবহার করেও নজরদারি হতো তখন। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের মাঠপর্যায়ের ক্যাডার বাহিনীকেও কাজে লাগানো হয়েছিল। এসব তথ্যের আলোকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিশেষ করে পুলিশ ও র্যাব আন্দোলনকারীদের ওপর বল প্রয়োগ করত। এ জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সরাসরি নির্দেশ আসত।
দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শুরুতেই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ওপর ডেইলি স্টার–এর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র ট্রাইব্যুনাল কক্ষে দেখানো হয়। এরপর শেখ হাসিনা ও একজন সেনা কর্মকর্তার মধ্যে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড শোনানো হয়। এ ছাড়া প্রয়াত লেখক-গবেষক বদরুদ্দীন উমর এবং আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের দেওয়া জবানবন্দি পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা দিতে গিয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকার একাধিক শিরোনাম (ওই সময়ের) ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনান।
রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়েছিলযুক্তিতর্ক উপস্থাপনের এক পর্যায়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে এক নজিরবিহীন দমন অভিযান পরিচালনা করে। এখানে ছিল পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, আনসার ব্যাটালিয়ান, বিজিবি, সশস্ত্র বাহিনীর কিছু সদস্য, ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি, সোয়াত, সিটিটিসি ও ডিবির মতো গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে দেশব্যাপী ছাত্র ও নাগরিকদের ওপর সহিংসতা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগ–যুবলীগ (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, হেলিকপ্টার, ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এপিসি (সাঁজোয়া যান) ব্যবহার করা হয়েছে। লেথাল উইপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছে।
গণ–অভ্যুত্থানের সময় পদ্ধতিগত আক্রমণ হয়েছিল উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার। তিনি নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চান। তিনি প্রতিপক্ষকে রাখবেন না। একদলীয় শাসন থাকবে।
‘এবার শুরুতে দিবা’নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের সময় শেখ হাসিনা ও একজন সেনা কর্মকর্তার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ট্রাইব্যুনালে শোনান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাইয়ের কথোপকথন এটি। শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলা সেনা কর্মকর্তার নাম কর্নেল রাজীব। তিনি এখন বাংলাদেশের বাইরে আছেন। তিনি ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি অব প্রাইম মিনিস্টার ছিলেন।
অডিও কথোপকথনে শোনা যায়, কর্নেল রাজীব বলছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম স্যার।’
তখন শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমা হতে শুরু করছে। মিরপুর ১০ নম্বরে, উত্তরা, তারপরে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
এবং বিভিন্ন জায়গায়।…ওই শুরুতেই কিন্তু ইয়ে করতে হবে।’
এ সময় কর্নেল রাজীব বলেন, ‘ঠিক আছে স্যার।’
এরপরই শেখ হাসিনা আবার বলেন, ‘...শুরুতেই।’
তখন কর্নেল রাজীব বলেন, ‘ঠিক আছে।’
এর পরের কথোপকথন স্পষ্ট বোঝা যায় না। পরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারে কোনো কথা নাই। এবার শুরুতে দিবা।’
তখন কর্নেল রাজীব বলেন, ‘ঠিক আছে স্যার।’
‘মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়’জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় কলেজছাত্র মো. হৃদয় হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি ভিডিও দেখান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের কয়েকজন সদস্য হৃদয়কে আটক করেছেন। রাস্তার ওপর পুলিশের সদস্যরা হৃদয়কে ঘিরে আছেন। এর মধ্যে পুলিশের এক সদস্য হৃদয়কে গুলি করেন। হৃদয় মাটিতে পড়ে যান। এরপর পুলিশের সদস্যরা চলে যান। পরে পুলিশের দু-তিনজন সদস্য এসে হৃদয়কে টেনে নিয়ে যান।
টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমনগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে হৃদয় কোনাবাড়ী এলাকায় থাকতেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি অটোরিকশা চালাতেন।
ভিডিও দেখানো শেষে ট্রাইব্যুনালে তাজুল ইসলাম বলেন, এই গুলি যে পুলিশ সদস্য করেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মরদেহ গাড়িতে তুলে নিয়ে রাতে ব্রিজের ওপর থেকে কড্ডা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত স্বীকারোক্তি আছে। তাঁর মরদেহ উদ্ধারের জন্য তদন্ত সংস্থা ডুবুরি নামিয়েছিল। যেহেতু এক বছর পরে এবং সেখানে স্রোত আছে, মরদেহ পাওয়া যায়নি।
গ্রেপ্তার ওই কনস্টেবলের নাম মো. আকরাম হোসেন (২২)। তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন।