বাগেরহাট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী প্যানেলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা সিটি করপোরেশনের পলাতক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের অন্যতম সহযোগী অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করেন খুলনা সিটি ল কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ আকিব মুনসুর। অভিযুক্ত জাহিদ তার আপন চাচা বলে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদ শাসন আমলে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে টিকে থাকার সংগ্রাম করেছি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতন ঘটলেও তাদের সহযোগীরা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনো তাদের দাপটে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। কেসিসির পলাতক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের অন্যতম দোসর অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেন ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ আমলে বাগেরহাট বারের সাধারণ সম্পাদক ও  এপিপি ছিলেন।”

আরো পড়ুন:

খুবির আবাসন সংকট নিরসনে বাধা গল্লামারী মৎস্য খামার

খুবিতে শহীদ মীর মুগ্ধ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু

তিনি বলেন, “সে সময় ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারতেন না। ফ্যাসিবাদী সরকার পালিয়ে গেলেও এই জাহিদ হোসেন এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তিনি আমার ও আমার চাচাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ও নিজস্ব ক্রয়কৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন। আমরা ওই সম্পত্তি দখলমুক্ত করার জন্য আজ দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্তু তার অবৈধ অর্থ ও ক্ষমতার নিকট অসহায় হয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “আমার দাদা সৈয়দ মুনসুর আলী ১৯৮৭ সালের ১৫ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার পুত্র ও এক কন্যাকে রেখে যান। আমার দাদার দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ জাহিদ হোসেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে জাহিদ হোসেন প্রভাব খাটিয়ে দাদার সব জমি-জমা নিজের দখলে নেন। রামপাল উপজেলার সরাপপুর মৌজার এসব জমির লিজ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং ফসলাদী সবকিছুই তিনি নিজে আত্মসাত করেন। শরিকদের কাউকেই তিনি প্রাপ্য অংশ দেননি।”

ভুক্তভোগী ভাতিজা বলেন, “এর প্রতিবাদ করলে পৈত্রিক অংশের সঙ্গে শরিকদের ক্রয়কৃত সম্পত্তিও তিনি দখল করে নেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। দলের মনোনয়নে তিনি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হন। সে সময় তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওয়ারিশ ও নিজস্ব সম্পত্তির মোট ৩০ বিঘা সম্পত্তি মাছের ঘের, মুরগীর খামার ও গরুর ফার্ম প্রজেক্ট দেখিয়ে ২ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি আমার দাদার বেশকিছু সম্পত্তি নিজ নামে রেকর্ড করিয়ে নেন।”

ভুক্তভোগী ভাতিজা আরো বলেন, “তিনি জোরপূর্বক আমাদের বসতবাড়ি, পুকুর, বাগান, ভিটা সংলগ্ন চাষাবাদের জমিসহ সব সম্পত্তি দখল করে নিজস্ব মাছের ঘের, মাছের খামার, মুরগীর খামার ও গরুর খামার তৈরি করেছেন। এ সম্পত্তির সব আয় ও ফসলাদী তিনি নিজে ভোগ করেন। এমনকি বসতবাড়ি সংলগ্ন সর্ব সাধারণের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এবং পানি সরবরাহের খালও তিনি অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর আমার দাদী সুলতানা বেগমের মৃত্যুর পর দাদীর নিজস্ব ১৫ বিঘা সম্পত্তিও তিনি জোরপূর্বক দখল করে নেন। এছাড়া সুলতানা বেগম ও খালা হাসিনা খন্দকারের ১৯ বিঘা সম্পত্তি বিক্রি করে ৩৮ লাখ টাকা তিনি আত্মসাত করেন। আমরা ওয়ারেশগণ আমাদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানালে তিনি আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে আমরা বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।”

তিনি বলেন, “আমার চাচা অধ্যাপক ড.

সৈয়দ জাবিদ হোসাইন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ছিলেন। আমার ফুফু সৈয়দা জেবুননিছা সুলতানা অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম-সচিব। অপর চাচা সৈয়দ জাকির হোসেন আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন। তারা সবাই এই ফ্যাসীবাদের দোসর জাহিদ হোসেনের নিকট আজ অসহায় হয়ে পড়েছেন।”

এ সময় তিনি সরকারের ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ সম্পত্তি উদ্ধার পেতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, “সব সম্পত্তি নিয়ম অনুযায়ী ভাগবাটোয়ারা করা হয়েছে, সবাই নিজ নিজ সম্পত্তি ভোগ-দখল করছে। আমি অন্যায়ভাবে বা জোরপূর্বক কারো সম্পত্তি দখল করিনি।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব অভ য গ ব গ রহ ট আম র দ দ সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

২৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচ তলায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রদানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এবং ৩ সদস্যের আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। 

জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া।

অন্যরা হলেন- এডভোকেট বোরহানউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, এডভোকেট সুমন মিয়া ও এডভোকেট মতিউর রহমান মতিন।

৩ শতদের আপিল বোর্ডের প্রধান হলেন এডভোকেট নবী হোসেন। বাকি দুইজন হলেন এডভোকেট আজিজুল হক হান্টু ও অ্যাডভোকেট মনজুরুল হক খান।

বার্ষিক সাধারণ সভার শুরুতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। এরপর সমিতির সদস্যগণ তাদের বক্তব্য পেশ করেন। সকলের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় জেলা আইনজীবী সমিতির এবারের বার্ষিক সাধারণ সভা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুমের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে তহবিল গঠনের দাবি
  • অধ্যাপক কলিমুল্লাহ আদালতে বললেন, ‘এক কাপড়ে এসেছি’
  • দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের ওপর রায় ১০ আগস্ট
  • ২৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন
  • আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারার সেই মামলা বাতিল
  • কিস ক্যাম বিতর্কের জেরে বিচ্ছেদ হলেও জরিমানা গুনতে হবে না বাইরনকে, কেন জানেন?
  • মানি লন্ডারিং মামলায় খালাস পেলেন জি কে শামীম
  • না, লেনদেনে ট্রাম্প ভরসা করার মতো লোক নন