এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা
Published: 11th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) মডেলের আদলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতের দাবিতে টানা ৩০ ঘণ্টা ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করছেন চারটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে চার কলেজের ১২ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। আজ সোমবার সন্ধ্যায়ও তাঁদের অনশনে থাকতে দেখা যায়। তবে তাঁদের সঙ্গে আরও অনেক শিক্ষার্থী সেখানে রয়েছেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আর প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষার্থীদের দাবি, এই দ্বৈত কাঠামোর ফলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সমস্যগুলো সমাধান হচ্ছে না। তাঁদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাঁরা তাঁদের সমস্যার কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বললে তারা বলে, এসব সমাধানের দায়িত্ব তাদের নয়। তোমরা এটা কারিগরিকে বলো। কারিগরিকে বললে সে বলে, এগুলা সমাধানের সক্ষমতা নাই কারিগরির।’
অনশনে অংশ নেওয়া বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান বলেন, তাঁদের আন্দোলনটা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংস্কারের আন্দোলন। প্রায় তিন মাস ধরে তাঁরা আন্দোলন করছেন। সর্বশেষ গত ২৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এরপর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৫০ শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর তাঁরা তাঁদের দাবি না মানলে ১০ আগস্ট থেকে অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। দাবি না মানায় তাঁরা গতকাল থেকে অনশন শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত সরকারের কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
লুৎফর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিক্ষকসংকট। দক্ষ প্রকৌশলী হওয়ার জন্য যে ধরনের ফ্যাসিলিটি দরকার পড়ে, তার ৫ ভাগও আমাদের এখানে নাই। আমাদের চারটা ক্যাম্পাস মিলে মাত্র দুইজন অধ্যাপক, দুইজন সহযোগী অধ্যাপক রয়েছেন। আমার বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সিভিল ডিপার্টমেন্টে মাত্র একজন স্থায়ী শিক্ষক। একজন শিক্ষক কীভাবে একটা ডিপার্টমেন্ট চালায়, যেখানে একটা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক লাগে ৮ থেকে ১০ জন। আমরা কারিগরি এবং গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, চালানোর সক্ষমতা না থাকলে আপনারা আমাদের রাখছেন কেন? আমরা এখান থেকে বের হতে চাই এবং আমরা মনে করি, আমাদের এক্সিস্টিং সমস্যাগুলোর একমাত্র সমাধান বিআইটির আদলে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো গঠন করা। এর মাধ্যমে আমাদের এই দ্বৈত কাঠামো বিলুপ হবে এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে একটি স্বাধীন এবং স্থায়িত্ব শাসন নিশ্চিত হবে।’
আমরণ অনশনে অংশ নেওয়া ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তিন মাস ধরে আন্দোলন করছি। স্মারকলিপি দেওয়া, অবস্থান কর্মসূচি ও প্রেস ব্রিফিং—সবই করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি। ফলে আমরা এখন আমরণ অনশনে বসেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমরণ অনশন এক ড ম ক আম দ র কল জ র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে