চূড়ান্ত হলো নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশ সফরের সূচি। ভারত এ মাসের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করার পর নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বাংলাদেশ–নেদারল্যান্ডস তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের সূচিই আজ প্রকাশ করেছে বিসিবি।

৩০ আগস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর হবে পরের দুটি ম্যাচ। সবগুলো ম্যাচই হবে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। তিনটি ম্যাচই শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।

ভারত সফর স্থগিত করার পর পাকিস্তান সিরিজ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস বলেছিলেন এশিয়া কাপের আগে একটি সিরিজ হলে ভালো হয়। সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা ছিল বিসিবিরও। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে ২৬ আগস্ট বাংলাদেশে আসবে নেদারল্যান্ডস।

বাংলাদেশ–নেদারল্যান্ডস সিরিজ সূচিআরও পড়ুনএশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে সৌম্য৫৫ মিনিট আগে

এই সিরিজের আগে আগামী পরশু থেকে একটি প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু করবে বাংলাদেশ। শুরুতে নাথান কেলির অধীনে হবে ফিটনেস ক্যাম্প। এরপর ১১ আগস্ট প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বাংলাদেশে ফিরে আসার পর শুরু হবে স্কিল ক্যাম্প। লম্বা ওই ক্যাম্পে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উড ও মনোবিদ ডেভিড স্কটকে আনছে বিসিবি।

২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে দুই দশকে ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর সম্পদ বেড়েছে ৬২%

সারা পৃথিবীর মতো ভারতেও ধনী–গরিবের ব্যবধান অনেকটাই বেড়েছে। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতের শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর সম্পদ বেড়েছে ৬২ শতাংশ।

ডয়েচে ভেলের সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের সমাজ ক্রমেই বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। অক্সফামের সূত্রে তারা জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা খরচ কুলাতে না পেরে প্রতিবছর ভারতের ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায়। সরকারের দারিদ্র্য বিমোচনমুখী বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষাব্যবস্থা থাকলেও বাস্তবতা হলো তা যথেষ্ট নয়।

অন্যদিকে ভারতে ধনীদের সংখ্যাও বাড়ছে। অক্সফামের সূত্রে ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ভারতে এখন ১১৯ জন শতকোটিপতির বসবাস, ২০০০ সালে যে সংখ্যা ছিল মাত্র ৯। ফোর্বসের সূত্রে জানা যায়, ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি একসময় বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনীর আসন পেয়েছিলেন। তাঁর আগে ছিলেন কেবল ইলন মাস্ক।

এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ ডয়েচে ভেলেকে বলেন, ভারতে জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে বৈষম্য অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, সেটি হলো অর্থনৈতিক অসমতা। বিশেষ করে গত দুই দশকে এ অসমতা আরও বেড়েছে।

বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ও বড় অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি–২০–এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০০০ সালের পর বিশ্বে নতুন যত সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে, তার ৪১ শতাংশ গেছে এই শীর্ষ ১ শতাংশের হাতে।

শীর্ষ ধনীদের সম্পদ এত বেশি হারে বাড়লে নিচের সারির মানুষের সম্পদ সেভাবে বাড়বে না, এটিই স্বাভাবিক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালের পর এই নিচের সারির ৫০ শতাংশ মানুষের সম্পদ বেড়েছে মাত্র ১ শতাংশ।

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের নিচের সারির ৫০ শতাংশ মানুষের তুলনায় শীর্ষ ১ শতাংশ মানুষের সম্পদ গড়ে ২ হাজার ৬৫৫ গুণ বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাবের উপাত্ত ব্যবহার করে এ তথ্য দিয়েছে জি–২০।

এ পরিস্থিতিতে জি–২০–এর টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অসমতাবিষয়ক নতুন প্যানেল গঠনে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেইঞ্জের মডেল ব্যবহার করা উচিত। এই প্যানেলের কাজ হবে অসমতার কারণ ও প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা, সরকার ও নীতিপ্রণেতাদের পরামর্শ দেওয়া। কেননা অসমতার কারণে গণতন্ত্র ও রাজনীতি বিনষ্ট হয়।

প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, যেসব দেশে উচ্চ অসমতা আছে, সেসব দেশে গণতন্ত্রের পশ্চাৎপসরণ ঘটছে। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জাসেফ স্টিগলিতস বলেছেন, অসমতা শুধু অন্যায্য বা সে কারণে কেবল সামাজিক সংগতি বিনষ্ট হচ্ছে বিষয়টি তেমন নয়, বরং অসমতা আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর। বৈশ্বিক অসমতা নিয়ে জোসেফ স্টিগলিতস বরাবরই উচ্চকণ্ঠ।

বর্তমানে জি–২০ জোটের সভাপতি দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতি সিরিল রামাফোসা। তিনি স্টিগলিতসের নেতৃত্বে এক্সট্রা–অর্ডিনারি কমিটি অব ইন্ডিপেনডেন্ট এক্সপার্টস অন গ্লোবাল ইনইকুয়ালিটি গঠন করেছেন। চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত রামাফোসা জি–২০–এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর সভাপতিত্বের ভার যাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে।

প্রতিবেদনে কোভিড–১৯, ইউক্রেন যুদ্ধ ও বাণিজ্যবিরোধের মতো বিষয়গুলোকে প্রকৃত অর্থেই ‘ঝড়ের’ সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ ধরনের ঝড় এলে দারিদ্র্য ও অসমতা পরিস্থিতির কেবল অবনতিই ঘটবে।

আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের শতকোটিপতিদের সম্পদ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে, কিন্তু একই সঙ্গে প্রতি চারজনে একজন মানুষ নিয়মিতভাবেই কম খাবে।

২০২০ সালের পর থেকেই বিশ্বে দারিদ্র্য হ্রাসের গতি কমে গেছে। এতটা কমে গেছে যে দারিদ্র্য হ্রাসের বিষয়টি একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে যেখানে ৩৩ কোটি ৫০ লাখ মাঝারি থেকে তীব্র মাত্রায় খাদ্যসংকটের মুখে ছিল, এখন তা বেড়ে ২৩০ কোটিতে উঠেছে।

মার্কিন ধনীদের সম্পদ বেড়েছে

এদিকে ভারতের মতো মার্কিন শীর্ষ ধনীদের সম্পদ গত এক বছরে অনেকটাই বেড়েছে। অঙ্কটা দেখলে অনেকেরই চোখ কপালে উঠতে পারে। সম্পদবৈষম্য নিয়ে অক্সফামের নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর শীর্ষ ১০ মার্কিন শতকোটিপতির সম্পদ বেড়েছে ৬৯৮ বিলিয়ন বা ৬৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। খবর দ্য গার্ডিয়ান

বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৮৫ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারের বাজেট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ বাংলাদেশের বাজেটের প্রায় ১০ দশমিক ৮ গুণ সম্পদ বেড়েছে এই ধনীদের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তার জেরে মার্কিন সমাজের অসমতা নতুন উচ্চতায় উঠেছে। তবে তাঁরা শুধু ট্রাম্প প্রশাসন নয়, এ ক্রমবর্ধমান অসমতার জন্য ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান—উভয় গোষ্ঠীকেই দায়ী করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ