দোষ ঢাকতে ছাত্রলীগ কর্মী দিয়ে মানববন্ধনের ঘোষণা জবি আইইআর পরিচালকের
Published: 12th, August 2025 GMT
র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহান নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের সহযোগিতায় মানববন্ধন আয়োজন করেছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাতে ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে একটি মানববন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে র্যাগিং সংক্রান্ত সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করা হয়।
মানববন্ধনটি মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে (ভাস্কর্য চত্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পোস্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের মানববন্ধন
কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
জানা যায়, মানববন্ধনের ডাক যিনি দিয়েছেন, তিনি আইইআরের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং তার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ইনস্টিটিউটের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং র্যাগিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই আইইআরে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অমানবিক নির্যাতন চালান। এতে এক শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারান এবং প্রায় সব নবীন শিক্ষার্থী নির্যাতনে শিকার হন। অভিযুক্তদের সংখ্যা প্রায় ১৭ জন।
তবে, অভিযোগ রয়েছে—ঘটনাটি যথাযথ তদন্ত ও বিচার না করে পরিচালক মনিরা জাহান ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বিব্রত করেছেন এবং উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও বিদ্রুপ করতে উৎসাহিত করেছেন।
আইইআরয়ের র্যাগিং কাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়পরায়ণ বিচার দাবিতে সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।