খুলনায় আইনজীবীর বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজার
Published: 9th, August 2025 GMT
বাগেরহাট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী প্যানেলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা সিটি করপোরেশনের পলাতক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের অন্যতম সহযোগী অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করেন খুলনা সিটি ল কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ আকিব মুনসুর। অভিযুক্ত জাহিদ তার আপন চাচা বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদ শাসন আমলে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে টিকে থাকার সংগ্রাম করেছি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতন ঘটলেও তাদের সহযোগীরা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনো তাদের দাপটে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। কেসিসির পলাতক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের অন্যতম দোসর অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেন ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ আমলে বাগেরহাট বারের সাধারণ সম্পাদক ও এপিপি ছিলেন।”
আরো পড়ুন:
খুবির আবাসন সংকট নিরসনে বাধা গল্লামারী মৎস্য খামার
খুবিতে শহীদ মীর মুগ্ধ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু
তিনি বলেন, “সে সময় ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারতেন না। ফ্যাসিবাদী সরকার পালিয়ে গেলেও এই জাহিদ হোসেন এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তিনি আমার ও আমার চাচাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ও নিজস্ব ক্রয়কৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন। আমরা ওই সম্পত্তি দখলমুক্ত করার জন্য আজ দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্তু তার অবৈধ অর্থ ও ক্ষমতার নিকট অসহায় হয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “আমার দাদা সৈয়দ মুনসুর আলী ১৯৮৭ সালের ১৫ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার পুত্র ও এক কন্যাকে রেখে যান। আমার দাদার দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ জাহিদ হোসেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে জাহিদ হোসেন প্রভাব খাটিয়ে দাদার সব জমি-জমা নিজের দখলে নেন। রামপাল উপজেলার সরাপপুর মৌজার এসব জমির লিজ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং ফসলাদী সবকিছুই তিনি নিজে আত্মসাত করেন। শরিকদের কাউকেই তিনি প্রাপ্য অংশ দেননি।”
ভুক্তভোগী ভাতিজা বলেন, “এর প্রতিবাদ করলে পৈত্রিক অংশের সঙ্গে শরিকদের ক্রয়কৃত সম্পত্তিও তিনি দখল করে নেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। দলের মনোনয়নে তিনি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হন। সে সময় তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওয়ারিশ ও নিজস্ব সম্পত্তির মোট ৩০ বিঘা সম্পত্তি মাছের ঘের, মুরগীর খামার ও গরুর ফার্ম প্রজেক্ট দেখিয়ে ২ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি আমার দাদার বেশকিছু সম্পত্তি নিজ নামে রেকর্ড করিয়ে নেন।”
ভুক্তভোগী ভাতিজা আরো বলেন, “তিনি জোরপূর্বক আমাদের বসতবাড়ি, পুকুর, বাগান, ভিটা সংলগ্ন চাষাবাদের জমিসহ সব সম্পত্তি দখল করে নিজস্ব মাছের ঘের, মাছের খামার, মুরগীর খামার ও গরুর খামার তৈরি করেছেন। এ সম্পত্তির সব আয় ও ফসলাদী তিনি নিজে ভোগ করেন। এমনকি বসতবাড়ি সংলগ্ন সর্ব সাধারণের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এবং পানি সরবরাহের খালও তিনি অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর আমার দাদী সুলতানা বেগমের মৃত্যুর পর দাদীর নিজস্ব ১৫ বিঘা সম্পত্তিও তিনি জোরপূর্বক দখল করে নেন। এছাড়া সুলতানা বেগম ও খালা হাসিনা খন্দকারের ১৯ বিঘা সম্পত্তি বিক্রি করে ৩৮ লাখ টাকা তিনি আত্মসাত করেন। আমরা ওয়ারেশগণ আমাদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানালে তিনি আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে আমরা বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।”
তিনি বলেন, “আমার চাচা অধ্যাপক ড.
এ সময় তিনি সরকারের ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ সম্পত্তি উদ্ধার পেতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, “সব সম্পত্তি নিয়ম অনুযায়ী ভাগবাটোয়ারা করা হয়েছে, সবাই নিজ নিজ সম্পত্তি ভোগ-দখল করছে। আমি অন্যায়ভাবে বা জোরপূর্বক কারো সম্পত্তি দখল করিনি।”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব অভ য গ ব গ রহ ট আম র দ দ সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির করা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান আজ শনিবার এই আদেশ দেন।
বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা থেকে হিরো আলমকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাঁকে সিএমএম আদালতের ৯তলার এজলাসে নেওয়া হয়।
হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ২০০ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে হিরো আলমের মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার বাদী রিয়া মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়েছে, তারও জেলে থাকা উচিত।’
এর আগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তাঁর সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসার কথা বলে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। ওই সময়ে হিরো আলমসহ ১০ থেকে ১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তাঁরা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। এতে বাদীর শরীরে জখম হয়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে