সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢাকা থেকে বেড়াতে গিয়েছিলেন কয়েকজন পর্যটক। কিন্তু আগে থেকে বুকিং করে গেলেও ‘হাওরের সুলতান-৪’ নামে একটি হাউসবোট তাদের প্রতিশ্রুত সেবা দেয়নি। ঢাকায় ফিরে পর্যটকদের একজন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন। পরে হাউসবোট কর্তৃপক্ষ এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এবং ওই পর্যটকের সঙ্গে আলোচনায় বসে। বৈঠকে তিনটি শর্ত হাউসবোটের মালিক মেনে নেওয়ায় অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন ওই পর্যটক।

তিনটি শর্ত হচ্ছে দেশের যেকোনো এলাকায় ১০০ জন এতিম শিশুকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়াতে হবে; যেকোনো মাধ্যমে হাউসবোট বুকিং দিলে দ্রুততার সঙ্গে ভোক্তাকে সব তথ্য জানাতে হবে এবং পর্যটকদের কাছ থেকে নেওয়া সব ধরনের লেনদেনের ভাউচার দিতে হবে।

সেবায় অসন্তুষ্ট হয়ে অভিযোগ করা পর্যটকের নাম মাহবুব আলম (সোহাগ)। তিনি জানান, গত ২২ জুলাই ঢাকা থেকে তিনটি পরিবার টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে আসে। এর ১৫ দিন আগে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ‘হাওরের সুলতান-৪’ হাউসবোট বুকিং করেছিলেন মাহবুব। বুকিংয়ের সময় বোট কর্তৃপক্ষ যেসব সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা তারা দেয়নি বলে অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন।

মাহবুব দাবি করেন, তাঁকে জানানো হয়েছিল, সুনামগঞ্জে পৌর শহরের সাহেববাড়ি ঘাট থেকে বোট ছাড়বে। পরে বোট ছাড়ে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর এলাকা থেকে, যা সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ তথ্য তাঁকে জানানো হয় যাত্রার আগের দিন রাতে। এ ছাড়া, বুকিংয়ের পর বারবার জানতে চাওয়ার পরও বরাদ্দ করা রুমের তথ্য দেওয়া হয়নি। বোটের এক রুমে তিনজন থাকার জন্য টাকা পরিশোধ করলেও দেওয়া হয় এক বেডের রুম, যা ছিল বিব্রতকর।

আরও পড়ুনপাহাড়, নদী ও লেকের অপার সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর০৮ জুন ২০২৫

ঢাকায় ফিরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ওই বোট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন মাহবুব আলম। এরপর হাউসবোট কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে গতকাল রোববার আলোচনায় বসে। আলোচনায় মাহবুব তিনটি শর্ত দেন। ‘হাওরের সুলতান-৪’ কর্তৃপক্ষ সব শর্ত মেনে নেয় এবং আগামী এক মাসের মধ্যে সুনামগঞ্জের একটি এতিমখানায় ১০০ জন এতিমকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। শর্ত পূরণের আশ্বাস পাওয়ার পর অভিযোগটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী।

‘হাওরের সুলতান-৪’–এর পরিচালক আসিফ আহনাফ বলেন, ‘যে এজেন্সির মাধ্যমে হাউসবোট বুকিং করা হয়েছিল, তারা পর্যটকদের সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর না ঘটে। ভবিষ্যতে যেন কোনো পর্যটক এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি না হন, সেই চেষ্টা করব। ভোক্তার দেওয়া তিনটি শর্ত আমরা আন্তরিকভাবে মেনে নিয়েছি এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তা দ্রুত কার্যকর করব।’

আরও পড়ুননিবন্ধন না থাকায় টাঙ্গুয়ার হাওরের ১২ হাউসবোটকে জরিমানা২৭ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ঙ গ য় র হ ওর স ন মগঞ জ হ উসব ট পর যটক ম হব ব

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের দরিয়ানগরের শাহেনশাহ গুহা কেন পর্যটকদের হতাশ করছে

ছবি-প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু ১৩ দিন ধরে পানির নিচে, হতাশ পর্যটকেরা
  • কক্সবাজারের দরিয়ানগরের শাহেনশাহ গুহা কেন পর্যটকদের হতাশ করছে