বৃদ্ধের পোড়া লাশ উদ্ধার: হত্যার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার, ছেলে পলাতক
Published: 7th, August 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার একটি কলাবাগান থেকে গত মঙ্গলবার রাতে ছামছুর আলী খলিফা (৬০) নামের এক বৃদ্ধের পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার পর হত্যার অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার ওই বৃদ্ধের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহত ব্যক্তির বাড়ি থেকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর আলামত জব্দের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল বুধবার নিহত ছামছুরের ছোট ভাই মুজাহিদ খলিফা বাদী হয়ে তাঁর ভাতিজা মো.
নিহত ছামছুর আলী খলিফার বাড়ি পাশের নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী গ্রামে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। গত মঙ্গলবার বাড়ি থেকে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের কাদোয়া-বটতলী এলাকার একটি কলাবাগানে বস্তা ভরা তাঁর দগ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে ছামছুর আলীকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার দিন মঙ্গলবার বৃদ্ধ ছামছুর আলী ও তাঁর ছেলে বাড়িতে ছিলেন। পুলিশ ওই দিন রাতে আক্কেলপুরে কলাবাগানে পোড়া লাশ উদ্ধারের পর বৃদ্ধের ছেলেকে ফোন করে। তখন তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার নগরকুসুম্বি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাসেল খলিফা পুলিশকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা বলার পর ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান। পরদিন পুলিশের একটি দল নিহত ব্যক্তির বাড়িতে যায়। ওই বাড়ির আঙিনায় একটি মাটির পাতিলের ভেতরে বৃদ্ধের মুঠোফোন ও লাশ পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত গোবরের লাকড়ি জব্দ করে। পরে লাশ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাসেল খলিফার অটোরিকশাটিও জব্দ করা হয়। তবে এখনো রাসেল খলিফার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি।
মামলার বাদী মুজাহিদ খলিফা বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জেরে আমার বড় ভাই ছামছুর খলিফাকে তাঁর ছেলে রাসেল খলিফা হত্যা করেছে। লাশ গুম করতে কলাবাগানে আমার ভাইয়ের মরদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করছি।’
জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. জিন্নাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত পেয়েছি। মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণায় ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। নতুন এ বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু উৎপাদন কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোগ্রাম’(এএমপি)।
ভারত বর্তমানে অ্যাপলের পণ্যের চূড়ান্ত সংযোজনের (অ্যাসেম্বল) অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এটি যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর একটি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনটি আইফোনের একটি ভারতে তৈরি হয়। যদি অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এর প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে। ভারত ও অন্যান্য দেশে অ্যাপলের উৎপাদন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু বক্তব্যের কারণে এ উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে।
ভারত থেকে আসা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর অ্যাপলের বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে এসেছে। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপ করেছেন।
ভারতের ওপর প্রভাবঅ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন বাড়াতে চায় এবং সেখানে ভালো মানের সরবরাহকারীদের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়। বর্তমানে ভারতে অ্যাপলের কর্মযজ্ঞ মূলত শেষ ধাপে পণ্যের সংযোজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের বেশির ভাগ কাঁচামাল চীন ও তাইওয়ান থেকে আসে। তবে ভারত সরবরাহব্যবস্থাকে মজবুত করে সরবরাহকারীর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। স্বল্প সময়ে অ্যাপলের এই পদক্ষেপ দেশটির পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে।
২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের স্মার্টফোন রপ্তানি বেড়ে ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালে এই হার ছিল মাত্র ১১ শতাংশ। একই সময়ে স্মার্টফোনের বাজারে আধিপত্য ধরে রাখা চীনের রপ্তানি ৮২ থেকে কমে ৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
মূল্যমানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য হলো স্মার্টফোন। তবে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন যে ভারতে তৈরি অ্যাপল আইফোনের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের মুঠোফোন রপ্তানির বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে এই আইফোন।
এপ্রিলে একাধিক দেশের ওপর পাল্টা শুল্কের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মুঠোফোন, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যকে শুল্কের বাইরে রাখে। তবে নতুন করে এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে।