খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ যত অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে গ্রেপ্তার আলমগীরের বিরুদ্ধে
Published: 11th, August 2025 GMT
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন জেলার তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’ আলমগীর হোসেন (৪০)। আজ সোমবার ভোরে চন্দ্রগঞ্জ থানার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের ইমাম উদ্দিন মিজি বাড়ির কাছ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আলমগীর হোসেন উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরী এলাকার আবুল কালামের ছেলে। সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের আলোচিত সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জিহাদীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আলমগীর হোসেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দারবাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানায়, নোমান ও রাকিব খুনের মামলায় অন্যতম আসামি আলমগীর হোসেন। ওই মামলায় তিনি ২০২৩ সালের ৯ মে গ্রেপ্তার হন। পরে উচ্চ আদালত থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর আর আদালতে হাজিরা দেননি।
আলমগীর ২০১৩ সালের দিকে সন্ত্রাসী মাসুম বিল্লাহ লাদেন বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর পর তিনি ২০১৫ সালের দিকে আবুল কাশেম জিহাদীর বাহিনীতে যোগ দেন। কাশেম জিহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। নোমান ও রাকিব হত্যার ২৩ দিন পর জিহাদীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আলমগীরের বিরুদ্ধে আজাদ হোসেন ওরফে বাবলু (২৫) নামের একজনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। গত ২ জুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় আজাদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মাদক বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার বশিকপুর, চাটখিল ও আশপাশের এলাকায় অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বহুবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবিচাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোরশেদ আলম ভূঁইয়া আলমগীরের লোকজনের হাতে অপহরণের শিকার হন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ৩১ জুলাই তিনি ও তাঁর সহযোগী তারেক রহমানকে আলমগীর হোসেনের লোকজন অপহরণ করেন। রাত ১০টার দিকে শামসুল হুদা উচ্চবিদ্যালয়ের কাছ থেকে তাঁদের তুলে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাঁদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়, যা পরবর্তী সময় ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহার করা হয়।
মোরশেদ আলম আরও জানান, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার পর পরদিন বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অপহরণের সময় তাঁদের মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও তাঁরা তাঁর দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। নয়তো জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করবেন, এই আশঙ্কা তাঁদের।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলমগ র হ স ন সদর উপজ ল র লক ষ ম প র আলমগ র র
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারকের ছেলে হত্যা মামলার আসামি লিমন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আবদুর রহমানের বাসায় ঢুকে তাঁর ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার লিমন মিয়ার (৩৪) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক মামুনুর রশিদ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত লিমনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে বিচারকের ছেলের মৃত্যু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে: ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক১৪ নভেম্বর ২০২৫গাজিউর রহমান বলেন, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিমন মিয়াকে হাসপাতাল ত্যাগের অনুমতি দেয়। এরপর তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে বেলা ২টার দিকে তাঁকে আদালতে তোলা হয়। রিমান্ড মঞ্জুরের পর আদালত থেকে তাঁকে রাজপাড়া থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে ওই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ বলছে, গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী শহরের তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় ওই বিচারকের বাসায় যান গাইবান্ধার ফুলছড়ির বাসিন্দা লিমন মিয়া। এরপর তিনি বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৫) ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লিমনের ছুরিকাঘাতে ওই বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিও (৪৪) আহত হন। এসব ঘটনার সময় ধ্বস্তাধ্বস্তির এক পর্যায়ে লিমনও আহত হন। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার লিমন মিয়াকে একমাত্র আসামি করে রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমান। আসামি এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে বাসায় ঢুকে বিচারকের স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্ত্রী আহত১৩ নভেম্বর ২০২৫