জাতীয় ক্রিকেট লিগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে একসময় বিস্তর অভিযোগ শোনা যেত। খেলোয়াড়দের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, যাতায়াত, মাঠ—অভিযোগ কী নিয়ে ছিল না! দেশের প্রধানতম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আসরটা যে ক্রিকেটাররা তখন ‘পিকনিক মুডে’ খেলতেন, তা তো এমনি এমনি নয়।

এখন দিন বদলেছে, বেড়েছে জাতীয় লিগের সুযোগ-সুবিধা। একেকটি জাতীয় লিগ আয়োজনে বিসিবি খরচ করছে ১৪-১৫ কোটি টাকা। খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতা, ম্যাচ ফি, বেতন বেড়েছে। উন্নত হয়েছে যাতায়াত ও থাকার ব্যবস্থা। সে তুলনায় বেশির ভাগ বিভাগই পারেনি নিজেদের সুসংগঠিত করতে। আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা হলে আস্তে আস্তে অনেক সমস্যারই সমাধান হবে বলে আশা। কিন্তু তাই বলে কি এত দিনে খেলোয়াড় নির্বাচন প্রক্রিয়াটাও ঠিক হবে না!

দল নির্বাচনের দায়িত্ব পুরোপুরি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার হাতে থাকার সময় অভিযোগ আসত স্বজনপ্রীতির। মামা-চাচার জোরে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে হয়ে গিয়েছিলেন ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার’। বিতর্ক এড়াতে পরে দল নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়। অনেক বছর ধরেই নিয়মটা এ রকম—বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে ৩০ জনের প্রাথমিক খেলোয়াড় তালিকা দেওয়া হবে। সেখান থেকে জাতীয় নির্বাচক কমিটি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোচ-অধিনায়কদের মতামত নিয়ে ১৫ জনের চূড়ান্ত দল গঠন করবে। লিগের মাঝপথে কোনো খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে হলে সেটাও জাতীয় নির্বাচক কমিটিকে জানিয়ে করতে হবে।

২৭তম জাতীয় লিগ শুরু হবে অক্টোবরে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ